Warning: Creating default object from empty value in /home/sattersangbad24/public_html/wp-content/themes/ProfessionalNews/lib/ReduxCore/inc/class.redux_filesystem.php on line 29
বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে স্বায়ত্তশাসন ও অভিন্ন নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে স্বায়ত্তশাসন ও অভিন্ন নীতিমালা – Satter Sangbad
সংবাদ শিরোনাম :
সাভারে গনসংযোগ করলেন জামায়াতের নেতা মো:আবুল বাশার সাভার উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক সংগঠনের উদ্যােগে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বিরতির আহবানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সাভার পৌর ছাত্রদলের উদ্যোগে রেডিওকলোনী এলাকায় গরীব-দুঃখী,সাধারন মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রিক বিতরন সাভার উপজেলা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে ইফতার দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সাভারসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা সাভার ইসলামীয়া ডিজিটাল ল্যাব এন্ড হসপিটালের এমডির সাভার প্রেসক্লাবের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সাভার পৌর মেয়র পদপ্রার্থী খোরশেদ আলম ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন.. সাভার পৌর ১ নং ওয়ার্ডর কাউন্সিলর পদপ্রার্থী চম্পক ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন.. সাভারে নদী পাড়ের শাখায় অবৈধ বালুর গদি গুঁড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ট্রাকে টিসিবির পণ্য  বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলো 
বিজ্ঞপ্তি প্রচারঃ
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন সাভার পৌর মেয়র প্রার্থী জনপ্রিয় সাবেক কাউন্সিল খোরশেদ আলম সাভার পৌর বাংলাদেশ জাতীয়বাদী শ্রমিকদলের সিনিয়র সভাপতি মো: দেলোয়ার হোসেনের পক্ষে রমজান ও ঈদের শুভেচ্ছা!!! সাভার পৌর কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মোল্লা এর পক্ষে রমজান ও ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন… সাভার পৌর সেচ্ছাসেবক দলের পক্ষে পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা .. সাভার পৌর এলাকার শীর্ষ স্থানীয় প্রেসিডেন্সি স্কুলের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস,রমজান,ঈদের শুভেচ্ছা  সৈনিকদলের সভাপতি মো:আব্দুল্লাহ আল মামুন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন… সাভার পৌর ৮ নং ওয়ার্ডর কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মেহেদী হাসান ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন.. ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে ভাগ্য উন্নয়ন শ্রমজীবি সমবায় সমিতি লি: এর পক্ষে শুভেচ্ছা সাভারসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা সাভার ইসলামীয়া ডিজিটাল ল্যাব এন্ড হসপিটালের এমডির

বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে স্বায়ত্তশাসন ও অভিন্ন নীতিমালা

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৩৯২ বার পঠিত
  • লেখকঃ ড. মোঃ শামসুদ্দীন ইলিয়াস

দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী ও চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা এবং শিক্ষালব্ধ জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ করে আর্থ-সামাজিক সমস্যাসমূহ সমাধানের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং ‘বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করেছে এবং আরও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অন্যদিকে ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সীমাহীন দুর্ভোগ লাঘবের জন্য একই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা প্রবর্তনের চেষ্টা চলছে। যদিও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তা বাস্তব রূপ লাভ করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ বিশ্বাস করতে চায় যে, শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি/পদোন্নয়নের জন্য অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে ইউজিসি নিশ্চয়ই শিক্ষার দর্শন তথা সরকারের শিক্ষাবিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শর্তাবলী নির্ধারণ করবে। তবে এক্ষেত্রে সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাবের মধ্যে পার্থক্য থাকা সমীচীন নয়। কারণ সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা বিবেচনায় নিয়ে; অন্যদিকে শিক্ষক সমাজের নিরলস প্রচেষ্টা এবং সরকারের দিক থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতার ফলে নীতিমালার সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে নবেম্বর মাসে বঙ্গবন্ধু যে বেতার ভাষণ দিয়েছিলেন তাতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে- ‘সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চাইতে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না … জাতীয় উৎপাদনের শতকরা কমপক্ষে ৪ ভাগ সম্পদ শিক্ষা খাতে ব্যয় হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। কলেজ ও স্কুল শিক্ষকদের বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে হবে… দ্রুত মেডিক্যাল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়সহ নয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র প্রণয়নের প্রাক্কালে, ১৯৭২ সালে, শাসনতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য কেমন হবে সে আলোচনায় শিক্ষা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘আমাদের সমাজের মৌলিক প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের সর্বাধিক উন্নতি সম্ভব করে তোলাই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। এই প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য অনেক বেশি সম্পদ বরাদ্দের প্রয়োজন। মোট জাতীয় উৎপাদনের শতকরা চারভাগ এই খাতে নিয়োজিত করতে হবে। এই অধিক বরাদ্দ থেকে গৃহাদি নির্মাণ বাবদ অপেক্ষাকৃত কম খরচ করে শিক্ষকদের বেতনের স্কেল বাড়ানোর জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে।’ উক্ত আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষকতা পেশা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু আরও বলেন- ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করা এবং মেধার ভিত্তিতে সকল শ্রেণীর জনসাধারণের জন্য শিক্ষার পথ খুলে দেয়া হবে। মেধাবী ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষা লাভের পথে দারিদ্র্য যেন বাধা হতে না পারে তার ব্যবস্থা করা হবে… শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা হবে। আমাদের দেশের শিক্ষিত সমাজের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা যাতে শিক্ষকতা পেশার প্রতি আকৃষ্ট হন সেই পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সব রকম চেষ্টা করা হবে। এ জন্য কেবল তাঁদের বেতনের স্কেল বৃদ্ধি ও বৈষয়িক সুবিধা দিলেই চলবে না; সঙ্গে সঙ্গে কাজ করার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের ন্যায্য মর্যাদা এবং সম্মানও দিতে হবে।’ যথোপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং কার্যকর শিক্ষা ছাড়া আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়- এই উপলব্ধি থেকেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর পরই ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই ড. কুদরত-ই-খুদার নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন গঠন করেন এবং ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা কমিশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে বলেন যে- ‘বর্তমান শিক্ষার নানাবিধ অভাব ও ত্রুটি-বিচ্যুতি দূরীকরণ, শিক্ষার মাধ্যমে সুষ্ঠু জাতি গঠনের নির্দেশ দান এবং দেশকে আধুনিক জ্ঞান ও কর্মশক্তিতে বলীয়ান করার পথ নির্দেশের উদ্দেশেই সরকার এই কমিশন নিয়োগ করিয়াছেন।’ উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে ড. কুদরত-ই-খুদা কমিশনের সুপারিশমালায় বলা হয় যে, উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য হবে- ১. এমন একটি শিক্ষিত গোষ্ঠী তৈরি করা- যাদের কর্মানুরাগ, জ্ঞানস্পৃহা, চিন্তার স্বাধীনতা, ন্যায়বোধ ও মানবিক মূল্যবোধ সম্যক বিকশিত হয়েছে; ২. গবেষণার মাধ্যমে জ্ঞানের নবদিগন্ত উন্মোচন করা; এবং ৩. সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যাবলীর বিশ্লেষণ ও সমাধানের পন্থা নির্দেশ করা। এই ভূমিকা কার্যকরভাবে পালনে সক্ষম একজন উচ্চশিক্ষিত ও উচ্চাকাক্সক্ষী ব্যক্তি সৃষ্টি করা। সুপারিশমালায় শিক্ষাক্ষেত্রে মোট জাতীয় আয়ের শতকরা পাঁচভাগ বরাদ্দ এবং যত স্বল্প সময়ে সম্ভব তা শতকরা সাতভাগে উন্নীত করার কথা উল্লেখ করা হয়। অথচ শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ খুদা কমিশনের সুপারিশের চেয়ে অনেক অনেক কম, এমনকি বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত ও নির্দেশিত মাত্রার অর্ধেকও নয়। বঙ্গবন্ধু মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্যই শিক্ষকের ন্যায্য সম্মান ও মর্যাদা, উচ্চতর বেতন স্কেল এবং বৈষয়িক সুবিধাদির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনচিন্তা এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির ওপর জোর দিয়েছিলেন; তিনি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্বায়ত্তশাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যেন শিক্ষকগণ স্বাধীনভাবে গবেষণাকার্য পরিচালনা, জ্ঞান অন্বেষণ, জ্ঞানের বিস্তরণ ও মুক্তবুদ্ধি চর্চায় ব্যাপৃত হতে পারেন। আর এজন্যই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সকল ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রায়ন নিশ্চিতকরণের পদক্ষেপও গ্রহণ করেছিলেন।

শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি নীতিগতভাবে একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। প্রকৃতপক্ষে যে উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্বায়ত্তশাসনের ওপর বঙ্গবন্ধু জোর দিয়েছিলেন তার সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের সম্পর্ক কতটুকু? শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বতন্ত্র বা অভিন্ন হলেই কি তা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্বায়ত্তশাসনের ওপর আঘাত হিসেবে গণ্য হবে? তাহলে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা নিয়োগ বিধিমালা বজায় থাকা, এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে থাকা এবং নিজেদের পছন্দ মতো নিয়োগ দিতে পারা মানেই কি স্বায়ত্তশাসন? সরকারী স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য অভিন্ন বিধিমালা রয়েছে। যার ফলে নিয়োগকৃত শিক্ষকগণ একটা নির্দিষ্ট মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়েই শিক্ষকতা পেশায় ঢুকছে। এমনকি একই ধরনের কার্যসম্পাদনকারী বিভিন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য অভিন্ন বিধিমালা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চতর পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রচলিত নামসর্বস্ব মৌখিক পরীক্ষা পদ্ধতি গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ ও হাস্যকর করে ফেলছে না তো? মাত্র ১০-১৫ মিনিটের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবী, দক্ষ ও কার্যকর শিক্ষক নির্বাচন করা সম্ভব কি? মৌখিক পরীক্ষা পদ্ধতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে অধিকতর যোগ্য প্রার্থীদের ডিঙিয়ে তুলনামূলকভাবে কম মেধাবী এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক হওয়ার অযোগ্য প্রার্থীরাও নির্বাচিত হচ্ছেন না বা হবেন না তার নিশ্চয়তা কোথায়? আবার মেধাক্রম অনুযায়ী উপর থেকে দু-তিন জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে নিয়োগ দিলেই যে তাঁরা কার্যকর ভাল শিক্ষক হবেন, তার নিশ্চয়তা দেয়া যায় কি? তাছাড়া মেধাক্রমের উপরের দিকে স্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে কখনই শিক্ষকদের একক বা যৌথ প্রভাব কাজ করে না- একথা জোর দিয়ে বলা যাবে কি? তাহলে এমন নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কি সত্যিকার অর্থে প্রভাবমুক্ত বলা যাবে? বহিঃবিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ই তো অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। সামঞ্জস্য বিধানের লক্ষ্যে সরকার এখন জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসিতেও সিজিপিএ ৫ থেকে কমিয়ে ৪-এ নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে। বিষয়টি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

প্রত্যেক ব্যক্তিরই ভিন্নমত পোষণ করার ব্যক্তিগত ও আইনসিদ্ধ অধিকার রয়েছে। তাই অভিন্ন নীতিমালা বিষয়ে ভিন্নমত পোষণকারী শিক্ষকবৃন্দের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেই বলতে চাই- শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কি তাহলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নিরপেক্ষতা, অবাধ প্রতিযোগিতা এবং সর্বোপরি আদর্শমানের কোন স্থান নেই? বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োজিত আছেন এমন ব্যক্তিবর্গের নিকট আত্মীয়, ছেলে, মেয়ে, স্বামী, স্ত্রী, ভাই-বোন কি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাননি বা পাচ্ছেন না? তাদের যোগ্যতার প্রতি সন্দেহ প্রকাশ না করেই যুক্তির খাতিরে যদি প্রশ্ন করা হয়- নিকট আত্মীয় নিয়োগপ্রাপ্তরা একটি অভিন্ন ও আদর্শমান উত্তীর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়ার অভাবে প্রচলিত মৌখিক পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং নিজেদের যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রতি কি অসম্মান প্রদর্শন করছেন না? প্রস্তাবিত অভিন্ন নীতিমালা তো ভবিষ্যতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে; তাহলে যারা এখন নিয়োজিত আছেন এই নীতিমালা তাদেরকে কীভাবে প্রভাবিত করবে? আর পদোন্নতি/পদোন্নয়নের জন্য নীতিমালা তো রয়েছেই- সেটাকে শুধু অভিন্ন ও আদর্শমানে উন্নীতকরণের বিষয়। শিক্ষকদের মর্যাদা বাড়ানো এবং সম্মান রক্ষার স্বার্থেই এটা প্রয়োজন।

শিক্ষাব্যবস্থাকে গণমুখী এবং শিক্ষাকে মানসম্পন্ন করার তাগিদ থেকেই বঙ্গবন্ধু শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। ১৯৭২ সালের ২৫ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের এক সভায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘গণমুখী শিক্ষা করতে গেলে প্ল্যান-প্রোগ্রাম অনুযায়ী হওয়া প্রয়োজন এবং এজন্যই কমিশন করা হয়েছে এবং কমিশনে এর মধ্যে আপনারা দেখতে পাইতেছেন যে, আমাদের কোন দলমত নেই। যারা উপযুক্ত তাদেরকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত করতেছি। ….যার সম্বন্ধে কোন কোয়েশ্চন নেই- তাদেরকে আমরা বসাবার চেষ্টা করতেছি। যাতে তাঁরা পরিবর্তন আনতে পারে। সব জায়গাতে রাজনীতি আছে। এর মধ্যে আমি রাজনীতি আনতে চাই না। এ সেক্টরে রাজনীতি না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।’ শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থেই বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের মর্ম উপলব্ধি করা প্রয়োজন।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত ও আরাধ্য পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তিনিও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকে বিশ্বমানে উন্নীত করতে চান। আর এ জন্যই তিনি প্রয়োজনে বিদেশ থেকে শিক্ষক আনার কথা উল্লেখ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে চাই শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের স্বার্থে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক খ-কালীন বা চুক্তি ভিত্তিতে আনা যেতেই পারে। তবে, তার আগে প্রয়োজন এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, নিরপেক্ষতা, অবাধ প্রতিযোগিতা এবং ব্যক্তিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি আদর্শমান উত্তীর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিশ্চয়তা বিধান।

অধ্যাপক ড. মোঃ শামসুদ্দীন ইলিয়াস
, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

Developed By BanglaHost