সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতিসহ আসামীদের গ্রেফতাররের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
শেখ এ কে আজাদ,নিজস্ব প্রতিবেদক,সাভার থেকে:
সাভারে চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়ে মারধর ও লুটপাটকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগী মাসুমসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং স্থায়ী বহিস্কারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী ব্যবাসায়ীসহ এলাকাবাসীরা।
রবিবার ১৪ মে দুপুর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা বাজার বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেন ভুক্তভোগীরা ।
আয়োজিত মানববন্ধনে ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী চুন্নু বলেন, গত রমজান মাস থেকেই সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগী মাসুম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা সরসরি তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিলো। তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় গত ৬ মে ২০২৩ ইং সন্ধ্যায় ১০-১২টি মোটরসাইকেল যোগে অন্তত ৩০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার মালিকানাধীন আনন্দপুর টিম্বার এন্ড স’মিল, বিসমিল্লাহ ওয়াশ কারখানা, গেন্ডা ফল মার্কেট হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসী মাসুম দেওয়ান ও ধর্ষক সোহেল রানা, আলমগীর, মিলন, শামিম, অনিক, হাকিম, ইসমাইল, আরিফ, নাদিম, সাহিদ সরকার, সবুজসহ অন্যান্যরা তাকে কারখানার ভিতরে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে এবং নগদ প্রায় ৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এঘটনায় তাকে বাঁচাতে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা আমার স্ত্রী, সন্তান, ভাতিজা ও ছোট ভাইকেও দা, চাপাতি, লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এঘটনায় আমি সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করলেও এখনো পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, তিনি ১৯৯৬ সন থেকে ছাত্রলীগ এর সাথে জরিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাথে জরিত ছিলেন এবং
বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে
দলের সাথে সম্পৃক্ত আছেন।
ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কিছু সন্ত্রাসীরাতার নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদা না দেয়ায় পরিবারের সদস্যসহ তাকে মারধর করে নগদ ৩ লক্ষাধীক টাকা লুট করে নিয়ে এখনও তারা ফেসবুকে সক্রিয় থেকে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করলেও দলীয় পরিচয়ে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজরা সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীদের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনার পাশাপাশি সন্ত্রাসী মাসুম দেওয়ানকে সাময়িক বহিস্কার করায় ধন্যবাদ প্রদান এবং স্থায়ী বহিস্কারের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জোর দাবি জানাচ্ছেন ।
আহত নান্নু মিয়া বলেন, তারা সকলেই আওয়ামী পরিবারের সন্তান। নিজেও ছাত্রলীগ করেছি। ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে কিছু সন্ত্রাসী চাঁদার জন্য আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালিয়েছে। চাঁদা না দেয়ায় তার বড় ভাই, ভাবী, ভাতিজাদেরকে বেধরক মারধর করেছে। তিনি দ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এজন্য পরিবারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা আরও বলেন, সন্ত্রাসী মাসুম দেওয়ান এমন কোন অপকর্ম নেই যা সে করেনা। মানুষের দোকান দখল করে ছাত্রলীগের কার্যালয় বানানো থেকে শুরু করে বাড়ি করলে চাঁদা আদায়, ফুটপাত ও রাস্তাঘাটে চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহন থেকে কুলি বিটের নামে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অরাধের সাথে জড়িত। তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট সাধারন মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়না। এই মুহুর্তে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া না হলে সে ভবিষ্যতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন মানববন্ধনে উপস্থিত ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা।
মানববন্ধন শেষে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা সন্ত্রাসী মাসুম দেওয়ান ও তাদের সহযোগীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিস্কারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদিব কুমার গোপ বলেন, মামলা দায়ের পর থেকেই আমরা চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী মাসুম দেওয়ান ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। খুব শিঘ্রই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।