নরসিংদীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন সাংবাদিককে বিশেষ আদালতে জেল,জোরালো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
ডেক্স সংবাদঃ
নরসিংদীতে পুলিশের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন সাংবাদিককে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গত শুক্রবার সকালে ওই তিনজনের নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিশেষ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে নরসিংদী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দৈনিক গ্রামীন দর্পন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক রমজান আলী প্রামাণিক (৪৫), একই পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার শান্ত বণিক (৩৫) ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল নরসিংদী প্রতিদিনের প্রকাশক সম্পাদক ও মাধবদী থানা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাওন খন্দকার শাহিন (৩৫)।
জানা যায়, লকডাউন চলাকালে সম্প্রতি নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় পেটের দায়ে সিএনজি নিয়ে বের হয়ে এক চালকের মৃত্যু হয়। পুলিশের পিটুনিতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে নিহতের পরিবার ও তার সহকর্মীরা দাবি করেন। এঘটনার প্রেক্ষিতে দৈনিক গ্রামীণ দর্পন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজপোর্টাল নরসিংদী প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ঘটনার সাথে অসামঞ্জস্যতার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার রাতে ঘোড়াশাল ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ জহিরুল আলম বাদী হয়ে পলাশ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে উল্লেখিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় সাধারণ জনগন ও সাংবাদিকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মিলন মিয়া নামে তার ফেসবুক মন্তব্যে লিখছেন,
যে কোন সাংবাদিকের নিউজ সঠিক না হলে প্রতিবাদ দেয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। প্রতিবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে পত্রিকা কর্তৃপক্ষের নৈতিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ছাপানো প্রতিবাদ সন্তোষজনক না হলে প্রেস কাউন্সিলে মামলা করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনা শুধু দুঃখজনকই নয়, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকের স্বাধীনতারও পরিপন্থী। দৈনিক গ্রামীণ দর্পন পত্রিকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক শান্ত বনিক তথ্য প্রযুক্তি আইনে গতকাল রাত ১টায় গ্রেফতার । গ্রেফতারের কারন পুলিশের বিরুদ্ধে রিপোর্ট । আমি বলি হয়তো তার রিপোর্ট সঠিক অথবা ভূল। আমি রিপোর্ট নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমি শান্ত বনিক কে ভাল করে চিনি ও জানি । দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি Shanto Banik একজন আদর্শবান, যোগ্য ও দক্ষ সাংবাদিক । কোন গণতান্ত্রিক সরকারের আমলেই নরসিংদীতে কোন সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেনি। সংবাদ প্রকাশের জন্য তিনজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের ঘটনা নরসিংদীর সকল সংবাদকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজ কে বেদনাহত করেছে। আমি গ্রেপ্তারকৃত সাংবাদিক শান্ত বনিক সহ সকলের আশু মুক্তি দাবি করছি। পুলিশ প্রশাসন ও নরসিংদী জেলার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বসে আশা করি এই সমস্যার সমাধান করবেন ।
এদিকে অনেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শাহরিয়ার শাকিল লিখেছেন,অামি বিস্বাস করি শান্তবনিক সৎ ও অার্ত মানবতার সেবায় নিবেদিত সাংবাদিক। তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
শাহদাৎ হোসেন রাজু লিখছেন,
কি কারণে বিশেষ আদালত বসিয়ে তাদেরকে তড়িগড়ি জেল হাজতে পাঠানো তা নরসিংদীর সাংবাদিক সমাজ জানতে চায়।
জরুরি আইনে সাংবাদিকদের জেলে পাঠানো হলে কলম সৈনিকের জন্য কালো থাবা সংবাদ ভুল হোক আর নাই হোক প্রকাশের প্রতিবাদ না দিয়ে ডিজিটাল আইনে সরাসরি মামলা ও জরুরি আইনে মামলা সাংবাদিক গ্রেফতার দেখানো কি অবৈধ নয়?
স্থানীয় সকলে এর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।