Warning: Creating default object from empty value in /home/sattersangbad24/public_html/wp-content/themes/ProfessionalNews/lib/ReduxCore/inc/class.redux_filesystem.php on line 29

Warning: Cannot modify header information - headers already sent by (output started at /home/sattersangbad24/public_html/wp-content/themes/ProfessionalNews/lib/ReduxCore/inc/class.redux_filesystem.php:29) in /home/sattersangbad24/public_html/wp-includes/feed-rss2.php on line 8
উপসম্পাদকীয় – Satter Sangbad https://www.sattersangbad24.com Bangla News Paper Wed, 09 Dec 2020 15:35:55 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.7.4 আজ ০৯ ডিসেম্বর “আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস” https://www.sattersangbad24.com/archives/6321 https://www.sattersangbad24.com/archives/6321#respond Wed, 09 Dec 2020 15:35:55 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=6321 আজ ০৯ ডিসেম্বর “আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস”

দুর্নীতি যেহেতু সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধান অন্তরায়; তাই এই দিবসটির মাধ্যমে আমজনতা সচেতনতা, দায়িত্ববোধ সর্বোপরি দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার চেতনায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।
তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ।
বিগত বছরগুলোতে ৯ ই ডিসেম্বর “আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস” দুর্নীতি দমন কমিশন কেন্দ্রীয়ভাবে এবং মাঠ পর্যায়ে মহানগর জেলা উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) সম্পৃক্ত করে, ভাবগাম্ভীর্যের সাথে নানা আয়োজনে, মহানগর, জেলা, উপজেলায় প্রশাসনসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।
এ বছর সারা পৃথিবীর মতো আমাদের দেশও করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব থাকার কারণে স্বাস্থ্যবিধির বিষয় গুরুত্ব দিয়ে মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠ পর্যায় এই দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করা সম্ভব হয়নি। দুর্নীতি দমন কমিশন মানুষের মাঝে দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব গড়ে তুলে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দুর্নীতি দমনে প্রতিকার ও প্রতিরোধে নিরলসভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন।
সারা দেশের মানুষ যদি দুর্নীতি বাজদের ঘৃণা করতে শেখে এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহসী হন এবং তরুণ প্রজন্ম অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনেরা শিক্ষা জীবন থেকেই দেশপ্রেম, দুর্নীতি বিরোধী মনোভাবে বেড়ে উঠে তাহলে বাঙালী জাতি যেমন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। তেমনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফলপ্রসু দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব।
উল্লেখ্য যে, জাতীসংঘ ২০০৩ সালের ০৯ ডিসেম্বরকে “আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস” হিসেবে ঘোষনা করে। ২০০৭ সাল থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন এই দিবসটি পালন করা শুরু করে। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে দুর্নীতি দমন কশিনের অনুরোধে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ ২০১৭ সালে “আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস” সরকারীভাবে ঘোষনা করেন।
এই দিবসটিতে যদি আমরা অন্তর থেকে দেশপ্রেমের শপথ গ্রহণ করতে পারি তবে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি থেকে বিদেশে অর্থ পাচার, রাজস্ব ফাঁকি, সরকারী সম্পদ দখল ও আত্মসাৎ সহ সকল প্রকার ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির মত ঘৃণ্য কাজ বন্ধ করতে পারি তবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ অবশ্যই সম্ভব।
দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি লাভ করবে, মানুষের মৌলিক অধিকার ও নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত হবে। পৃথিবীতে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হতে সক্ষম হবে।
তাই আসুন দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সবাই একতাবদ্ধ হই।

মোঃ সালাহ্উদ্দিন খান নঈম
(জাতীয় পদক প্রাপ্ত শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সমাজকর্মী)
সাধারণ সম্পাদক: উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, সাভার।

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/6321/feed 0
দুঃখিত বোন,নিলা খুনিদের কঠিন বিচার হোক https://www.sattersangbad24.com/archives/6007 https://www.sattersangbad24.com/archives/6007#respond Wed, 23 Sep 2020 09:31:25 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=6007 দুঃখিত বোন,নিলা খুনিদের কঠিন বিচার হোক

এ.কে.এম. আসাদুজ্জামান

আমি বলতে চাইলাম কি! আর তাঁরা বুঝলো কি!
“যেহেতু চিৎকার দেয় নাই তাহলে জোর করে নেয় নাই যদি জোর করে নিতো তাহলে চিৎকার দিতো”
এই কথাটা আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আসিফ নজরুল স্যারের একটি আরটিকেলে পড়েছিলাম। এ কথার মাধ্যমে সে বুঝাতে চেয়েছিলো যে, কেউ যদি সাহায্য চায় তাহলে আমরা তাকে সাহায্য করতে পারি আর যদি কেউ সাহায্য না চায় তাহলে আমরা তাকে সাহায্য করতে পারবোনা” বোন আমি ছেলেটাকে চিনিনা। আমিও চাই তোমার খুনির কঠিন বিচার হোক। তবে আমার কিছু প্রশ্ন আছে…..

১/ বোন তোমাকে যেহেতু ছেলেটা ১ বছর যাবত জ্বালাতন করতেছে তাহলে তোমার অভিভাবকরা কেনো আইনের শরণাপন্ন হলোনা? আজ যদি তারা আইনের শরণাপন্ন হতো তাহলে বোন হয়তো তুমি আজ আমাদের মাঝেই থাকতে। কিন্তুু এরকম ক্ষেএে আমরা লোক চক্ষুর ভয়ে আইনের শরণাপন্ন হইনা। এটা অসম্ভব রকমের একটা বোকামি।

২/ বোন ভাইয়ের সামনে থেকে কিভাবে ভয় দেখিয়ে বোনকে নিয়ে গেলো? এখানে-ও আমরা ভাই হিসাবে ব্যার্থ। আপন মানুষের কাছ থেকে যদি সাহায্য না পাই তাহলে বাহিরের মানুষের কাছ থেকেও সাহায্য আশাকরাটাও বোকামি।

৩/ বোন তুমি যেহেতু জানতে যে, ছেলেটা তোমার জন্য হুমকি সরুপ তাহলে তুমি কেনো কারো সাহায্য চাইলেনা বা কেনো চিৎকার করলেনা? বোন আমার বিশ্বাস তুমি যদি সাহায্য চাইতা তাহলে অবশ্যই কেউ তোমাকে সাহায্য করতো। এখানেও বোনটি আমার বোকামির পরিচয় দিয়েছে।
তাই এই বোকামি গুলির থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। বোনটির মৃত্যুর পূবে আমরা একটু সতর্ক হলেই আজকে হয়তো অকালে বোনটিকে আমাদের হারাতে হতোনা। আর আমরা যদি এ ঘটনা থেকে শিক্ষা না নেই তাহলে এরকম হাজারো বোন আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাবে। মারা যাওয়ার পরে বিচার চাওয়ার আগে আমাদের উচিত বেঁচে থাকা অবস্থায় বোনদের সুরক্ষার ব্যাবস্থা করা। অনেকেই হয়তো বলবেন এ পরিস্থিতিতে এরকম সম্ভব নয় তাদের উদ্দেশ্য আমি বলবো পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন। আসুন আমরা সবাই এ ঘটনা থেকে সতর্ক হই। বোনটির পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রইলো।
২০১৪ সালে সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকেও হত্যা করে ছিলো। এই যন্ত্রণা আমি খুব ভালো করে বুঝি। আমার বাবাকে হত্যার পূর্বে সন্ত্রাসীরা মোবাইলে হুমকি দিয়ে ছিলো তবুও সে সতর্ক হয়নি। তাই আজ আপনাদের কে সতর্কতার মূল্য বুঝাতে চেষ্টা করতেছি। আমার কোন কথায় কেউ যদি মনে কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে দয়া করে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন।

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/6007/feed 0
পথচারীরদের নাগরিক অধিকার ফুটপাতের রাস্তা https://www.sattersangbad24.com/archives/5913 https://www.sattersangbad24.com/archives/5913#respond Tue, 15 Sep 2020 07:05:04 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=5913 পথচারীরদের নাগরিক অধিকার ফুটপাতের রাস্তা

জনসাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তার দু’ধারে রয়েছে ফুটপাত। অথচ পথচারীর নাগরিক অধিকার ফুটপাতে হাঁটাও কেড়ে নিয়েছে অবৈধ দখলদার। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে, নগর-মহানগরে এই ফুটপাত তৈরি হয় জনগণের নির্বিগ্নে চলাচলের জন্য। অথচ সচেতনদের ছত্রছায়ায় অসচেতন কম পুঁজির কিছু মানুষ এই ফুটপাতের হাঁটার জায়গায় দোকান বসিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের নাগের ডগায় এসব পণ্যের পসরা সাজিয়ে কোনো রকম তোয়াক্কা না করেই ফুটপাত বন্ধ করে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে। আমাদের মহানগরগুলোয় ফুটপাত ও সড়ক দখল করে দোকান বসানো যেন একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে হকারদের দখলে থাকা ফুটপাতে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা।
রাজধানীর প্রায় সব এলাকার সড়কের ফুটপাতই ভ্রাম্যমাণ হকারদের হাঁকডাকে সরগরম থাকে। ইচ্ছেমতো যে যার মতো করে বিভিন্ন পণ্যের দোকানপাট বসিয়ে জনগণের চলাচলে সমস্যা তো করছেই তার সঙ্গে সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল যানজটের। আর দখলদারদের এই দখলে স্থানীয় রাজনৈতিক, প্রভাবশালীদের হাত থাকায় সহজেই কেউ কিছু বলতে পারছে না। অনেক সময় প্রশাসনের কিছু ব্যক্তির আইন প্রয়োগে অনীহা ও অব্যবস্থাপনার কারণে স্থায়ীভাবে ফুটপাত দখল হয়ে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞ মহলের ধারণা। তীব্র যানজটের শহর ঢাকায় যানজট থেকে রেহাই পেতে অফিসগামী চাকুরে, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পায়ে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করেও এই ফুটপাত বন্ধ করে রাখায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বেদখল হওয়া পথে পথচারীরা ফুটপাত সহজভাবে ব্যবহার করতে না পেরে অস্বস্তিতে পড়ছেন প্রায়ই।
গরিব কম পুঁজির মানুষগুলোর প্রতি আমাদের সহানুভূতি তখনই উবে যায় যখন দেখা যায় ফুটপাতের জন্য দৈনিক, মাসিক হারে ভাড়া দিয়ে তারা দোকান চালাচ্ছে। কোনো কোনো এলাকায় ফুটপাতের ওই জায়গার জন্য লাখ টাকা জামানতও গুনতে হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সরকারি জায়গা, রাস্তার ফুটপাত কে বাড়া দেয়? দেশে কি আইন বলতে কিছু নেই? কিন্তু আমরা তো জানি সড়ক ব্যবস্থপনায়, নগর-মহানগর পরিচালনায় আইন রয়েছে। তবে প্রয়োগ হচ্ছে না কেন? সাধারণ মানুষের এমন প্রশ্ন শোনারও কেউ নেই, আবার বললেও কাজ হচ্ছে না। কারণ এসব দখলে পেছনে রয়েছে লম্বা হাতের মানুষ। স্বার্থান্বেষী মহল। তাদের কে ঠেকাবে? ফুটপাতে প্রতিবন্ধকতা থাকায় স্থবির হচ্ছে চলাচল, যানজটে নাকাল হচ্ছে নগরবাসী আর এর প্রভাব পড়ছে অর্থনীতির ওপর। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক অবস্থা ও জাতীয় অর্থনীতি।
?বেদখল সড়ক-ফুটপাতে পথ চলতে পথচারীর যন্ত্রণাময়-নাভিশ্বাস যেন নিত্যসঙ্গী। যে যার ইচ্ছামতো ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ব্যবহার করছে, কেউ আবার অনেক এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী মাসের পর মাস ফেলে রেখে সমস্যার সৃষ্টি করছে। ইট ভাঙার মেশিন, রড ট্রাক, বাস, প্রাইভেট গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনও এই সড়ক-মহাসড়কের একটা অংশ বন্ধ করে ফেলে রাখা হয়। শহরে যানজটের একটা বড় কারণ, এই যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং আর ফুটপাত দখল করে স্থায়ী-অস্থায়ী দোকান নির্মাণ।
বিভিন্ন সময় সিটি করপোরেশন রাস্তা ও ফুটপাতের ওপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত করে থাকে। কয়েক দিন পর আবার যেইসেই অবস্থা। আমাদের বিবেকবোধ জাগ্রত না হলে মনে হচ্ছে এর থেকে সহসাই মুক্তি মিলছে না। বর্তমানে ওভারব্রিজগুলোর অবস্থা আরও সূচনীয়। এমনিতেই নির্দিষ্ট জায়গা, তার ওপর দুই পাশে বসে থাকে বিভিন্ন পণ্যের দোকান। সঙ্গে ভিক্ষুকদের শুয়ে-বসে ভিক্ষা করার দৃশ্য। যত যন্ত্রণা পথচারীদের। ফুটপাত বেদখল থাকায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, হতাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
নগর-মহানগরজুড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান আর ফুটপাতে হকারদের পণ্যের পসরা তো আছেই এর সঙ্গে নতুন করে আরেক যন্ত্রণা সম্প্রতি শুরু হয়েছে তার নাম ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল। সময় বাঁচাতে অনেকেই এখন মোটরসাইকেলে চলাচল করছেন। মোটরসাইকেলের আরেক সমস্যা হচ্ছে, জ্যাম এড়াতে ফুটপাতের ওপর দিয়ে বেপরোয়া ছুটে চলা। এতে আরও বেশি আতঙ্কিত পথচারী। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো থাকছেই।
গবেষকদের মতে, ‘প্রায় পৌনে দুই কোটি জনসংখ্যার ঢাকা মহানগরে সড়ক ব্যবহারকারী মানুষের প্রায় ৭০ শতাংশই পথচারী। সমস্যা বাড়ছে পথচারীদের চলাচলের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সড়ক অবকাঠামোর বিন্যাস না করা।’ সঠিক ও নিয়মতান্ত্রিক ফুটপাত ব্যবস্থাপনার প্রতি গুরুত্বারোপ করা এবং অবৈধ দখলদারদের খুঁটির জোড় খুঁজে বের করে আইনের প্রয়োগ দরকার। সঙ্গে সঙ্গে হকারদের জন্য আরও নতুন জায়গা করে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
জনসচেতনতা বাড়াতে সিটি করপোরেশনকে আরও নতুন পন্থা গ্রহণ করে নিয়মিত ফুটপাত থেকে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করাও সময়ের দাবি। পুলিশ প্রশাসন এ ক্ষেত্রে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে বেশি কাজে আসতে পারে। অনিয়ম-দুর্নীতি মুক্ত সড়ক ব্যবস্থাপনা ও হকারদের আলাদা জায়গায় স্থানান্তর পথচারীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। শহরগুলোতে সড়ক অবকাঠামোর আধুনিকায়ন ও গণপরিবহনের অব্যবস্থাপনা দূর করে যানজট কমানোর সঙ্গেই ফুটপাত দখলমুক্ত করার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারীর বিড়ম্বনা লাঘবে সিটি করপোরেশন বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে এবং তাদেরই সুন্দর ও আদর্শ মহানগর উপহার দিতে হবে।
ফুটপাত যেহেতু হেঁটে চলাচলের জন্যই তাহলে শুধু পথচারীরাই ব্যবহার করবে, আর এটা তাদের নাগরিক অধীকার এই মানুষিকতা গড়ে তোলাও জরুরি। জনগণের দাবি দখলমুক্ত ফুটপাত, যানজটমুক্ত শহর, পরিচ্ছন্ন নগরী।

সফিউল্লাহ আনসারী
ভালুকা, ময়মনসিংহ

 

 

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/5913/feed 0
মহামারি করোনা ভাইরাস শেখ হাসিনার যত সাফল্য https://www.sattersangbad24.com/archives/5572 https://www.sattersangbad24.com/archives/5572#respond Thu, 13 Aug 2020 15:25:15 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=5572 মহামারি করোনা ভাইরাস শেখ হাসিনার যত সাফল্য

করোনা মোকাবিলা শক্ত হাতে । পরবর্তী খাদ্য সংকট নিয়ে পদক্ষেপ । বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ । বন্যা মোকাবিলায় তৎপরতা,বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে বিপর্যস্ত বিশ্ব। যার প্রভাব এড়াতে পারেনি বাংলাদেশও। গত ছয় মাস ধরে অদৃশ্য এ শক্তির মোকাবিলার পাশাপাশি ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এখন চলছে বন্যা। এসব প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে মানুষকে বাঁচাতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কর্মঘণ্টা ভুলে শক্ত হাতে একাই সামলে নিচ্ছেন সবকিছু। বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। করোনার মধ্যেও থেমে নেই মেগা প্রকল্পগুলোর নির্মাণ। দেশের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ছে। অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠায় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু গড় আয় ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আগের অর্থবছরে যা ছিল ১ হাজার ৯০৯ ডলার। অর্থাৎ দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় এক বছরের ব্যবধানে ১৫৫ ডলার বেড়েছে। করোনা সংকটকালে বাজার পরিস্থিতিও ছিল সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণে। অর্থাৎ করোনা, আম্ফান, বন্যা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সফলভাবে সংকট মোকাবিলা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্রমতে, মার্চে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর প্রথমে স্কুল, কলেজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৮ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। টানা দুই মাসের ওপর (৬৬ দিন) ছুটিতে গৃহবন্দী হতে হয় মানুষকে। কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং দেশের অনেক শিল্পগ্রুপ। করোনা সংকটে যেসব মানুষ চক্ষুলজ্জার ভয়ে অন্যের কাছে হাত পাততে পারেনি, তাদের তালিকা করে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারীতে যখন মানুষ দিশাহারা তখনই মে মাসে হানা দেয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। প্রথম দিকে ধারণা করা হচ্ছিল, বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে। গৃহহীন হবে অনেক মানুষ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নিশ্চিত হয় উপকূলের লাখো মানুষের নিরাপত্তা। আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ঘরবাড়ি করে দেওয়াসহ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম এখনো চলমান।

করোনায় লকডাউনের কারণে শ্রমিক সংকটে কৃষক যখন ঘরে ধান তুলতে পারছিল না, তখন শ্রমিকদের বিভিন্ন জায়গায় চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নিতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তাঁর নির্দেশে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিনামূল্যে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। ফলে বন্যায় ডুবে যাওয়া কিংবা শ্রমিক সংকট থেকেও সাফল্য আসে। সে সময় ধান ও চাল সংগ্রহ করতে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে খাদ্য মজুদ করা হয় দেশে। বাড়ির পাশে খালি জায়গায় কৃষি আবাদের নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান।
করোনা চলাকালে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ১৯টি প্যাকেজে ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এতে বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যেমন প্রণোদনা পেয়েছেন, বাদ যাননি করোনাযোদ্ধা চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরাও। তাদের জন্যও ঘোষণা করা হয় স্বাস্থ্যবীমা বা প্রণোদনা। করোনায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নিয়োগ দেওয়া হয় চিকিৎসক। নিশ্চিত করা হয় চিকিৎসা সুরক্ষাসামগ্রীও। সবকিছু শক্ত হাতে তদারকি করেন তিনি।

দরিদ্র কৃষক ও কৃষির উৎপাদন বাড়াতে ৫ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এতে বাদ পড়েননি মসজিদের ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার শিক্ষক, নন-এমপিও শিক্ষক, গার্মেন্ট শ্রমিক, গ্রামপুলিশ, প্রতিবন্ধী, দুস্থ সাংবাদিকরাও। এমনকি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কথাও ভুলে যাননি সরকারপ্রধান। তাদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্যও বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। ঈদের আগে প্রতি পরিবারকে ২ হাজার ৫০০ করে ১ হাজার ২৫০ কোটি নগদ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয় ভিজিএফ, ভিজিডির পরিমাণ। রেশন কার্ডের আওতায় ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করা হয়। এতে ৫ কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছে। শিশুদের জন্যও খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ ক্ষমতাসীন দলের কিছু কিছু জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও কাউকে এক চুল ছাড় দেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শতাধিক জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, করোনাকালে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে, কিন্তু শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি। বরং উৎপাদন ও খাদ্য মজুদ বেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবন সূত্রগুলো বলছেন, করোনা পরিস্থিতির পর থেকেই কর্মঘণ্টা ভুলে দেশের মানুষকে বাঁচানোর লড়াইয়ে নিরলস কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনার শুরু থেকে গণভবন থেকে ছয় দফায় তৃণমূলে মাঠ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে দিয়েছেন সব ধরনের নির্দেশনা। স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনাসহ সব জায়গায় সঠিক মনিটরিং করেছেন তিনি। এ ছাড়া এখন নিয়মিত মন্ত্রিসভার বৈঠকসহ নানা কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

জুনের শেষ সপ্তাহে দেশের কয়েকটি জেলায় আঘাত হানে ভয়াবহ বন্যা। বন্যা ও নদী ভাঙন রোধেও নজর দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যারা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তাদেরও পুনর্বাসনে প্রস্তুতি চলছে।

করোনা, আম্ফান ও বন্যার মধ্যেও সরকারের দক্ষ মনিটরিংয়ের কারণে বাজার পরিস্থিতিও ছিল সাধারণ মানুষের নাগালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিভিন্ন সংস্থাও নিয়মিত মনিটরিং করেছে সর্বক্ষণ।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শুধু করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাই নয়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, বন্যা পরিস্থিতি শক্ত হাতে মোকাবিলা করছেন। আবার অর্থনীতির চাকাও সচল রেখেছেন। গণভবন থেকে সবকিছু কঠোরভাবে মনিটরিং করছেন। কিছু দোষত্রুটি ও অন্যায় হলে সেখানেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন তিনি। এমনকি দলীয় পরিচয়েও কেউ পার পাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু করোনা, আম্ফান, বন্যাই নয়, এবারের ঈদযাত্রাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। সেটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাফল্যজনকভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের বড় বড় দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সব অর্থনীতির সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘মানুষের জন্য রাতদিন কাজ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তাঁকে রাত ২টায় ফোন করলেও পাওয়া যায়। আবার সকাল কিংবা দুপুরেও ফোন করলে পাওয়া যায়। কখনো না ধরতে পারলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোন ব্যাক করেন। এটা শুধু আমার ক্ষেত্রেই নয়, অনেকের ক্ষেত্রেই এমন ঘটছে।’

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/5572/feed 0
নতুন রূপ হচ্ছে পুরুষ নির্যাতন…যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ https://www.sattersangbad24.com/archives/5266 https://www.sattersangbad24.com/archives/5266#respond Sun, 19 Jul 2020 14:45:00 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=5266 নতুন রূপ হচ্ছে পুরুষ নির্যাতন…যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ

পুরুষশাসিত এ সমাজে সবসময়ই আলোচনায় আসে নারী নির্যাতনের খবর। তবে জগৎ সংসারে কি শুধুই নারী তাদের স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছেন? পুরুষ কি নারীর দ্বারা নির্যাতিত হন না? বিভিন্ন মামলার পর্যালোচনা আর বর্তমান প্রেক্ষাপট বলছে, সমাজের অনেক পুরুষ তার নিজ ঘরে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছেন।

চক্ষুলজ্জা আর পরিবারের কথা চিন্তা করে দিনের পর দিন বউয়ের এসব নির্যাতন-নিপীড়ন আর হুমকি-ধমকি নীরবে সহ্য করে যাচ্ছেন। পুরুষ অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন বলছে, সমাজে অনেক পুরুষই স্ত্রীর যন্ত্রণায় নীরবে কাঁদেন। লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে চোখ মোছেন; কিন্তু দেখার কেউ নেই। বলারও উপায় নেই। বিভিন্নমহল থেকে পুরুষ নির্যাতন বন্ধে আইন প্রণয়নেরও জোর দাবি জানানো হচ্ছে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। বিরোধীদলীয় নেত্রী একজন নারী। দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান একজন নারী। অর্থাৎ নারীরা পিছিয়ে আছে বা তারা অনগ্রসর একথা আর সেভাবে বলা যায় না। বরং নারী সমাজ পরাধীনতার খোলস ভেঙে, নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে গেছে অনেকটা পথ। এটা আমাদের গৌরব ও অহংকার। তারপরও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নারীরা স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, যৌতুকের জন্য শ্বশুরবাড়িতে নিগৃহীত হচ্ছেন। এছাড়াও ধর্ষণ, অত্যচার, যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে অহরহ।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সমাজ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। বদলে যাওয়া সমাজেরই নতুন রূপ হচ্ছে পুরুষ নির্যাতন। নির্যাতিত পুরুষের কেউ শারীরিক, কেউ মানসিক, কেউ দৈহিক-আর্থিক, কেউ সামাজিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন। ঘরে-বাইরে এ ধররের নির্যাতন প্রায়ই ঘটছে। তুলনামূলক কম হলেও নির্যাতিত পুরুষের সংখ্যা এদেশে নেহায়েত কম নয়। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কাছে নারী নির্যাতনের পরিসংখ্যান থাকলেও নেই পুরুষ নির্যাতনের সঠিক তথ্য। ফলে নারী নির্যাতনের খবর ফলাও করে প্রকাশ করা হলেও অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে পুরুষ নির্যাতনের ঘটনাগুলো। তবে সাম্প্রতিককালে পুরুষ নির্যাতনকে কেন্দ্র করে বেশকিছু সংগঠন গড়ে উঠছে।

পুরুষরা কেন নিগৃহীত হচ্ছেন?

সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার বন্ধন আগের চেয়ে অনেকটা হালকা। এছাড়া সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, নৈতিক স্খলন, লোভ-লালসা, উচ্চবিলাসিতা, পরকীয়া, মাদকাসক্তি, অর্থনৈতিক বৈষম্য, বিশ্বায়নের ক্ষতিকর প্রভাব, অবাধ আকাশ সাংস্কৃতিক প্রবাহসহ নানা কারণেই এমনটা ঘটছে। যার চরম পরিণতি হচ্ছে সংসারের ভাঙন ও নির্যাতন। পারিবারিক অশান্তি ও সংসার ভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারী-পুরুষ উভয়ই। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সমাজের সব অংশই প্রতিনিয়ত ভুগছেন নানা পারিবারিক যন্ত্রণায়। এক্ষেত্রে নির্যাতিত নারীর পাশে সমাজের অনেকেই সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু পুরুষশাসিত এ সমাজে পুরুষও যে নির্যাতিত হতে পারে সেটি যেন কারও ভাবনাতেই নেই। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আড়ালেই থেকে যায় পুরুষ নির্যাতনের করুণ কাহিনী।

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হলেও আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না পুরুষ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সন্তানের ভবিষ্যৎ, সামাজিক মর্যাদা, চক্ষুলজ্জা, জেল-পুলিশ আর উল্টো মামলার ভয়ে বাধ্য হয়ে স্ত্রীর নির্যাতন নীরবে সহ্য করে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। পুরুষ চাইলেও নির্যাতনের কথা বলতে পারছে না। অন্যদিকে একজন নারী আইনের অপব্যবহার করে ইচ্ছে করলেই ঘটনা সাজিয়ে পুরুষের বিরুদ্ধে থানা বা আদালতে সহজেই নারী নির্যাতনের মামলা বা যৌতুক মামলা দিতে পারছেন।

মানবাধিকার আইনজীবী সালমা সুলতানা বলেন, স্ত্রীরা নির্যাতিত হওয়ার পাশাপাশি অনেক সময় পুরুষও স্ত্রী কর্তৃক শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধে সুনির্দিষ্টভাবে নেই কোনো আইন। নারী ও শিশু নির্যাতনে পাঁচটি ট্রাইব্যুনাল তৈরি হলেও পুরুষদের জন্য একটিও নেই। ফলে ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দেয়াটা দুরূহ হয়ে পড়ছে। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে সমাজের উচ্চ পদধারী থেকে শুরু করে নিুশ্রেণীর রিকশাচালক পর্যন্ত অনেক পুরুষই আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য আমাদের কাছে আসছেন।

নারী নির্যাতন আইনের খক্ষ

নারী উন্নয়ন ছাড়া একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না। তাইতো পৃথিবীর অনেক দেশ নারী উন্নয়নের প্রসার ঘটিয়ে উন্নতির শিখরে অবস্থান করছে। আমাদের দেশও নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অতীতের অনেক সময় থেকে বর্তমানে আমাদের দেশের নারী সর্বক্ষেত্রে পুরুষদেরও ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের সংবিধানের ২৭, ২৮ ও ২৯ নং অনুচ্ছেদে নারীর অধিকারের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে নারীর সুরক্ষার জন্য দেশে একাধিক আইন রয়েছে। এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন-২০০০, এসিড নিরোধ আইন-২০০২, পারিবারিক সহিংসতা ও দমন আইন-২০১০, যৌতুক নিরোধ আইন-১৯৮০ উল্লেখযোগ্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য নারীর সুরক্ষার জন্য আইনগুলো তৈরি হলেও বর্তমানে এ আইনগুলোকে কিছু নারী পুরুষ দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। সামান্য কিছুতেই স্বার্থান্বেষী নারী স্বামীদের নাজেহাল করতে এসব আইনের অপপ্রয়োগ করছেন। অন্যদিকে দেশে ‘পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধ’ আইন এখনও সৃষ্টি হয়নি। নেই পুরুষ নির্যাতনবিরোধী ট্রাইব্যুনালও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব কারণে আইনি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ভুক্তভোগী পুরুষ।

নারী নির্যাতন ও যৌতুক মামলায় হয়রানির শিকার নারায়ণগঞ্জ জেলার ভুইগড়ের শেখ খায়রুল আলম। একদিনের জন্য ঘরে বউ তুলতে না পারলেও সেই বউয়ের মামলায় হাজতে থাকতে হয়েছিল ৭৭ দিন। খায়রুল আলম দাবি করেন, কোনো ধরনের অপরাধ না করেও হাজতে থাকতে হয়েছে। কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার পরও ঝুলে আছে ২০১৪ সালের মামলা। প্রতি ২-৩ মাস পরপর দিতে হয় হাজিরা। তিনি বলেন, নারী নির্যাতন মামলা হলেই আগে হাজত, তারপর তদন্ত। ফলে দেশব্যাপী অনেক পুরুষকে বিনা অপরাধে জেল খাটতে হয়।

যৌতুক আইনের অপপ্রয়োগ

পুরুষ নির্যাতনের ক্ষেত্রে যৌতুক আইনের অপপ্রয়োগ সবচেয়ে বেশি। আইনজীবীরা বলেন, যৌতুক আইনের অধিকাংশই মিথ্যা ও হয়রানিমূলক। পারিবারিক যে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত ঝগড়া হলে সেটি থানা পুলিশে গড়ালে পরিণত হয় যৌতুক মামলায়। কোনো কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হলে অথবা স্ত্রীকে তালাক দিলে অথবা উচ্ছৃঙ্খল স্ত্রীকে শাসন করলে অথবা স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দিলে সেই স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন থানায় বা আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন-২০০০-এর ১১(খ) অথবা যৌতুক নিরোধ আইন-১৯৮০-এর ৪ ধারায় একটি মামলা করেন। একজন পুরুষের জীবন অতিষ্ট করার জন্য এ একটি মামলাই যথেষ্ট।

ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপকমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, শুধু নারীই নন, পুরুষও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অনেক পুরুষ খারাপ মেয়েদের ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করছে। শুধু নারীই নন, পুরুষও নারীর দ্বারা ভিকটিমাইজ হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা পেশাগত দায়িত্বের বাইরে অনেক কিছু গোপন রেখে কাউন্সেলিং ও আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকি।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, পারিবারিক মামলার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনের সঙ্গে যৌতুকের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু দাম্পত্য কলহ হলেই যৌতুকের মামলা দেয়া হয়। এতে পরিবারের সন্তানরাও কিন্তু দিশেহারা হয়ে যায়।

পারিবারিক মামলা শুধু পুলিশ দিয়ে ঠেকানো যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরুষ নির্যাতনের সংখ্যা নারীর তুলনায় অনেক কম। পরিবারে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে। ছাড় দেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ভুল বোঝাবুঝি হলে নিজেদের মধ্যে সমাধান করতে হবে। নির্যাতন বন্ধ হতে হবে ঘর থেকেই।

দেনমোহর কেলেঙ্কারি

আমাদের দেশে সাধারণত বিয়ের সময় পাত্রী পক্ষ জোরপূর্বক পাত্রকে সাধ্যের অতিরিক্ত টাকা কাবিন নামায় ধার্য করতে বাধ্য করেন। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব কাবিন হয় বাকিতে। অর্থাৎ দেখা গেল কনে পক্ষের দাবি অনুযায়ী, কাবিন করা হল ১০ লাখ। এর মধ্যে গহনা ও অন্যান্য জিনিস বাবদ ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ দেখিয়ে পুরোটাই বাকি রাখা হয়। যদিও ইসলামী বিধান হল বিয়ের সময়ই দেনমোহর পুরোটা পরিশোধ করা। তবে এই কথা শোনে কে? বাকি থাকা বা বাড়তি এই দেনমোহরই পরে কাল হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন কেস স্টাডি থেকে জানা গেছে, অতিরিক্ত দেনমোহরের কারণে স্বামী তার স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজনের অনৈতিক দাবি মেনে নিতে বাধ্য হন।

পবিত্র কোরআনের সুরা আল বাকারার আয়াত নং-২২৯ অনুসারে যদি কোনো স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে মুক্ত হতে চান তবে তাকে কোনো কিছুর বিনিময়ে হতে হবে; যা তার মোহরানার অতিরিক্ত হবে না। তাই ইসলাম অনুসারে দেখা যায়, স্ত্রী কর্তৃক স্বামী ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্ত্রী স্বামীকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের দেশীয় আইন অনুযায়ী স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রদান করা হলেও স্বামীকে দেনমোহর প্রদান করতে হয়; যা ইসলামের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

বাংলাদেশ মেন’স রাইট ফাউন্ডেশনের সভাপতি শেখ খায়রুল আলম বলেন, অনেক পুরুষ বউয়ের যন্ত্রণায় নীরবে কাঁদেন বিষয়টি শুনতে হয়তো হাস্যরসের সৃষ্টি করছে; কিন্তু নির্যাতনের শিকার অনেক পুরুষ চক্ষুলজ্জায় বিষয়টি গোপন রাখেন। নারীকে সামান্য কিছু বললেই যৌতুক ও নারী নিযার্তনের মামলা দেয়। পুরুষ নির্যাতিত হয়েও কিছু বলতে পারেন না। স্বামীকে সামান্য অপরাধে শায়েস্তা করতে স্ত্রী যৌতুক নির্যাতনের মামলা দিচ্ছেন। পুরুষ নির্যাতন রোধে কোনো আইন না থাকায় পুরুষ অসহায়। অনেকেই আত্মহননের মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই যত দ্রুত সম্ভব পুরুষ নির্যাতন রোধে আইন পাস করার তাগিদ দিচ্ছেন অনেকেই।

কেস স্টাডি : পুরুষকে অক্ষমতার কালিমা

স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বিশ বছর ধরে একাকী জীবনযাপন করছেন সরকারি কর্মকর্তা মাহমুদুল হক (ছদ্মনাম)। বিয়ের দশ বছরের মাথায় তার স্ত্রী পরকীয়া করে অন্য পুরুষের হাত ধরে চলে যায়। মাহমুদুল হকের ১০ বছরের সংসারে এক ছেলে ও মেয়ে জন্ম নিয়েছিল। তিনি বলেন, একটু বেশি বয়সে বিয়েটা করেছিলাম। আমার স্ত্রী তখন অনার্সে পড়াশোনা করতেন। বিয়ের পর আমার দায়িত্বেই অনার্স-মাস্টার্স শেষ করাই। এরপর তার উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন আমাকে ভাবিয়ে তোলে। বিভিন্ন বন্ধুর সঙ্গে মেলামেশা করত। আমি কিছু বললেই পরিবারের লোকজনকে জানানো হতো আমি নির্যাতন করছি। একবার আমার সঙ্গে ঝগড়া করে ১০ দিন কোনো যোগাযোগ ছিল না। পরে জানতে পারলাম অন্য ছেলেকে নিয়ে সে কক্সবাজার গেছে। এভাবেই চলছিল সংসার।

চক্ষুলজ্জায় কাউকে কিছু বলতাম না। কাছের দুই একজন শুধু জানত। এভাবে পারিবারিক অশান্তির মধ্যেই একদিন আমার সন্তানদের ফেলে অন্য পুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যায়। এরপর ডিভোর্স এবং নতুন বিয়ে কার্যকর করে সে প্রকাশ্যে আসে। আমাকে নিঃস্ব করেই সে ক্ষান্ত হয়নি, নতুন বিয়ের পর সবাইকে বলে বেরিয়েছে আমি শারীরিকভাবে অক্ষম। সেজন্যই আমাকে ছেড়ে গেছে। অক্ষমতার সেই কালিমা নিয়েই সন্তানদের নিয়ে জীবন কাটছে। হাটে-বাজারে এমনকি অফিসেও স্ত্রীর বেহাল্লাপনার জন্য কটাক্ষ শুনতে হয়েছে আমাকে। পরকীয়ার পর অধিকাংশ নারীই পুরুষের বিরুদ্ধে এমন নোংরা অভিযোগ তোলেন।

সূত্রঃঅনলাইন

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/5266/feed 0
করোনা নিয়ে যারা বিদেশ থেকে আসছেন ‘ওরা ভাল চায় নি’ https://www.sattersangbad24.com/archives/3935 https://www.sattersangbad24.com/archives/3935#respond Thu, 19 Mar 2020 12:39:27 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=3935  

করোনা নিয়ে বিদেশ থেকে যারা আসছেন। ওরা ভাল চায় নি,তাই মিলে মিশে পরিবারকে পুশ দিয়ে একই সাথে বিদায় নিবে তার সাথে সমাজের মানুষকে পুশ না ঢুকিয়ে ছাড়বে না। এটি এখন পরিবার ও সমাজের মানুষ হত্যাকারীর সাথে তুলনা করা যায়, ওই ভাইরাস আক্রান্ত বিদেশ ফেরত লোক দেশে আসা উচিত হচ্ছে না,এটি দন্ডনিয় হতে পারে। করোনা নিয়ে যারা আসছে তাদের কঠিন শাস্তি দাবী এখন দেশের আতঙ্ক হওয়া মানুষগুলো । অনেকে বলেছেন আমরা দেশের মানুষ ভালোই ছিলাম কিছু মানুষ বিদেশ থেকে ভাইরাস নিয়ে এসে আমাদেরসহ দেশকে বিপদে ফেলল এখন তাদের জন্য আমাদের সাবধান থাকা লাগবে।
এর প্রতিকার হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন অনেকে।

সম্পাদনায়ঃশেখ এ কে আজাদ

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/3935/feed 0
সবার আগে করোনা ভাইরাসে সংবাদকর্মীর নিজের নিরাপত্তা https://www.sattersangbad24.com/archives/3809 https://www.sattersangbad24.com/archives/3809#respond Sun, 15 Mar 2020 04:05:09 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=3809 সবার আগে করোনা ভাইরাসে সংবাদকর্মীর নিজের নিরাপত্তা

একজন সাধারণ নাগরিকের জন্য নিজেকে রক্ষার যত রকমের উপায় আছে, তার সবই একজন সাংবাদিকের জন্যেও প্রযোজ্য। পার্থক্য হলো, একজন নাগরিক তার চলাফেরা ঘরে বা নিরাপদ স্থানে সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন। কিন্তু একজন সাংবাদিককে পেশার প্রয়োজনেই ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় যেতে হয়। করোনাভাইরাসের খবরও সংগ্রহ করতে হবে, কিন্তু মাথায় রাখবেন, তা নিজের নিরাপত্তাকে বাদ দিয়ে নয়। সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) করোনাভাইরাস কাভারেজের একটি অ্যাডভাইজরি প্রকাশ করেছে। খবর সংগ্রহের আগে, খবর সংগ্রহের সময় এবং পরে, কি ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, তা সেখানে বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিপিজের অ্যাডভাইজরি থেকে জেনে নিন আক্রান্ত এলাকায় গেলে কি করবেন:

সর্দি, কাশি বা শ্বাসযন্ত্রের রোগে ভুগছেন, এমন মানুষের কাছাকাছি যাবেন না। নিজে হাঁচি–কাশি দেবার সময় হাত দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে রাখবেন।
গরম পানি ও সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। সাবান বা গরম পানি না পেলে ব্যাকটিরিয়া প্রতিরোধী জেল বা ওয়াইপস ব্যবহার করুন। কিন্তু তারপর যত দ্রুত সম্ভব গরম পানি ও সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
হাসপাতাল বা আক্রান্ত স্থানে খবর সংগ্রহ করতে গেলে হাতে দস্তানা পড়ে নিন। মাথায় রাখুন, এসব জায়গায় বডিস্যুট ও ফেসমাস্কের মত পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) দরকার হতে পারে।
আক্রান্ত এলাকার কাঁচা–বাজার বা খামারে যাবেন না। জীবিত হোক বা মৃত – পশু–পাখির কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। সেই প্রাণির সংস্পর্শে এসেছে এমন দেয়াল বা কোনো কিছুতে হাত দেবেন না।
যদি আক্রান্ত বাজার বা খামারে যেতেই হয়, তাহলে আপনার কোনো যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামই মাটিতে রাখবেন না। ফিরে এসে ব্যাকটিরিয়া প্রতিরোধী জেল (মেলিসেপ্টল) বা ওয়াইপস দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
আক্রান্ত এলাকার বাজারে যেতে হলে, ডিসপোজেবল অথবা পানি–নিরোধী জুতো পড়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে বেরুনোর পরপরই তা ধুয়ে–মুছে নিন এবং কাজ শেষ হলে তা ফেলে দিন।
আক্রান্ত এলাকায় বা সেখানে কোনো পশুপাখির পাশে দাঁড়িয়ে কিছু খাবেন না, অথবা পান করবেন না।
আপনার নিজেরই শ্বাসকষ্টসহ রোগের উপসর্গ দেখা দিলে কী করবেন, তা আগেই ভেবে রাখুন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সরকারের স্বাস্থ্যবিভাগের নীতিমালা (অনেকখানেই যেমন সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনের কথা বলা হয়) মেনে চলুন।
আক্রান্ত এলাকা থেকে ফেরার ১৪ দিনের মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন এবং আপনার অফিসকে জানান।

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/3809/feed 0
গৌরবময় ইতিহাসের স্মৃতির পাতায় রেখে গেলো সাবেক কয়েকবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য উজ্জল নক্ষত্র মুরহুম রহমত আলী https://www.sattersangbad24.com/archives/3092 https://www.sattersangbad24.com/archives/3092#respond Tue, 18 Feb 2020 04:33:30 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=3092 মোহাম্মদ আদনান মামুন,নিজস্ব প্রতিবেদক,শ্রীপুর থেকেঃ

গৌরবময় ইতিহাসের স্মৃতির পাতায় রেখে গেলো সাবেক কয়েকবারের নির্বাচিত জনপ্রিয় আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য দেশের উজ্জল নক্ষত্র মুরহুম রহমত আলী। গ্রামের মেঠো পথ থেকে উঠে আসা শিশু কি ভাবে হয়ে উঠে রাজ দরবারের সদস্য, সেই কাহিনীর ইতি ঘটবে দাফনের মধ্যে দিয়ে আজ। আজ চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সদস্য ও সাবেক আইন প্রণেতা এ্যাডভোকেট রহমত আলী। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের পূর্ব ইতিহাসের স্বাক্ষী ছিলেন রহমত আলী। আজ তার দাফনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ইতিহাসের একটি জীবন্ত অধ্যায়। আর এরই মধ্যে ইতিহাসে খোলা হবে রহমত আলীর স্মৃতির অধ্যায়। এ্যাডভোকেট রহমত আলী আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় কমিটিতে ছিলেন, ছিলেন গাজীপুর জেলার সভাপতিও। সংসদ নির্বাচনের পর অনেকবার তার নামও এসেছে রহমত আলী স্পিকার হচ্ছেন, রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। এই কারণে গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের সন্তান রহমত আলী জাতীয়ভাবে কত বড় মাপের লোক ছিলেন, ইতিহাস তারই স্বাক্ষী দেয়।

১৯৪৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর উপজেলার বর্তমান পৌর সভার ১নং ওয়ার্ডের বড়বাড়ি সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারে জন্ম উজ্জ্বল নক্ষত্র এডভোকেট রহমত আলীর। বাবা মো. আছর আলী ছিলেন পেশায় কৃষক মা শুক্কুরজান বিবি ছিলেন গৃহিণী।

স্কুল জীবনের শুরু থেকে রহমত আলী ছিলেন খুব মেধাবী। তাই উচ্চ শিক্ষা নিতে বেগ পেতে হয়নি কোন দিন। রহমত আলী শ্রীপুর পাইলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র থাকাকালীন সময়ে রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই শ্লোগান দেন।

১১ বছর বয়সে শ্রীপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে ১৯৬২ সালের ১৭ এপ্রিল হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন তিনি। এডভোকেট রহমত আলী ১৯৬২ সালে ভালুকা উপজেলার বাটাজোর বিএম হাই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৭২ সালে শ্রীপুর স্নাতক মহাবিদ্যালয় থেকে মানবিক শাখায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৭৪ সালে শ্রীপুর মহাবিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করে ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

কৃষকের ঘরে জন্ম হলেও তিনি আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখা পড়া শেষ করে পেশা হিসেবে বেছে নেন আইন। এভাবে সমাজের নিরীহ নির্যাতিত মানুষকে সেবা করে শুরু হয় তার কর্মময় জীবন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলী আওয়ামীলীগের বড় নেতাদের হাত ধরে যোগ দেন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে। শুরু হয় তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন।

এরপর থেকে এই নেতাকে আর কখনও পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি জীবনের সর্বশেষ গন্তব্যে পৌঁছাতে। কারণ ওনার মনে প্রাণে ছিলো মানুষের সেবা করার স্বপ্ন। আর মনের বিতর লালিত স্বপ্ন পূরণ করতে আরোও সুযোগ করে দেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ সালে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এডভোকেট রহমত আলী। নির্বাচিত হওয়ার পর একটি দিনও বসে থাকেন নি তিনি।
লেগে যান কাজে কি ভাবে অবহেলিত জনপদ শ্রীপুরকে আধুনিক শ্রীপুর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, বিশ্ব বিদ্যালয়সহ শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন উন্নয়নমূল্লক কাজে হাত দেন তিনি।

একে একে অবহেলিত জনপদ শ্রীপুরকে বাংলাদেশের বুকে সর্বোচ্চ স্হানে পৌছে দিতে জীবেন শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে গেছেন এই সমাজ সংস্কারক।

রহমত আলী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর্বে শ্রীপুর উপজেলার রাস্তাঘাট গুলোর অবস্থা ছিলো খুবই বেহাল। এই রাস্তা গুলো সংস্কারের জন্য একে একে হাত দেন সব রাস্তায়। উপজেলার সাথে সকল ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ নিশ্চিত করতে সড়ক গুলোকে প্রশস্ত করেন। রাস্তা ঘাট প্রশস্ত হওয়ার পর উপজেলার সাথে শুরু হয় বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ। এতে করে ব্যবসার প্রসার বৃদ্ধি পেতে থাকে।

এরপর রহমত আলী শ্রীপুর উপজেলার সাথে অনন্য উপজেলার মানুষের সংযোগ স্থাপনের জন্য বিভিন্ন নদীতে বেশ কয়েকটি বড় সেতু নির্মাণ করে পাশ্ববর্তী উপজেলা ভালুকা, গফরগাঁও, কাপাসিয়া, কালীগঞ্জে, কালিয়াকৈরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে ব্যবসার দ্বার উন্মোচিত করে দেন। এতে করে তিনি ঘুরিয়ে দেন বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা।

এই মহান মানুষটি বাংলাদেশ জাতীয় সংদের ৫বার জনগণের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের সরকারের পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রীরও দায়িত্বে পালন করেন পাঁচ বছর। আর মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে শুধু নিজের সংসদীয় এলাকা নয় পূরো বাংলাদেশ উন্নয়নের ছোঁয়া ছিলো রহমত আলীর।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, (১৬ ফেব্রুয়ারী রবিবার ) সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ তিনি করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে ভুগছিলেন রহমত আলী। এর আগে কয়েক দফা থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে গত ২৮ জানুয়ারি দেশে আনা হয় তাঁকে। তবে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিনই তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেকবার কারাবরণ করেছেন রহমত আলী। ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকরত অবস্থায় ড. কামাল হোসেনের বাসা থেকে তাঁকে চোখ বেঁধে ক্যান্টমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নির্যাতন চালিয়ে তাঁর ১৭টি দাঁত, ডান হাত ও বুকের একটি হাঁড় ভেঙে ফেলে হয়।

গাজীপুর-৩ আসন থেকে একাধারে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রহমত আলী। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন উপকমিটি, বাংলাদেশ কৃষক লীগ ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। অসুস্থতার কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাননি তিনি।

রহমত আলীর বড় ছেলে ড. এম জাহিদ হাসান একজন পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। মেঝ ছেলে জামিল হাসান দুর্জয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। একমাত্র মেয়ে রুমানা আলী টুসী জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য। তাঁর মৃত্যুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শোক প্রকাশ করেছে।

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/3092/feed 0
‘আত্মহত্যা’ কোন প্রতিবাদ নয়, অপরাধ https://www.sattersangbad24.com/archives/2211 https://www.sattersangbad24.com/archives/2211#respond Fri, 24 Jan 2020 06:25:13 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=2211 লেখক,হাফিজুর রহমান

আইনের জগতে একটি সরল ধাঁধার বহুল প্রচলন দেখা যায়। ধাঁধাটি হল, বলুনতো এমন কোন অপরাধ আছে যাহা করিলে শাস্তি হয় না কিন্তু করিবার উদ্যোগ করিলে শাস্তি হয়! ধাঁধার উত্তরটি অনেকেরই জানা আবার অনেকেই হয়তো জানা নেই। এর সহজ উত্তর “আত্মহত্যা”। মূলতঃ এই অপরাধটি সম্পূর্ণ হইলে যে অপরাধী সে সকল আইন এবং পৃথিবীর সকল শাস্তির উর্ধ্বে চলে যান। অর্থাৎ যিনি আত্মহত্যা সম্পন্ন করেন তাহাকে পৃথিবীতে শাস্তি দেওয়া যায় না। কিন্তু যিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করিয়া সফল হইতে পারেন না, তাহাকে শাস্তি প্রদান করিয়া পৃথিবীতে এ ধরনের কাজকে নিরুৎসাহিত করা হয়। আপনরা জীবন আপনার নিকট যেমন মূল্যবান কিম্বা আপনার কোন কোন ভ্রান্ত ধারনায় মূল্য না থাকুক অন্যদের নিকট তাহা অতি মূল্যবান। কবির ভাষায় বলতে গেলে “মানব জীবন সার, এমন পাবে না আর”

আত্মহত্যা কি?
পৃথিবীর সুন্দর সব কিছুকে ফেলে স্বেচ্ছায় নিজ জীবনাবসানের নাম আত্মহত্যা। আত্মহত্যা মানে নিজেকে নিজে খুন করা। কোন প্রাণী নিজের জীবন নিজেই শেষ করা বা নিজ জীবন হত্যা করাকে আমরা আত্মহত্যা বলে থাকি। অনেকের মতে নিজ আত্মাকে হত্যা করার নামান্তর আত্মহত্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞানুসারে আত্মহত্যা হলো স্বজ্ঞানে এমন একটি ভয়ানক কাজ করা যা কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায় এবং ব্যক্তি ঐ কাজের প্রত্যাশিত ফলাফল সম্পর্কে পূর্ব থেকেই পুরোপুরি অবগত থাকে। আবার নিজ আত্মাকে চরম যন্ত্রণা আর কষ্ট দিয়ে নিজেকে হত্যার নাম “আত্মহত্যা” বলে থাকেন অনেকে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য ভয়াবহ মেডিকেল এবং সামাজিক ব্যাধি। আত্মহত্যা কোন সমস্যার সমাধান নয় বরং সমস্যার কারণ। মায়ের সঙ্গে অভিমান করে দূর গাঁয়ের কিশোরী মেয়ে যেমন কীটনাশককে অবলম্বন করে পালিয়ে যায় জীবন থেকে, তেমনি মেগাসিটির অভিজাত উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিও তার অন্তর্জগতের তাড়িত বোধ থেকে রেহাই পেতে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। এ তালিকা থেকে মুক্তি পায়নি ইউনিভার্সিটির প্রবীণ শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক, অভিনয়শিল্পী, সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, পুলিশ থেকে শুরু করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়া ছোট শিশুও ।

সবচেয়ে যে কারনে বেশী মানুষ আত্মহত্যা করে তার নাম বিষন্নতা। বিষণ্ণতা মানসিক রোগগুলোর মধ্যে অত্যন্ত সাধারণ এবং ধ্বংসাত্মক একটি রোগ। কারণ এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি জীবন চলার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে এবং কোনো কোনো রোগী অবলীলায় আত্মহত্যার মাধ্যমে মুক্তি পেতে চেষ্টা করে এবং কখনো কখনো সফল হয়। তাই আর কিছু দিনের মধ্যেই হয়তো বিষণ্ণতা রোগটি পৃথিবীতে এক নম্বর ‘কিলার ডিজিজ’ হিসেবে পরিচিতি পাবে। পরিসংখ্যানে আরো পাওয়া যায় যারা আত্মহত্যা করেছে তাদের ৮০ ভাগই আত্মহত্যার পূর্বাভাস দিয়েছে কিন্তু যথাযথ গুরুত্ব পায়নি বলে কেউ প্রতিরোধের ব্যবস্থাও গ্রহণ করেনি। যেকোনো লোক যেকোনো সময়ে বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্ত হতে পারে তবে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে শতকরা ১০০ ভাগ রোগীই ভালো হয়ে যেতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে আত্মহত্যাকারীর সংখ্যা। সাধারণত দু’ভাবে আত্মহত্যা সংঘটিত হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিকল্পনার মাধ্যমে আত্মহত্যা করে আর একটি হলো তাৎক্ষণিক উত্তেজনা বা তাড়নায় ইমপালসিভ আত্মহত্যা। পরিকল্পনাকারীদের মনে প্রথমে আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে, ইচ্ছার পর পরিকল্পনা করে সে, তার পর আত্মহত্যার জন্য এ্যাটেম্পট গ্রহণ করে। বড় ধরনের বিষণ্ণতা রোগের শেষ পরিণতি হচ্ছে পরিকল্পনার মাধ্যমে আত্মহত্যা।

এবার দেখা যাক ধর্মে আত্মহত্যা নিয়ে কি বলা হয়েছেঃ-
ইসলাম ধর্মে আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকতে মহান আল্লাহ্‌ তা’আলা বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং এর পরিনামের কথা ভাববার জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির বর্ণনা দিয়ে মহা পবিত্র আল কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। সূরা নিসা ২৯-৩০ নং আয়াতে বলা হয়েছে “আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে উহা (আত্মহত্যা) করবে, অবশ্য আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো, আল্লাহর পক্ষে উহা সহজসাধ্য।”

হাদিসে বলা হয়েছেঃ-
ক) রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর যে বর্শা ইত্যাদির আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করে- দোজখেও সে সেভাবে নিজেকে শাস্তি দেবে।
খ) হযরত জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের পূর্বেকার এক লোক আহত হয়ে সে ব্যথা সহ্য করতে পারেনি। তাই সে একখানা চাকু দিয়ে নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলে। এর পর রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা নিজেকে হত্যা করার ব্যাপারে বড় তাড়াহুড়া করে ফেলেছে। তাই আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম।

খৃষ্টান ধর্মে বাইবেল অনুযায়ী, আত্মহত্যা নিশ্চিত করে না যে একজন ব্যক্তি স্বর্গে প্রবেশের অধিকার পাবে কি না৷ যদি কোনো অসংরক্ষিত ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, তবে সে শুধুমাত্র নরকের দিকে নিজের যাত্রা “ত্বরান্বিত” করা ছাড়া আর কিছুই করল না৷ যদিও, যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করল সে প্রভূ খ্রীষ্টকে নিজের মুক্তিদাতা হিসেবে অস্বীকার করেছে বলেই নরকে যাবে, আত্মহত্যা করার জন্য নয়৷ যে খ্রীষ্টান আত্মহত্যা করে তার সম্পর্কে বাইবেলে বলা হয়েছে, বাইবেল আমাদের শেখায়, যে মুহূর্ত থেকে আমরা প্রভূ খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করতে শুরু করবো, আমরা শাশ্বত জীবন পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাব (জন্ 3:16)৷ বাইবেল অনুযায়ী, খ্রীষ্টানরা দ্বিধাহীনভাবে জানে যে তারা শাশ্বত জীবনের অধিকারী (1 জন্ 5:13)৷ কোনো কিছুই একজন খ্রীষ্টানকে ঈশ্বরের ভালোবাসা পাওয়ার থেকে বিরত রাখতে পারে না (রোমানস্ 8:38-39)৷ আত্মহত্যা হল ঈশ্বরের বিরুদ্ধে একটি ভয়ানক পাপ৷ বাইবেল অনুযায়ী, আত্মহত্যা হল খুন; এইটি সবসময়েই ভুল৷ কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে খ্রীষ্টান বলে দাবি করা সত্ত্বেও আত্মহত্যা করে তবে তার বিশ্বাসের উৎকর্ষতা সম্পর্কে সন্দেহ জাগবে৷

সনাতন ধর্মে পুরাণে উল্লেখ করা হয়েছে, রামের মৃত্যুর পর অযোধ্যায় গণহারে আত্মহত্যা করে মানুষ। কিন্তু মহাভারতে বলা হয়েছে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর অনাহারে আত্মহত্যার চিন্তা করলে যুধিষ্ঠিরকে স্বেচ্ছামৃত্যুর পরিকল্পনা বাতিলের পরামর্শ দেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, অর্থাৎ হিন্দুধর্মেও আত্মহত্যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের “অহিংসা পরম ধর্ম, জীব হত্যা মহাপাপ” এই মতবাদ মতে নিজ জীবন বা অন্য কোন জীব হত্যাকে সম্পূর্ণভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আবার অনেকের মতে বৌদ্ধ ধর্মে (সদ্ধধর্ম) যদিও আত্মহত্যায় উৎসাহিত করা হয় না, তবে এই ধর্মে আত্মহত্যাকে একেবারে নিষিদ্ধও করা হয়নি।ইহুদিরাও আত্মহত্যাকে পাপকর্ম বলেই মনে করে।

এবার দেখা যাক আইন কি বলে..
আইনের চোখেও আত্মহত্যার প্রচেষ্টাগ্রহণকারী একজন অপরাধী। আত্মহত্যার পর যেমন থানায় খবর দিতে হয়, তেমনি আত্মহত্যার চেষ্টা করলেও থানায় খবর জানানোর কথা বলা হয়েছে। আত্মহত্যার চেষ্টা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদিও আইনটির প্রয়োগ নেই দেশে। সচেতন নয় মানুষ, সচেতন নয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।
পেনাল কোড ৩০৯ ধারায় বলা আছে, যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করিবার উদ্যোগ করে এবং অনুরূপ অপরাধ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করে, সেই ব্যক্তি বিনাশ্রম কারাদন্ডে- যাহার মেয়াদ এক বৎসর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দণ্ডিত হইবে। অর্থাৎ আইন নিজের জীবন হরণের চেষ্টাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে এবং এ কারণে যে তার স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করার অধিকার তার নেই। কারণ এতে অপরাধ সংঘটন করে নিজেকে রেহাই দিতে উদগ্রীব হবে। এতে অপরাধ বাড়বে বৈ কমবে না।

আত্মহত্যা প্ররোচনার শাস্তির দণ্ডবিধিঃ

বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধির (পেনাল কোড) ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যা প্ররোচনার শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করলে অনুরূপ আত্মহত্যা অনুষ্ঠানে সহায়তাকারী ব্যক্তির ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। ৩০৫ ধারায় বলা হয়েছে, শিশু বা পাগল বা মাতাল ব্যক্তির আত্মহত্যার প্ররোচনাদানকারীকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদনণ্ড দণ্ডিত করা যাবে।এ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনা কি সে সম্পর্কে কিছু বলা নেই। অন্যদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধিত ২০০৩)-এর ৯ক ধারায় নারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনো নারীর সম্মতি ছাড়া বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাকৃত কোনো কার্য দ্বারা সম্ভ্রমহানি হওয়ার প্রত্যক্ষ কারণে কোনো নারী আত্মহত্যা করলে ওই নারীকে অনুরূপ কার্য দ্বারা আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দেয়া হয়েছে বলা হবে। এ আইনেও ১০ বছর শাস্তির বিধান করা হয়েছে।

আত্মহত্যা সংক্রান্ত কিছু মজার তথ্যঃ
১। মেয়েরা পুরুষদের চেয়ে তিনগুন আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিন্তু মরেনা। আর আত্মহত্যার হার মেয়েদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে বেশি(তবে বর্তমানে মেয়েদের আত্মহত্যার হার ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে)
২। যারা একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে তারা সাধারণত দ্বিতীয়বার আর সে মুখী হয়না।
৩। যুবক বয়সে মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা বেশি করে কিন্তু সফল বেশি হয় বয়ষ্করা।
৪। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বিশ মিনিটে একজন আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু তারপরও দেখা যায় তারা প্রতি দুইশ জনে একজন সফল হয়।
৫। বসন্ত ও শীতকালে আত্মহত্যার হার বেড়ে যায়।
৬। আত্মহত্যার চেষ্টার আগে যারা দার্শনিক কথা লিখে যায় তারা মূলত মরেনা কিন্তু যারা স্বাভাবিক খবর লিখে যায় তারা মরে।
৭। গণমাধ্যমে প্রকাশিত আত্মহত্যার বিবিরণী মানুষকে আত্মহত্যার জন্যে প্ররোচিত করে।

আত্মহত্যার ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিকে মনে রাখতে হবে,
আত্মহত্যা মানে, আইন লঙ্ঘন করা, অপরাধ করা।
আত্মহত্যা মানে, ধর্মীয় অনুশাসন অবজ্ঞা করা।
আত্মহত্যা মানে সমাজে পচনশীল ক্ষত বাড়িয়ে দেয়া, সমাজকে পেছনের দিকে ঠেলে দেয়া।
আত্মহত্যা কখনো প্রতিবাদের অস্ত্র হতে পারে না- প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। আত্মহত্যার ইচ্ছা, আগ্রহ জয় করতে হবে। জয় করার নামই জীবন। জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়া হচ্ছে কাপুরুষতা।
আত্মহত্যা মানে অন্যায়ের সাথে আপোষ করা।
আত্মহত্যা মানে খুব সহজে হার মানা।

বর্তমান সময়ে সমাজে আত্মহত্যা সংঘটিত হলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মিডিয়া। মিডিয়ার কারণে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বহমান আত্মহত্যার নির্মম ঘটনাগুলো জানতে পারছে সকলে। কি কারণে আত্মহত্যা ঘটেছে, পারিবারিক, সামাজিক কি অবক্ষয়ের কারণে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত হচ্ছে আত্মহননকারী, সব জেনেও সহানুভূতি নিয়ে আমরা দাঁড়াচ্ছি আত্মহত্যাকারীর পাশে। দরদী মনের ব্যাকুলতার কারণে এমনটি করে থাকে মিডিয়াকর্মী কিংবা জনগোষ্ঠী। না! আত্মহত্যার পর সহানুভূতি দেখানো যাবে না আত্মহত্যাকারীকে। যদি আত্মহত্যাকারীকে হিরো কিংবা হিরোইন বানিয়ে তোলা হয় মিডিয়াতে। যে বিশাল জনগোষ্ঠী আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছে (৪.৬ শতাংশ এডাল্ট জনগোষ্ঠী), তারা প্ররোচিত হবে আত্মহত্যার জন্য। সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে অবক্ষয়ের পাশাপাশি এটাও আত্মহত্যার হার বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ।

হ্যাঁ! আসুন আমাদের দাঁড়াতে হবে আত্মহত্যা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির পাশে। আত্মহত্যার ঝুঁকি শনাক্ত করতে হবে স্বজনদের। ঝুঁকি শনাক্ত করে আত্মহত্যার পূর্বেই ভূমিকা রাখতে হবে আমাদের। কোন বিষন্নতা বা প্রতিবাদ নয়, আসুন একসাথে সকলে পৃথিবীতে বেঁচে থেকে বিষন্নতাকে জয় করি বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। আর কোন আত্মহত্যা নয়, আত্মউপলব্দি করি পৃথিবীর সকল সুন্দরের। অসুন্দরকে দুর করি মৃত্যুকে দুরে সরিয়ে। বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলি হাতে রেখে হাত। ধর্ম বর্ণ বা গোষ্টি নয়, আমাদের পরিচয় হোক আমরা সকলেই মানুষ। চাই স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি, স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য আমরা আমাদেরকে প্রস্তুত করি। নিজেকে ভালবাসতে শিখি, যারা আপনাকে নিয়ে ভাবছে-ভালবাসছে তাদেরকে ভালবাসতে শিখি, অন্ততঃ তাদের জন্য হলেও বাঁচতে শিখি। প্রতিজ্ঞা করি আর আত্মহত্যা নয়, সুন্দর সমাজ গড়তে আত্মরক্ষায় নিয়োজিত করি নিজেকে এবং সমাজকে।

হাফিজুর রহমান
উপ-পুলিশ পরিদর্শক
ঢাকা রেঞ্জ মিডিয়া
বাংলাদেশ পুলিশ

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/2211/feed 0
‘লোমহর্ষক’ একটি অজ্ঞাত লাশ, ‘টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ হত্যা রহস্য উদঘাটন https://www.sattersangbad24.com/archives/2082 https://www.sattersangbad24.com/archives/2082#respond Mon, 20 Jan 2020 19:03:13 +0000 https://www.sattersangbad.com/?p=2082 তথ্য সংগ্রহ ও লেখক,হাফিজুর রহমান

মহাসড়কের পাশে পড়ে আছে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ। হাত ও চোখ বাধা এবং গলায় গামছা পেঁচানো। আশপাশের লোকজন ঘিরে আছে ৪৫ বছর বয়স্ক ব্যক্তির মরদেহের চারপাশে। সংবাদ পেয়ে থানা থেকে পুলিশ এসে মরদেহ পরীক্ষা করে পকেটে একটি চিরকুট পান। চিরকুটে লেখা মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে কামরুজ্জামান নামের ব্যক্তির সাথে কথা বলে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। তিনি ঘটনাস্থলে এসে সনাক্ত করেন লাশটি আর কারো নয়, তার বাবার। নাম কামাল হোসেন। মুহূর্তেই আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে স্বজন হারানোদের কান্নায়।

গত ০৭ নভেম্বর, ২০১৯ তারিখ দুপরের ঘটনাটি ঘটে
। লাশ হয়ে পড়ে থাকা কামাল হোসেনের গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানা এলাকায়। বিশেষ প্রয়োজনে ৬ নভেম্বর রাতে ট্রেনে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। কাজ শেষে ৭ নভেম্বর সকাল ১০.৩০ ঘটিকার সময় চন্দ্রা মোড় থেকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন গাড়ীর জন্য। এরপর থেকে ভিকটিমের সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় পরিবারের। লাশ পাওয়ার পর মির্জাপুর থানার মামলা নং- ০৭, তারিখ- ০৮/১১/২০১৯ খ্রি. ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। মামলাটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা হওয়ায় ঢাকা রেঞ্জ মনিটরিং সেলের আওতাভুক্ত করা হয়। মাননীয় ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ মহোদয় মামলাটি ডিবি’র একজন দক্ষ কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত করানোর জন্য পুলিশ সুপার টাঙ্গাইলকে নির্দেশ প্রদান করেন। টাঙ্গাইল জেলা ডিবির এসআই মোঃ হাফিজুর রহমানকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োজিত করা হয়। টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার জনাব সঞ্জিত কুমার রায় বিপিএম ঘটনাটি রোমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা হওয়ায় বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সার্বক্ষণিক নিজে মামলাটির তদন্ত মনিটরিং করেন।

তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রযুক্তিগত কলা-কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে তদন্তকারী অফিসার মামলার ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত আসামী কাউসার আহম্মেদ (৩৫) এবং মাইনুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩০)-দ্বয়কে ঢাকা মহানগরের আলাদা আলাদা ভাড়া বাসা হতে গ্রেফতার করেন। আসামীদের নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করে। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এলাকায় প্রাইভেট কার যোগে যাত্রীবেশে লোক উঠায়। এরপর ভয়-ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে মোবাইল, টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার জোরপূর্বক ছিনতাই করে নিয়া ফাঁকা জায়গায় ফেলিয়া রেখে চলে যায়। ঘটনার তারিখ ও সময় ছিনতাইকারীরা ভিকটিমকে চন্দ্রা চৌরাস্তার মোড় হতে যাত্রী বেশে ০১ টি সাদা রংয়ের X- Corolla প্রাইভেট কারে উঠিয়ে মির্জাপুরের দিকে অগ্রসর হয়। পথিমধ্যে মোবাইল ও টাকা-পয়সা জোর-পূর্বক ছিনাইয়া নেয়ার চেষ্টা করলে ভিকটিম বাধা প্রদান করে। এসময় ভিকটিমের সাথে ছিনতাইকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। ছিনতাইকারীরা ভিকটিমের চোখ-মুখ ও হাত গামছা দিয়া বেধে ফেলে। নাকে মুখে কিল-ঘুষি মারে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ভিকটিমের আঘাতে একজন ছিনতাইকারী সামান্য আহত হয়। অতঃপর আরেকটি গামছা দিয়া ছিনতাইকারীরা ভিকটিমের গলায় ফাঁস দেয়। কিছুক্ষণ এর মধ্যে সে নিস্তেজ হইয়া পড়ে মারা যায়। পরবর্তীতে তারা মির্জাপুর থানা এলাকার বেঙ্গল ফ্যাক্টরির গেইটের পশ্চিম পাশে ফাঁকা জায়গায় মহাসড়কের ঢালে ভিকটিমের মরদেহটি ফেলে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মামলার ঘটনার সহিত জড়িত অপর আসামী মামুন (৩২)-কে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং ঘটনার কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত তিনজন আসামি গতসময় এবং আজ বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবান্দবন্দি প্রদান করেছে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে আটক আছে। পুলিশ সুপার টাঙ্গাইলের নির্দেশে তদন্তকারী অফিসারকে জেলা ডিবি(দক্ষিণ) এর ইনচার্জ জনাব শ্যামল কুমার দত্ত পিপিএম, এএসআই/মোঃ শামসুজ্জামান পিপিএম, কং/ মোঃ মেহেরুল ইসলাম, কং/ শাহিবুল ইসলাম ও কং/ মোঃ জামাল-গণ মামলাটি তদন্তে সার্বক্ষণিক সহায়তা করেন।

সম্পূর্ণ ক্লু-লেস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। ভিকটিমের পরিবারসহ সুধীজন সাধুবাদ জানিয়েছেন পুলিশের তদন্তে। ধন্যবাদ তদন্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে।

হাফিজুর রহমান
উপ-পুলিশ পরিদর্শক
ঢাকা রেঞ্জ মিডিয়া
বাংলাদেশ পুলিশ

]]>
https://www.sattersangbad24.com/archives/2082/feed 0