Warning: Creating default object from empty value in /home/sattersangbad24/public_html/wp-content/themes/ProfessionalNews/lib/ReduxCore/inc/class.redux_filesystem.php on line 29
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে যুদ্ধাহত পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা সাহায্যার্থে ভেলরি টেইলর বাংলাদেশে উজ্জল দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে যুদ্ধাহত পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা সাহায্যার্থে ভেলরি টেইলর বাংলাদেশে উজ্জল দৃষ্টান্ত – Satter Sangbad
সংবাদ শিরোনাম :
সাভারে গনসংযোগ করলেন জামায়াতের নেতা মো:আবুল বাশার সাভার উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক সংগঠনের উদ্যােগে ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বিরতির আহবানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সাভার পৌর ছাত্রদলের উদ্যোগে রেডিওকলোনী এলাকায় গরীব-দুঃখী,সাধারন মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রিক বিতরন সাভার উপজেলা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে ইফতার দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সাভারসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা সাভার ইসলামীয়া ডিজিটাল ল্যাব এন্ড হসপিটালের এমডির সাভার প্রেসক্লাবের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সাভার পৌর মেয়র পদপ্রার্থী খোরশেদ আলম ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন.. সাভার পৌর ১ নং ওয়ার্ডর কাউন্সিলর পদপ্রার্থী চম্পক ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন.. সাভারে নদী পাড়ের শাখায় অবৈধ বালুর গদি গুঁড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ট্রাকে টিসিবির পণ্য  বিক্রি কার্যক্রম শুরু হলো 
বিজ্ঞপ্তি প্রচারঃ
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন সাভার পৌর মেয়র প্রার্থী জনপ্রিয় সাবেক কাউন্সিল খোরশেদ আলম সাভার পৌর বাংলাদেশ জাতীয়বাদী শ্রমিকদলের সিনিয়র সভাপতি মো: দেলোয়ার হোসেনের পক্ষে রমজান ও ঈদের শুভেচ্ছা!!! সাভার পৌর কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মোল্লা এর পক্ষে রমজান ও ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন… সাভার পৌর সেচ্ছাসেবক দলের পক্ষে পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা .. সাভার পৌর এলাকার শীর্ষ স্থানীয় প্রেসিডেন্সি স্কুলের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস,রমজান,ঈদের শুভেচ্ছা  সৈনিকদলের সভাপতি মো:আব্দুল্লাহ আল মামুন ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন… সাভার পৌর ৮ নং ওয়ার্ডর কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মেহেদী হাসান ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র রমজান এবং অগ্রীম ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন.. ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে ভাগ্য উন্নয়ন শ্রমজীবি সমবায় সমিতি লি: এর পক্ষে শুভেচ্ছা সাভারসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা সাভার ইসলামীয়া ডিজিটাল ল্যাব এন্ড হসপিটালের এমডির

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে যুদ্ধাহত পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা সাহায্যার্থে ভেলরি টেইলর বাংলাদেশে উজ্জল দৃষ্টান্ত

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৫২২ বার পঠিত

সত্যের সংবাদস্বাস্থ্যডেক্সঃ

পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র সিআরপি (সেন্টার ফর দ্যা রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্যা প্যারালাইজড) একটি ব্যতিক্রমী চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র। মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে মিস ভেলরি টেইলর প্রতিষ্ঠা করেন সিআরপি। ঢাকার অদূরে সাভারে ১৪ একর জমির উপর গড়ে তোলেন এর প্রধান কার্যালয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ সারা বাংলাদেশে সিআরপি’র মোট ১২টি সেন্টার রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী আমাদের দেশে শতকরা দশ ভাগ মানুষ কোনো না কোনো প্রতিবন্ধিতার শিকার। সড়ক দুর্ঘটনা, গাছ থেকে পড়ে যাওয়া, জন্মগত ত্রুটি, শিল্প কারখানার দুর্ঘটনা, স্পাইনাল কর্ডের আঘাত প্রভৃতি কারণে প্রতিদিনই পক্ষাঘাতগ্রস্ত হচ্ছে অনেক মানুষ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে এই পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে তাদের সারা জীবন কাটাতে হয়। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে পঙ্গুত্বের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সিআরপি এ ধরনের মানুষের চিকিৎসার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করে থাকে।

রিসার্চ, মেইন্টেইনিং এন্ড এভালুয়েশন অফিসার মাহমুদুল হাসান আল জামান জানান, সিআরপি আউটডোর ও ইনডোর এ দুই ধরণের সেবা দিয়ে থাকে। শুক্রবার ব্যতীত যে কোনোদিন মাত্র ৫০ টাকার বিনিময়ে আউটডোর বিভাগে রোগী দেখানো যায়। আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ জন নতুন ও ৩০০ জনের মত পুরাতন রোগী আসে। স্ট্রোক, প্যারালাইসিস, বাত ব্যথা জনিত, স্পোর্টস ইঞ্জুরিতে আক্রান্তরা সাধারণত চিকিৎসা নিতে আসে আউটডোরে। যেহেতু এক সেশনে এ ধরণের রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না তাই পরবর্তী সেশনগুলোর জন্য পুরাতন রোগীরা এসে থাকেন।

ফিজিওথেরাপির ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা, ২০০ টাকা নেওয়া হয়। এখানে যার যার মাসিক আয় গ্রেড অনুযায়ী চার্জ নেয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে গ্রেড এ-তে মাসিক যিনি ১০ হাজার টাকার বেশি আয় করেন সে ৪০০ টাকা এবং বি গ্রেডের যিনি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেন সে ২০০ থেকে ১০০ টাকা এবং এর নিচের রোগীর ক্ষেত্রে কোনো চার্জ নেয়া হয় না। মাসিক আয় যাচাই করেই সকল ধরণের চিকিৎসাখরচ নির্ধারণ করা হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে তা বিনামূল্য।

ইনডোরে ১০০ জনের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। শিশু ও প্রতিবন্ধী এবং মেরুরজ্জুতে আঘাতপ্রাপ্তদের চিকিৎসা করা হয় এখানে। মেডিকেল উইং, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ এন্ড ল্যাংগুয়েজ থেরাপিএই চার বিভাগে চিকিৎসা করা হয়।

এটি রিহ্যাব সেন্টার হওয়ায় ডাক্তারের চেয়ে থেরাপিস্টদের প্রাধান্য বেশি। এখানে ডাক্তার রয়েছে ১০ জন আর থেরাপিস্ট প্রায় ১০০ জন।

পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীকে তার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে স্বনির্ভর করে তুলতে অকুপেশনাল থেরাপির গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশে কেবল সিআরপিই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অকুপেশনাল থেরাপি সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে। যাদের কথা বলতে সমস্যা হয় তাদের জন্য বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা পদ্ধতির নাম হচ্ছে স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি। বাংলাদেশে সিআরপিই প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই থেরাপির ওপর স্নাতক ডিগ্রি প্রদান ও থেরাপি সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

সেরিব্রাল পলসি, কগনিশন ও অটিজমসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার শিশুদের চিকিৎসাসেবার জন্য এখানে রয়েছে শিশু বিভাগ। এ বিভাগের ইনচার্জ হোসনেআরা পারভীন জানান, এখানে শিশুদের ইনপেশেন্ট এবং আউটপেশেন্ট দু’ভাবেই সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। শিশুদের থেরাপি সেবা প্রদানের পাশাপাশি তাদের মায়েদের প্রশিক্ষণ ও নির্দেশনা দেয়া হয় যাতে তারা বাড়ি ফিরে তাদের শিশুদের এই সেবা অব্যাহত রাখতে পারে।

শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার শিশুদের দেহভঙ্গি সঠিক রাখা, শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখা ও সহজে দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে পারার লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠিত হয় স্পেশাল সিটিং চেয়ার বিভাগ। এই বিভাগের মাধ্যমেই বিশেষ বিশেষ প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি এই স্পেশাল সিটিং-এ লোহার এবং কাঠের তৈরি বিভিন্ন ধরনের চেয়ার তৈরি করা হয়ে থাকে। এই হাসপাতালে কোনো পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী আসলে রোগীর উপযোগী করে চেয়ার তৈরি করে দেয়া হয়।

পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীদের জন্য বিশেষ চেয়ার , সার্ভাইক্যাল পিলো, লাম্বাররোলসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়ক সামগ্রী তৈরি করা হয়। যাদের হাত, পা, আঙ্গুল নেই তাদের জন্য এখানে বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি করে দেয়া হয় এবং সংযোজন করে থাকে প্রস্থেটিক্স ও অর্থোটিক্স বিভাগ।

সিআরপি পুনর্বাসন সেবার অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করে থাকে। এ লক্ষ্যেই সিআরপির সাভার ও গণকবাড়ি কেন্দ্রে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। যেখানে বিনামূল্যে শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার ব্যক্তিদের নিজ নিজ শিক্ষা, দক্ষতা ও আগ্রহ অনুযায়ী সেলাই, ইলেকট্রনিক্স মেরামত, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন, দোকান ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারেও সহায়তা করে থাকে। ডোনার পাওয়া গেলে প্রশিক্ষন শেষে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।

সিআরপি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করে একীভূত স্কুল উইলিয়াম অ্যান্ড মেরি টেইলর স্কুল। জন্মগত বা অন্যান্য কারণে প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়ে সমাজ থেকে ছিটকে পড়া শিশুদের শিক্ষা ও সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা এ স্কুলের লক্ষ্য।

প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবী এসে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের বিনামূল্যে সেবা দিয়ে থাকেন। গুলশান হামলার আগে প্রতি মাসে এ সংখ্যা ছিল ২০-২৫ জন। বর্তমানে ৭ জন আছেন। যুক্তরাজ্য থেকে আগত জর্জিনা’র সাথে কথা হয়। তিনি ওখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিওথেরাপি নিয়ে পড়াশুনা করেছেন। এক বছর হল সিআরপিতে আছেন, চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বেশির ভাগ বিদেশী তবে কিছু দেশি সেচ্ছাসেবীও কাজ করে। স্বেচ্ছাসেবীদের সবাই বিশেষজ্ঞ নয়। যে যার সামর্থ্য মতো সেবা দিয়ে থাকেন। সারা বাংলাদেশে সবক’টি সেন্টার মিলে মোট স্টাফ ৯০৩ জন।

ক্রমান্বয়ে সিআরপি’র কলেবর বৃদ্ধি পেয়ে ঢাকার মিরপুর, সাভারের গনকবাড়ি, মানিকগঞ্জ এছাড়া পুরানো ঢাকার একটি পাইলট প্রজেক্টসহ ৮টি জেলার ৬১টি উপজেলায় সিআরপি’র সমাজভিত্তিক পুর্নবাসন কর্মসূচি চালু রয়েছে। সর্বস্তরের স্থানীয় প্রতিবন্ধীদের সহয়োগিতার লক্ষে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ১৩ জেলায় ১১৫টি উপজেলায় কার্যক্রম বিস্তৃত হয়েছে। মানব সেবার এক বিশেষ মাইলফলক সিআরপি। সমাজের অগনিত প্রতিবন্ধী ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের জীবন সাজাতে নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছে অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি।

সিআরপি’র কিছু লোকাল ও বিদেশী ডোনার আছে। বিদেশী দাতা সংস্থাগুলোকে ফ্রেন্ডস অব সিআরপি বলা হয়। কানাডা, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক এ সংস্থা গুলো ফান্ড জোগাড় করে সিআরপি কে সহযোগিতা করে। বাংলাদেশ সরকারও সাহায্য করে থাকে। অনেকে ব্যক্তিগত ডোনেশন যেমন যাকাতের টাকা দেয়। তবে ৬০% খরচের টাকা সিআরপি নিজে আয় করে। নিজস্ব একাডেমিক ইন্সটিটিউট ‘বিএইচপিআই’ (বাংলাদেশ হেলথ প্রফেশনস ইনস্টিটিউট) এ ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রি কোর্স চালু আছে। প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে বিএইচপিআই প্রতিষ্ঠা করে সিআরপি। এখানকার ছাত্রছাত্রীদের বেতন ও মিরপুর সেন্টারে যে নিজস্ব ভবন আছে তার ভাড়ার টাকা দিয়ে আয় হয়।

ভেলরি টেইলরঃ
জন্ম ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪ সালে, যুক্তরাজ্যের ব্রুসলিতে। ১৯৬৯ সালে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় ফিজিও থেরাপিস্ট হিসেবে স্বল্পকালীন চুক্তিতে প্রথম বাংলাদেশে আসেন। সে সময় এদেশে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও পুর্নবাসনের তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে চলে যান নিজ জন্মভূমিতে।

ভেলরি টেইলরঃ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে বিদেশী বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে আসার আহ্বান জানালে ১৯৭২ সালে ভেলরি ফিরে আসেন। ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে রোগীদের সেবা দিতে শুরু করেন। রোগীদের সেবার পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেন।
তিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন। মানুষকে ফিজিও থেরাপির কথা জানিয়েছেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এ ধরণের রোগীদের সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব না।

এক পর্যায়ে ১৯৭৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের একটি পরিত্যক্ত গোডাউনে মাত্র চারজন রোগী নিয়ে সিআরপি’র কাজ শুরু করেন। মানুষের সচেতনতা ও রোগীর সংখ্যা দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৮১ সালে ধানমন্ডির শংকরে বাড়ি ভাড়া করে সিআরপি’র কাজ চালানো হয়। এক পর্যায়ে ফার্মগেটের একটি ভাড়া বাড়িতেও কিছুদিন সিআরপি’র কাজ চলে।

অবশেষে ১৯৯০ সালে সাভারে ১৪ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা করা হয় সিআরপি’র প্রধান কার্যালয়। মিস ভেলরি টেইলরের অক্লান্ত পরিশ্রম, ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে সিআরপি আজ এক পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান। রয়েছে এক বিশাল দেশী-বিদেশী কর্মীবাহিনী, তাদের মেধা, শ্রম ও আন্তরিকতার ফলে প্রতিদিন সুস্থ হয়ে নিজ ঘরে ফিরছে মানুষ। সাভারে তার নামে রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে ‘ভেলরি টেলর রোড’।

মানবসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৫ সালে বৃটিশ সরকার এই নারীকে ‘অর্ডার অব দ্য বৃটিশ এম্পায়ার’ পদকে ভূষিত করে। ১৯৯৬ সালে তিনি আর্থার আয়ার সোনার পদক লাভ করে। স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করেন। ২০০৪ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতা পদক দেয়া হয় তাকে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অধিকাংশ মানুষ যেখানে তাদের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত সেখানে সিআরপি’র স্বল্প খরচ ও বিনামূল্যে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবাদান মানবসেবার বাংলাদেশে উজ্জল দৃষ্টান্ত।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

Developed By BanglaHost