ফুলের রাজধানী নামে পরিচিত সাভারের বিরুলিয়া । দেশের গোলাপ ফুলের চাহিদার সিংহভাগ মিটায় সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের গোলাপ গ্রাম,সাদুল্লাপুর,বাগ্নীবাড়ী,মোস্তাপাড়া,আকরাইন,কালিয়াকৈর থেকে।শুধু গোলাপই নয় এই এলাকাজুড়ে অনেক ধরনের ফুল চাষ হয়।
এই ফুলের রাজধানীতে বসন্ত, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুল চাষীরা। আর্থিকভাবে লাভবানের আশায় নারী পুরুষেরা মিলে ফুল বাগানে দিন রাত পরিশ্রম করে চলছেন। নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখানকার ফুল বিদেশেও ছড়িয়ে পড়বে।
ফেব্রুয়ারি থেকে বিরুলিয়ার চাষিরা বসন্ত বরণে, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জন্য বাজারে ফুল সরবরাহ করে আসছেন।
ইতোমধ্যে প্রতিদিন সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ফুল কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন এই ফুলের রাজ্যে।
ফুলচাষিরা বলেন, দেশে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে যে ফুল বেচা-কেনা হয় তার অনেকটাই পূরণ করে চলছে বিরুলিয়ার উৎপাদিত ফুল।
গেলো ১৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত বরণ, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা কমপক্ষে কয়েক কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট নিয়েছেন। এর মধ্যে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ফুল হাটে কোটি টাকার বেচা-কেনা হয়েছে হাট বিক্রেতারা।
কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হওয়ায় অসংখ্য দর্শনার্থী বিরুলিয়ার ফুল বাগান দেখতে আসেন। যে কারণে গত বছর ফুলে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হয়েছিলে বলে দাবি করেন ফুল চাষিরা। রোগের আক্রমণের কারণ হিসেবে অতিরিক্ত দর্শনার্থীর চাপ ও তাদের অবাধ বিচরণকেই দায়ী করেছেন তারা।
স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বেশি ফুল বিক্রি হবে। বাজারে জারবেরা, গোলাপ, রজনীগন্ধা ফুলের চাহিদা বেশি। কৃষকরাও ভালো দাম পাবেন। আমরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ডার পাচ্ছি। তাদের চাহিদা মতো ফুল সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত আছি।
বিরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সূজন জানান, ফুলের রাজ্যে হিসেবে পরিচিত সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন, কৃষকরা গোলাপ চাষ করে তাদের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করে তারা স্বাবলম্বী হয়েছেন। সাভার উপজেলার মধ্যে এ বিরুলিয়া ইউনিয়ন গোলাপের রাজ্যে হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে এ ইউনিয়ন আমাদের আজ সকলের জন্যেও গর্ব। তিনি আরো বলেন ফুলচাষীরা তার পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাবে তারা যেন এ ফুল চাষকে যুগোপযোগী ভাবে চাষ করে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন বিরুলিয়ার সাথে ঢাকার সংযোগ সেতুটি হওয়ায় ঢাকার বিভিন্ন মানুষ ঘুরতে আসে এ এলাকায় গোলাপের রাজ্যে পর্যটন আসায় আরো মূখরিত বিরুলিয়ার ইউনিয়নের চাষীরা।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ জানান, বলেন, সাভারের বিরুলিয়ায় ইউনিয়নের প্রায় ২০০ হতে ৩০০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস ও জারবেরা প্রাতির ফুল। তবে শুধুমাত্র আড়াই শ হেক্টর জমিতেই চাষ হয় গোলাপ। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ ফুল চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। একর প্রতি ফুল উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি পাওয়ায় দিন দিন কৃষকরা ফুল চাষে ঝুকছেন। সামনে দিবগুলো হওয়ায় জন্য এই গ্রামে এখন উৎসব বইছে। গত বছরের তুলনায় এবছর ফুলের ফলন ভালো হয়েছে। সতেজ ও টাটকা অবস্থায় ঢাকার বাজারে বিক্রি করায় দামও বেশি পাচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
ভিডিও রয়েছে...