Author: sattersangbad24

  • শায়েস্তাগঞ্জে রকেটের এস আর এজেন্টদের নিকট থেকে ২৪ লাখ টাকা নিয়া উধাও, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

    শায়েস্তাগঞ্জে রকেটের এস আর এজেন্টদের নিকট থেকে ২৪ লাখ টাকা নিয়া উধাও, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

    শায়েস্তাগঞ্জে রকেটের এস আর এজেন্টদের নিকট থেকে ২৪ লাখ টাকা নিয়া উধাও, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

    নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার রকেটের এস আর মোঃ রুবেল মিয়া রকেটের রিটেইলারদের কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা নিয়ে বুধবার সকাল থেকে নিখোঁজ।

    জানা যায়, গতকাল বুধবার শায়েস্তাগঞ্জের চরহামুদা গ্রামের সুঘর এলাকার লাল মিয়ার পুত্র রুবেল মিয়া (৩৪) দীর্ঘদিন যাবত রকেটের এস আর হিসেবে শায়েস্তাগঞ্জ, সুতাং, অলিপুর, শাহজীবাজার, গ্যাসফিল্ড এলাকায় কাজ করে আসছিল।

    মঙ্গলবার ৫ মার্চ সে অত্র এলাকার এজেন্টদের কাছ থেকে প্রায় ২৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করে লোড দিবে বলে নিয়ে এসে কাউকে এক টাকাও লোড দেয়নি বলে অভিযোগ হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০ টা থেকে তার নাম্বার ০১৭২৩-২১১৯৩৭ নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়, পরে নাম্বার বন্ধ পেলে সব এজেন্টরা ডিস্ট্রিবিউশন প্রোপাইটর শাকিল আহমেদের এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি এ বিষয়ে তিনি অবগত হন।

    পরে তার পক্ষে মেসার্স সারোয়ার আলম ট্রেডার্স এর ম্যানেজার সাদাত চকদার শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন যার নং-১৫৭/২০২০।

    এদিকে রুবেল মিয়ার পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, সে আজকে বুধবার রাতে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর একটি ফ্লাইটে সৌদি আরব যাওয়ার উদ্দেশ্যএ রওনা দিয়েছেন।

    এ ব্যাপারে সাদাত চকদার জানান, তাকে খোজার জন্য সবদিকে খোজ লাগানো হয়েছে, সে যেন বিদেশ না যেতে পারে, সেজন্য এয়ারপোর্টে জিডি কপি ও তার ছবি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

    এদিকে অনেক ব্যবসায়ীরা ই টাকা হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছেন। এ বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাহকদের মাঝে ও ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম হতাশা কাজ করছে।এ ব্যাপারে ডিস্ট্রিবিউটর শাকিল আহমেদ বলেন উনারও ১১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে রুবেলের কাছে, তাকে খোজে বের করা হলে সব রিটেইলারদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হবে।

  • সাভারে দেশীয় অস্ত্রসহ ১৩ জন আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সদ্যসদের আটক করেছে ডিবি পুলিশ

    সাভারে দেশীয় অস্ত্রসহ ১৩ জন আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সদ্যসদের আটক করেছে ডিবি পুলিশ

    সাভারে দেশীয় অস্ত্রসহ ১৩ জন আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সদ্যসদের আটক করেছে ডিবি পুলিশ

    শেখ এ কে আজাদ,সাভার থেকেঃ
    সাভারে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে দেশীয় অস্ত্রসহ ১৩ জন আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সদস্যকে অভিযান চালিয়ে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

    বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হেমায়েতপুর থেকে তাদেরকে আটক করে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

    ডিবি পুলিশ জানায় বৃহস্পতিবার ভোর রাতে হেমায়েতপুরের বিভিন্ন বাড়িতে পিকআপ ভ্যান নিয়ে ওই ১৩ ডাকাত সদস্য গরু ডাকাতি করতে যায় পরে গোপন সংবাদের ভিতিত্বে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রসহ ১৩ জন ডাকাতকে আটক করা হয়।
    আটক কৃত ডাকাতরা হলেন,আবুল হোসেন (৩০),মহি উদ্দিন (৪৫),রাজু মিয়া (৩০),সুরুজ মিয়া (৩৫),জালাল মাদবর (৫০),আবুল হোসেন ফকির (৪০),রাসেল শিকদার (২৮),আমজাদ হোসেন (৪৫),পাগল চন্দ্র মনিদাস (৫৫),আইয়ুব আলী (৪৪), সাদেক মিয়া (৪১),মনির হোসেন (৪৫),আবুল হোসেন ফকির (৪০), তাদের বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায়। দিনের বেলায় তারা সাভারের বিভিন্ন এলাকায় বাসা বাড়িতে ভাড়া থেকে রাতের বেলায় ডাকাতি করতে বের হতো। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি করা তিনটি গরু উদ্ধার করা হয়।
    আটক ডাকাত সদস্যরা শুধু বাসা বাড়িতে নয় বিভিন্ন চলন্ত গাড়িতেও ডাকাতি করতো বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধীক ডাকাতি মামলা রয়েছে।
    এবিষয়ে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির ওসি আবুল বাশার বলেন,আটক ডাকাতদের বিরুদ্ধে সকালে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করে দুপুরে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

  • সাভারের রানা প্লাজা দূর্ঘটনায় আহত এক শ্রমিককে নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে

    সাভারের রানা প্লাজা দূর্ঘটনায় আহত এক শ্রমিককে নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে

    সাভারের রানা প্লাজা দূর্ঘটনায় আহত এক শ্রমিককে নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে

    • ডেক্স সংবাদঃ

    সাভারে তুচ্ছ ঘটনার জেরে আকাশ হোসেন পান্নু (৩০) নামে সাভারের রানা প্লাজা দূর্ঘটনায় আহত এক শ্রমিককে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মচারীর বিরুদ্ধে। পরে মারধরের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এঘটনা ঘটে।
    ভুক্তভোগী আকাশ হোসেন মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানাধীন আমতলী গ্রামের মোঃ বারেক হোসেনের ছেলে। তিনি বর্তমানে পরিবার নিয়ে সাভারের পৌর এলাকা গেন্ডায় বসবাস করার পাশাপাশি ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
    আকাশকে মারধরের বিষয়টি হাসপাতাল সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্র জানায় ঘটনার দিন রাত ৮:১৫ মিনিটে ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
    স্থানীয়দের অভিযোগ, এঘটনার আগে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান নিজেই গাড়ি নিয়ে সাভার গেন্ডা বাসস্টান্ড এলাকায় ভুক্তভোগী যুবককে খুঁজতে গিয়ে সেখানে উপস্থিত একজন আইনজীবিসহ দুই বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে লাঞ্চিত করেন।
    স্থানীয় বাসিন্দা এডভোকেট মোঃ ইসমাইল হোসেন জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কয়েকজন লেবার তাদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য গেন্ডা স্টান্ডে অপেক্ষা করছিলো। এসময় ত্রানের পণ্যবাহী একটি পিকআপ ইউটার্ন নেওয়ার সময় সেখানে অপেক্ষারত এক নারীকে ধাক্কা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ নারী তাৎক্ষনীক এর প্রতিবাদ করলে পিকআপ চালক উত্তেজিত হয়ে ওই নারীকে মারধরের চেষ্টা করে। চালকের এমন আচরনে পথচারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এঘটনার কিছু সময় পর সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ পারভেজুর রহমান তার ব্যবহৃত সারকারী গাড়িসহ ঘটনাস্থলে আসে এবং পথচারীসহ ওই নারী ও লেবারদের খোঁজ করেন। এসময় বিষয়টি আমি অবগত নই জানালে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমার শার্টের কলার চেপে ধরে জোর করে আমাকেসহ হাবিবুর রহমান (৬৫) নামে আরেক ব্যক্তিকে তার গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। পরে সেই পিকআপ চালক ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই জানালে তিনি আমাদের ছেড়ে দেন।
    স্থানীয় ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, ”ইউএনও পারভেজুর রহমান ঘটনাস্থল ত্যাগ করার কিছু সময় পর আবারও ইউএনও অফিসের গাড়ি চালক, অফিস সহকারী হানিফসহ অন্তত ৮-১০ জন জোরপূর্বক ভুক্তভোগী যুবক আকাশ হোসেন পান্নুকে বেধরক মারধর করতে করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভিতরে ধরে নিয়ে যায়। মারধরের এক পর্যায়ে আকাশ অচেতন হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যদেরকে খবর দেয়া হয়। এসময় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।”
    তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ পারভেজুর রহমান দাবি করেন, যুবককে মারধরের মত কোন ঘটনা তার জানা নেই। কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া তিনি কাউকে লাঞ্চিত করেননি বলেও দাবি করে তিনি বলেন, ”ঘটনার দিন গেন্ডা স্টান্ডের পাশে কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে যা ইতিপূর্বে উচ্ছেদ করা হয়েছিলো, সেইসব অবৈধ স্থাপনা সড়িয়ে দিতে নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে সেসময় কাউকে লাঞ্চিত করা হয়নি।”
    ভুক্তভোগী আকাশ মারধরের বিষয়টি প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করলেও যারা তাকে মারধর করেছে তাদের চিনতে পারেননি বলে জানান। পরিবারের দাবি রানা প্লাজা ধ্বসে মাথায় আঘাত পাওয়ায় আকাশ কোন কিছু মনে রাখতে পারে না।
    ঢাকা জেলা প্রশাসক মোঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বলেন, রানা প্লাজায় আহত শ্রমিককে মারধরের অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে।
    উল্লেখ্য, আকাশ হোসেন পান্নু সাভারের রানা প্লাজায় ৪র্থ তলার একটি পোশাক কারখানার ফিনিশিং সেকশনে কর্মরত ছিলো। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেচে ফিরলেও ওই ঘটনায় মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত পান তিনি। এর পর থেকে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন আকাশ।

  • আশুলিয়ায় একটি শ্রমিক কলোনীর অগ্নিকান্ড,নিয়ন্ত্রণে করেছে ফায়ার সার্ভিস

    আশুলিয়ায় একটি শ্রমিক কলোনীর অগ্নিকান্ড,নিয়ন্ত্রণে করেছে ফায়ার সার্ভিস

    আশুলিয়ায় একটি শ্রমিক কলোনীর অগ্নিকান্ড,নিয়ন্ত্রণে করেছে ফায়ার সার্ভিস

    আশুলিয়ায় একটি শ্রমিক কলোনীর অগ্নিকান্ডে ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।

    বুধবার রাত ১০ টার দিকে আশুলিয়ার উত্তর গাজিরচট বুড়ির বাজার এলাকার তারা মেম্বারের মালিকানাধীন বাড়িতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

    এ ব্যাপারে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, খবর পেয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় কি পরিমাণ ক্ষয় ক্ষতির হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে আনুমানিক ৫-৬টি রুম পুরে গেছে।
    তিনি আরো বলেন, কি কারণে আগুনের সূত্রপাত তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি বৈদ্যতিক শার্টসার্কিট থেকে সূত্রপাত হতে পারে।

  • নিম দিয়ে করুন রোগ নিরাময়

    নিম দিয়ে করুন রোগ নিরাময়

    নিম দিয়ে করুন রোগ নিরাময়
    লেখকঃবকুল হাসান খাঁন

    নিম গাছ আমরা সবাই চিনি। এটি হলো দেশী নিম, যা থেকে কীটনাশক তৈরি করা যায়। অন্য আরেক ধরনের নিম রয়েছে, যাকে বলে ঘোড়া নিম। দেশী নিমের উদ্ভিদতাত্তি¡ক নাম ঝুধফরৎধপযঃধ রহফরপধ ও মহানিম বা ঘোড়া নিমের উদ্ভিদতাত্তি¡ক নাম গবষরধ ধুধফরৎধপযঃধ। উভয় নিমই মেলিয়েসি পরিবারভুক্ত। নিম চিরসবুজ বৃক্ষ প্রকৃতির গাছ। পাতা যৌগিক, পত্রফলকের কিনারা করাতের মতো খাঁজকাটা ও কাস্তের মতো বাঁকানো। পাতার আগা সুচাল। বর্ষার শুরুতে ফল পাকে। ফল ছোট, ডিম্বাকার, থোকায় ধরে। নিমের পতঙ্গবিনাশী গুণ থাকায় বর্তমানে এর বিভিন্ন অংশ থেকে তৈরি করা হচ্ছে নানা ধরনের কীটনাশক, যা উপকারী বিভিন্ন কীটপতঙ্গের জন্য কম ক্ষতিকর। নিম গাছের অংশেরই রয়েছে কম-বেশি পতঙ্গ দমনের ক্ষমতা। তবে বীজে তেল তথা কার্যকর উপাদান বেশি থাকায় বীজ পোকামাকড় দমনে অধিক কার্যকর। নিমের এ পতঙ্গবিনাশী প্রাকৃতিক গুণ দিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক প্রজাতির বিভিন্ন ফসল নষ্টকারী কীটপতঙ্গ দমন করা সম্ভব বলে জানা গেছে। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে নিম থেকে নানা রকম কীটনামক তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। এ দেশের বাজারে এখন পাওয়া যাচ্ছে নিম্বিসিডিন।
    নিম পাতার নির্যাস: এ নির্যাস তৈরি করতে হলে ৬ লিটার পরিমাণ পরিষ্কার পানিতে প্রথমে ৫ কেজি কাঁচা নিমপাতা ৫-৬ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ভেজানো পাতা কুচিকুচি করে কেটে পিষে/বেটে মলমের মতো করতে হবে। তারপর তা পরিমাণ মতো পানিতে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। ঠাণ্ডার পর পাতলা কাপড় বা ছাকনি দিয়ে ভালো করে ছেঁকে তার মধ্যে ১৫০ গ্রাম গুঁড়া সাবান/ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে মেশাতে হবে। এ পরিমাণ মিশ্রণ করে ৬০ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে ফসলের ক্ষেতে ছিটাতে বা ¯েপ্র করতে হবে। এটি ছোট লেদাপোকা দমনেও কার্যকর।
    নিমপাতা গুঁড়া: এ ধরনের কীটনাশক তৈরি করতে হলে কাঁচা নিমপাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ছায়ায় বিছিয়ে ২ সপ্তাহ শুকাতে হবে। এরপর শুকনা পাতা ভালো করে গুঁড়া করলেই সহজে এ ধরনের কীটনাশক তৈরি হবে। এটি দীর্র্ঘদিন ঘরে রেখেও ব্যবহার করা যায়। তবে এর সংরক্ষণ মেয়াদ বাড়াতে হলে সমপরিমাণ ধুতরাপাতা একই নিয়মে গুঁড়া করে মিশিয়ে রাখতে হবে। এ গুঁড়া বিভিন্ন ধরনের গুদামজাত শস্যের পোকা দমনে বেশ কার্যকর।
    নিম বীজের গুঁড়া: এ জন্য কাঁচা নিম বীজ সংগ্রহ করে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে খোসা ছাড়িয়ে ছায়ায় সপ্তাহখানেক শুকিয়ে নিতে হবে। শুকিয়ে গেলে তা ভেঙে শাঁস বের করে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে মিহি করতে হবে। এ গুঁড়া কাচের বয়ম বা বোতলে সংরক্ষণ করলে ভবিষ্যতেও ব্যবহার করা যায়।
    নিম শাঁসের নির্যাস: তিন উপায়ে নিম বীজের শাঁস থেকে এ নির্যাস তৈরি করা যায়। ক. ১ কেজি নিম বীজ সংগ্রহ করে তা ধুয়ে পরিষ্কার করে কয়েকদিন (৭-১০দিন) ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর বীজের খোসা ভেঙে ভেতরের শাঁস বের করে তা পিষে মলমের মতো করতে হবে। এ মলম ৭৫ মিলিলিটার ডিটারজেন্ট/৭৫ গ্রাম গুঁড়া সাবানের সঙ্গে মিশিয়ে তাতে ১০০ লিটারপানি যোগ করতে হবে। ভালোভাবে মেশানোর পর সেভাবে এক রাত রেখে দিতে হবে। পরদিন সকালে ছেঁকে ¯েপ্র করতে হবে। এটি হবে ১% দ্রবণ। ঘনত্ব বাড়াতে হলে যেভাবে বীজ নিতে হবে। যেমন- ২% দ্রবণ তৈরি করতে হলে ২ কেজি বীজ নিতে হবে; কিন্তু পানির পরিমাণ থাকবে একই। খ. নিম বীজের শাঁস বেটে যে মলম পাওয়া যায় তার ১ কেজি ৫ লিটার পানি অথবা ৫ লিটার গো-মূত্রের সঙ্গে মিশিয়ে এক রাত রেখে দিতে হবে। পরে ৭০-৮০ ডিগ্রিসেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২-৩ ঘন্টা ফুটিয়ে নামাতে হবে। এ সময় দ্রবণের রঙ কালো হয়ে যাবে। তখন ঠাণ্ডা করতে হবে। পরে পাতলা কাপড় বা গামছা দিয়ে ছেঁকে কাচের বোতলে রেখে দিলে ভবিষ্যতে প্রয়োজন মতো ব্যবহার করা যায়। ব্যবহারের সময় ১% দ্রবণ তৈরি করতে হলে ৯৫ লিটার এবং ২% দ্রবণ করতে হলে ৪৭.৫ লিটার পানি মেশাতে হবে। এ দ্রবণ তখন সরাসরি জমিতে ¯েপ্র করার উপযোগী হয়। গ. নিম বীজের শাঁস বাটা মলম ১ কেজি কেরোসিন তেলে এক রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে তা ছেঁকে প্রয়োজনমতো পানি মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
    নিমের তেল: কাঁচা নিম শাঁস বেটে/পিষে পাওয়া যায় নিম শাঁসের নির্যাস আর ভালোভাবে রোদে শুকনো বীজ বাদামের মতো ঘানিতে পিষে বের করা যায় নিমের তেল। এভাবে ৩ লিটার নিম তেল সরাসরি ২০০ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে ¯েপ্র করার উপযোগী ১.৫% দ্রবণ তৈরি করা যায়। তবে পানির সঙ্গে তেলকে ভালোভাবে মেমানোর জন্য ২০০ মিলিলিটার তরল সাবান/শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
    নিমের খৈল: বীজ থেকে তেল বের করার পর যা পাওয়া যায় তাই খৈল। এ খৈল চূর্ণ সরাসরি জমির মাটিতে ছিটিয়ে ব্যবহার করা যায়। নিম খৈলের জলীয় দ্রবণ: এ জন্য ১০ কেজি নিম খৈল ১০০ লিটার পানিতে এক রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ছেঁকে নিয়ে তা ¯েপ্র করে ফসলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।
    যেসব বালাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়: অনেক ধরনের বালাই নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নিমের আছে। ফসলের ক্ষতিকর অন্তত ১০০ প্রজাতির পোকামাকড় ও কৃমি নিম দমন করতে পারে। এদের মধ্যে অন্যতম হলো- তুলার ফল ছিদ্রকারী পোকা, জাব পোকা, ধানের বাদামি গাছ ফড়িং, কপির সরুই পোকা, কপির লেদা পোকা, পঙ্গপাল, কাটুই পোকা, ধানের শীর্ষ কাটা লেদা পোকা, ফ্লি বিটিল, ধানের সবুজ পাতা ফড়িং, পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা, লাল মাকড়, ধানের মাজরা পোকা, সাদা মাছি, ধানের সাদা পিঠ গাছ ফড়িং, ধানের শুষড়ি পোকা, খাপড়া বিটিল ইত্যাদি। ঘোড়া নিম বা পাহাড়ি নিমের পোকা তাড়ানোর ক্ষমতাও বেশ। এ জন্য ১৫০ গ্রাম কাঁচা পাতা বেঁটে বা ৫০ গ্রাম শুকনো পাতা গুঁড়া করে ১ লিটার ঠাণ্ডা পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে সে পানি ছেঁকে ¯েপ্র করলে ঘাস ফড়িংয়ের মতো পোকাও বিতাড়িত হয়। তবে নিমের কার্য ক্ষমতা বহুমুখী। নিম শুধু পোকাই তাড়ায় না, এর ক্রিয়ায় অনেক পোকার খাওয়া ও ডিম পাড়া, খোলস বদলানো ও বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সেসব পোকা আর বংশ বাড়াতে পারে না। এতে ক্ষতি কমে যায়। এমনকি এর ছোঁয়ায় এসে অনেক পোকা নিস্তেজ হয়ে পড়ে বা মারা যায়।

  • কৃষি দিয়েই দূর করুন দারিদ্রতাকে

    কৃষি দিয়েই দূর করুন দারিদ্রতাকে

    কৃষি দিয়েই দূর করুন দারিদ্রতাকে

    লেখকঃ বকুল হাসান খান
    গ্রাম অথবা শহর, সেখানেই বসবাস করিনা কেন, আমাদের বসত বাড়ির আশে পাশে বা বাড়ির আঙ্গিনায় যদি অল্প খালি জায়গা থাকে, এবং সেখানে আলো বাতাস চলাচল করে, তাহলে খুব সহজেই আমরা শাক সবজি চাষ এবং হাঁস-মুরগী পালনের মতো লাভজনক কাজ করে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাছাড়া পারিবারিক চাহিদা মেটানোর পর বাড়তি আয় দিয়ে পরিবারের স্বচ্ছলতা এবং ছেলে- মেয়েদের লেখাপাড়ার খরচ মেটানো যেতে পারে। যে সব দরিদ্র মহিলার নিজের সামান্য বসতভিটেও নেই, অথবা অন্যের বাড়িতে বসবাস করতে হয়, তারাও ইচ্ছা করলে সামান্য পুঁজি খাঁটিয়ে কৃষি অথবা কৃষি বহির্ভূত কার্যক্রম, যেমন ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এতে নিজেদের উপার্জন দিয়ে পরিবারের অভাব দূর করে স্বাবলম্বি হওয়া যায়। পারিবারিক অভাব বা দারিদ্র দূর করার লক্ষ্যে সবজি চাষ, হাঁস-মুরগী পালন এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা বিষয়ক কিছু তথ্যাদি এখানে উপস্থাপন করা হলো।
    সবজি চাষের গুরুত্ব ঃ পতিত জমি ব্যবহার করা যায় । পরিবারের দৈনন্দিন সবজির চাহিদা পূরণ ও পুষ্টির অভাব দূর হয়। বাড়তি আয় হয় ও সবজি কেনায় খরচ বাচেঁ। নিয়মিত টাটকা সবজি খাওয়া যায়।
    গ্রীষ্মকালীন সবজি ঃ গ্রীষ্মকালে চাষ হয় এমন শাক সবজির মধ্যে অন্যতম হলো-ডাঁটা, পুই, কলমী, থানকুনি, হেলেঞ্চা, কাঁচকলা, পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙা, চিচাঙ্গা, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, সজিনা, করলা, শসা, মুখীকচু, বেগুন, ওলকচু এসব।
    শীতকালীন সবজি ঃ লালশাক, পালংশাক, সরিষাশাক, ফুলকপি, বাধাকপি, ব্রোকলি, টম্যাটো, লাউ, সীম, মুলা, গাজর, শালগম, লেটুস এসব।
    শাক সবজি উৎপাদনের সময় ও কৌশল ঃ গ্রীষ্মকালীন শাক সবজি ফাল্গুন- চৈত্র মাস থেকে শুরু করে আশ্বিন মাস পর্যন্ত চাষ করা যায়। তবে আগাম চাষ করতে পারলে বেশি মূল্য পাওয়া যায়। আশ্বিন-কার্তিক মাস শীতকালীন শাক সবজি চাষের উপযুক্ত সময়।
    জমি নির্বাচনঃ আলো বাতাস চলাচলের সুবিধা, সেচের সুবিধা, অতিবৃষ্টির সময় জমি থেকে পানি বের করার সুবিধাযুক্ত উর্বর দোঁয়াশ মাটি শাক সবজি চাষের জন্য ভাল।
    জমি তৈরিঃ ভালোভাবে চাষ এবং মই দিয়ে মাটি ঝুর ঝুরে করে জমি তৈরি করা প্রয়োজন। বেডে শাক সবজি চাষের ব্যবস্থা নিলে সেচ ও পরিচর্যায় সুবিধা হয়।
    সার প্রয়োগ ঃ পুরমাণমতো গোবর, টিএসপি, এমমি সার শেষ চাষের সময় ভালোভাবে জমিতে মিশিয়ে দিতে হয়। ইউরিয়া সার চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পর প্রথম উপরি প্রয়োগ করতে হয়। দ্বিতীয়বার উপরি প্রয়োগ করতে হয় আরো ১৫ দিন পর। লাউ বা কুমড়া জাতীয় অন্যান্য সবজির বেলায় মাদা তৈরি করে প্রতি করতে মাদায় গোবর-১৫ কেজি, সরিষার খৈল-৫০০ গ্রাম, ইউরিয়া-২৫০ গ্রাম, টিএসপি-২৫০ গ্রাম এবং এমপি-২৫০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।
    জৈব সার/কম্পোস্ট তৈরীর পদ্ধতি ঃ ছায়াযুক্ত স্থানে একটি গর্ত করে গর্তের ভিতরে গোবর, খড়, ঘাস, লতা-পাতা, কচুরিপানা, হাঁসমুরগীর বিষ্ঠা, তরিতরকারির খোসা বা অবশিষ্টাংশ এবং প্রতিদিনের ময়লা আবর্জনা ফেলতে হবে। গর্তের আকার ৪ হাত লম্বা, ৪ হাত চওড়া ও ২ হাত গভীর হতে পারে। আবর্জনা ফেলার পর সামান্য ইউরিয়া এতে ছিটিয়ে দিলে এগুলো দ্রুত পঁচে যাবে। গর্ত ভরে গেলে গর্তের মুখ মাটি দিয়ে লেপে দিতে হবে এবং প্রয়োজনে এর উপর চালা তৈরি করা যেতে পারে। ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে আবর্জনা পঁচে ধুসর কালো রঙের জৈব সার তৈরি হয়।
    বীজবপন/ চারা রোপণ ঃ আধুনিক জাতের ফসলের ভালো বীজ জমিতে উপযুক্ত ‘জো’ অবস্থায় বপন করতে হয়। বীজ বপন ও চারা রোপণের কাজ বিকেলে করা ভালো।
    পরিচর্যা ঃ সবসময় আগাছা পরিস্কার করা, চারা ঘন হলে নিড়ানি দিয়ে পাতলা করা, লতানো গাছে বাউনি ও মাচা তৈরী করে দেয়া এবং নিয়মিত সেচ দেয়া প্রয়োজন। তবে চারার গোড়ায় যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং প্রয়োহজনে জমি থেকে অতিরিক্ত পানি বের করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া আইপিএম পদ্ধতিতে সময়মতো পোকা ও রোগদমনের ব্যবস্থা নিতে হয়।
    ফসল সংগ্রহ ঃ ফসল পরিপক্ক বা বাত্তি হলে অথবা বিক্রয় উপযোগী হলে শাক সবজি তুলতে হবে।
    হাঁস-মুরগী পালন ঃ বসত বাড়িতে মহিলারা সহজেই মুরগি পালন করতে পারেন। উন্নত জাতের মুরগি পালন করতে পারলে মাংস ও ডিম বেশি উৎপন্ন হয়। জাত ফাওমী, সোনালী ও রূপালী এখন জনপ্রিয় জাত।
    পালন পদ্ধতিঃ মুরগি ছেড়ে অথবা আবদ্ধ অবস্থায় পালন করা যায়। ঘরের মেঝে, খাঁচায় ও মাচায় মুরগি পালন করা যায়। বাজার থেকে অথবা ভালো খামার থেকে ব্রয়লার বা লেয়ার বাচ্চা কিনে এদের প্রতিষেধক টিকা দিয়ে পালন করতে লাভ বেশি হয়। কারণ, প্রাথমিক টিকার কারণে বাচ্চার মৃত্যুঝুঁকি কম থাকে। অসুস্থ হলে মোরগ- মুরগিকে আলাদাভাবে রাখা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো এর চিকিৎসা করা দরকার। শহর এবং গ্রাম সব জায়গায়ই হাঁস- মুরগির চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।
    হাঁসের জাতঃ ডিম উৎপাদনের জন্য মুরগির পরই হাঁসের স্থান। ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন জাতের হাঁস বেছে নিতে হয়। ডিম উৎপাদনের জন্য খাকি ক্যাম্পবল, ইণ্ডিয়ান রানার বেশ ভাল। ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য দেশি হাঁস বেশ ভালো। আর মাংস উৎপাদনের জন্য বেজিং জাতের হাঁস উত্তম।
    পালন পদ্ধতিঃ তিনটি উপায়ে হাঁস পালন করা যায়। (১) ছেড়ে খাওয়ানো পদ্ধতি, (২) অর্ধ আবদ্ধ পদ্ধতি, (৩) আবদ্ধ পদ্ধতি। তবে ছেড়ে খাওয়ানো পদ্ধতিই গ্রাম বাংলার জন্য উপযুক্ত। অর্ধ আবদ্ধ এবং আবদ্ধ পদ্ধতিগুলো খামার পর্যায়ে ভাল।
    ছেড়ে খাওয়ানো পদ্ধতিঃ বাড়ির পাশে ডোবা, পুকুর অথবা বিলঝিল থাকলে সারাদিন হাঁস সেখানে চড়ে বেড়াতে পারে। মুক্ত জলশায় থেকে এরা প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহন করতে পারে। সকালে এবং রাতে সামান্য খাবার দিলেই চলে। তাই কম খরচে দরিদ্র মহিলারা খুব সহজেই এভাবে হাঁস পালতে পারেন।
    অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতিঃ এ পদ্ধতিতে বসতবাড়ির আশপাশে সুবিধাজনক স্থানে হাঁসের থাকার জায়গা করতে হয়। মুক্ত জলশায় অথবা অনাবাদি জমির পাশে এ পদ্ধতিতে হাঁস পালন করা সহজ। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি হাঁসকে দৈনিক মাত্র ১৪০ গ্রাম খাবার দিলেই চলে।
    আবদ্ধ পদ্ধতিঃ যাদের জায়গা কম, কাছাকাছি জলশায় নেই তারা আবদ্ধ পদ্ধতিতে হাঁস পালন করতে পারেন। এক্ষেত্রে হাঁসর ঘর ৭-৮ ফুট উঁচু হতে হবে। প্রতিটি হাঁসকে দৈনিক ১৬০ গ্রাম খাদ্য দিতে হবে।
    খাদ্য ঃ চালের কুড়া, ভূষি, ঝিনুক চূর্ণ, ভাতের মাড়, শামুক, ধান, গম, ভুট্টাচূর্ণ, খনিজ লবণ এসব।
    পরিচর্যা ঃ হাঁসের খোয়াড় বা ঘর সবসময় পরিস্কার রাখতে হয়। ডিম পাড়া হাঁস খোয়াড় থেকে দেরিতে ছাড়তে হয়। হাঁসের রোগ তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়। তকে কলেরা ও প্লেগ রোগে হাঁস বেশি আক্রান্ত হয়। তাই রোগ হবার আগেই টিকা দেবার ব্যবস্থা করা দরকার।

     

  • ফুল দিয়ে মানব চিকিৎসা

    ফুল দিয়ে মানব চিকিৎসা

    ফুল দিয়ে মানব চিকিৎসা

    লেখকঃ বকুল হাসান খান

    ফুল কেনা ভালবাসে? সবাই। যে কোন ফুলের সৌন্দর্য মনের তৃষ্ণা মেটায়। পরিবেশকে সুন্দর করে মন প্রশান্তিতে ভরে দেয়। নিরন্তর ফুলের শোভা দেখে মনে হয় দীর্ঘ এক স্বপ্ন দেখতে দেখতে পার করে দেই ক্ষুদ্র এই পৃথিবীর জীবন। কিন্তু না। অপার্থিব অনুভূতির মত পার্থিব জীবন নয়। দেহের মধ্যে বাসা বাধে নানা রকম অসুখ বিসুখ। স্বপ্ন প্রশান্তি তখন ধীরে ধীরে ভাঙ্গতে শুরু করে। কোন কোন সময় সে অবস্থায় সুন্দর ফুল আর পৃথিবীকে কুৎসিত মনে হয়। কিন্তু ফুলের সৌন্দর্যের মত অনেক ফুল গাছের মধ্যেই রয়েছে আর এক মহা সুন্দর, তা হচ্ছে গাছের ভেষজ গুণ। এসব ফুলগাছ আঙিনায় রেখে একদিকে যেমন পেতে পারি স্বর্গের আনন্দ অন্যদিকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন পরিবেশ সম্মতভাবে সারিয়ে তুলতে পারি আমাদের অসুখগুলো। প্রাথমিক চিকিৎসা তো বটেই- ক্যান্সারের মত কঠিন রোগও সারিয়ে তুলতে পারি ফুল গাছ দিয়ে।
    গাঁদা ফুল ঃ হঠাৎ শরীরে কোথাও কেটে গেলে গাঁদা ফুলের পাতার রস অব্যর্থ। পাতা ঘষে বা বেটে সে কাটা জায়গায় প্রলেপ দিলে তৎক্ষণাৎ রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়, ব্যথা কমে যায় ও তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে। পাতার রস দিয়ে ঘা দুয়ে দিলে দ্রুত তা সেরে যায়। গাদা ফুলের পাঁপড়ি সামান্য মাখনের সাথে মিশিয়ে অল্প পরিমাণে কয়েকদিন খেলে অর্শের রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
    অপরাজিতাঃ প্রস্রাব কম হলে বা কষ্ট পেলে অপরাজিতা গাছের শিকড়ের ছাল পানিতে সিদ্ধ করে দু’চার দিন খেলেই এ অসুবিধা চলে যাবে। সহজ প্রসবের জন্য সাদা অপরাজিতার শিকড় বাঁটা ১ গ্রাম পরিমাণ খাওয়ালে উপকার পাওয়া যেতে পারে। আর নীল অপরাজিতার শিকড় এক চামচ ঘি, মধু বা চিনির সঙ্গে খেলে অবশ্যই শুক্র রোগ সেরে যাবে ও শুক্র বৃদ্ধি হবে। ঠান্ডা লেগে চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকলে বা চোখ জালা যন্ত্রণা হলে নীল অপরাজিতার পাতা পানি দিয়ে বেঁটে কপালে প্রলেপ দিলে যন্ত্রণা কমে যায়। কোষ্ঠকাঠিণ্য দুর করতে সাদা বা নীল অপরাজিতার বীজ গুড়ো করে ২ গ্রাম পরিমাণ নিয়ে তাতে সামান্য চুন মিশিয়ে গরম দুধ বা পানি দিয়ে রাতে শোয়ার আগে খেতে হবে। নীল অপরাজিতার শিকড় বাঁটা খেলে বাত রোগের উপকার পাওয়া যায়।
    নয়ন তারা ঃ ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসায় নয়ন তারা অনন্য। এ রোগে আক্রান্ত হলে নয়নতারা গাছের কচি ডালের টাটকা রস ১০ মিলিলিটার বা ২ চা চামচ পরিমাণ কয়েকদিন রোজ সকাল বিকেলে খেলে এ রোগের উপশম হয়। ইতোমধ্যেই ভেষজ বিজ্ঞানীরা এ গাছের ডাল ও পাতা থেকে কান্সার নিরাময়ের প্রায় ৭০ টি ওষধ আবিস্কার করেছেন। শরীরের কোথাও কেটে গেলে বা ঘা বিষাক্ত হয়ে পেকে গেলে গাছের রস সাত দিন ব্যবহার করলে কাটা জোড়া লেগে যায়। এবং ঘা সেরে যায়। ব্লাড প্রেসার বা রক্ত চাপ বেড়ে গেলে নয়নতারা গাছের শিকড়ের রস এক চা চামচ পরিমাণ সকালে খালি পেটে একবার করে ৩-৪ দিন খেলে কিছুটা উপকার হতে পারে। বহুমূত্র বা ডায়াবিটিস রোগ সারাতে প্রতিদিন সকালে সাদা নয়নতারা ফুল গাছের দু’টি পাতা খালি পেটে চিবিয়ে খেলে এ রোগ মোটেই বাড়তে পারে না। পাতা বেটে রস খেলেও একই উপকার। এতে বহুমূত্র রোগ সারে না, তবে নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাসায় কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা যেমন বিষ পিঁপড়া, মাঝালি পিঁপড়া, বোলতা, মৌমাছি ইত্যাদি পোকা কামড়ালে বেশ যন্ত্রণা হয়, কামড়ানো জায়গা ফুলে যায়। সে জায়গায় নয়নতারা পাতা হাতে ডলে রস লাগালে তাৎক্ষণিক ভাবে উপশম পাওয়া যায়।
    বকফুল ঃ- বকফুলের গাছ এক ধরনের আয়ুর্বেদিক তেল তৈরি করা হচ্ছে। এ তেল ব্যবহারে গণোরিয়া রোগে সুফল পাওয়া যায়। বুকে সর্দি বসলে এক চা চমচ পরিমাণ বকফুলের রস দিনে ৩ বার খেলে বসে যাওয়া সর্দি নরম হয়ে বেরিয়ে আসে। নাকে এলার্জি অর্থাৎ বার বার হাঁচি আসে, নিচু হলেই নাক দিয়ে পানির মত সর্দি গড়িয়ে পড়ে। এরূপ হলে পাতার টাটকা রস ২ চা চামচ পরিমান হালকা গরম করে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া নাকের ছিদ্রে তিন ফোঁটা কারে পাতার ঠান্ডা রস দিলে পানির মত সর্দি পড়া বন্ধ হবে। বক ফুলে আছে প্রচুর ভিটামিন এ বা ক্যারোটিন। তাই রাতকানা রোগ হলে ফুল ভাজা নিয়মিত খেলে বা টাটকা পাতার রস ঘি দিয়ে গরম করে রোজ সকালে ১ চা চামচ খেলে উপকার পাওয়া যায়। গরম করা বা ফুটানো রস বেশি করে তৈরি করে ছেঁকে কাঁচের শিশিতে রেখে বহুদিন তা ব্যবহার করা যায়।
    জবাঃ যে কোন সর্দি কাশি হলে জবা গাছের ৩-৪ গ্রাম টাটকা শিকড় পরিষ্কার করে পানি দিয়ে বেঁটে তার আধা কাপ ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে পর পর তিন দিন রোজ সকাল বিকালে খেলে তা সেরে যায়। টাক পোকায় অনেক সময় চুল গোড়া থেকে কেটে যে। সেখানে নতুন চুল গজালেও তা খেতে থাকে এ অবতস্থায় গোসল করার পর চুল শুকিয়ে জবাফুল বেটে লাগালে চুল গজায়। জবা ফুল বেঁটে চোখের উপর এবং নীচের পাতায় প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
    সন্ধ্যামণিঃ পেট পরিষ্কার করতে সন্ধ্যামণি ফুলের পাকা কালো শুকনো বীজ ৩-৪ গ্রাম ভালভাবে গুঁড়ো করে রাতে খাবার পর শোয়ার সময় এক গ্লাস ঠান্ডা পানির সাথে খেলে সকালে কয়েক বার পায়খানার সাথে পেটে জমে থাকা মল বেরিয়ে পেট পরিষ্কার হয়ে যায়। অর্শ রোগ কমোতে শিকড় সিদ্দ করে খেতে পারেন।
    করবী গাছের কচি পাতার টাটকা রস চোখে দিলে চোখ ওঠায় আরাম পাওয়া যায়। দিনে দু’বার দিতে হবে। আঘাত লেগে ফুলে গেলে ৫০ গ্রাম কচি পাতা কুচি কুচি করে কেটে মাটির পাত্রে ১০০ মিলিলিটার পানি দিয়ে সিদ্ধ করে পানি কাইয়ের মত হলে তা সহ্যমত গরম অবস্থায় কয়েকদিন ফোলা জায়গায় লাগালে ফোলা কমে যায়। বিছে, মৌমাছি, বোলতা, ভীমরুলে কামড়ালে কচি পাতা সিদ্ধ করে তার পানি দিয়ে কামড়ানো জায়গা ধুয়ে দিলে সেখানকার বিষ নষ্ট হয়, ফোলা যন্ত্রনাও কমে যায়। খোস পাঁচড়া সারাতে ব্যবহার করা হয় গাছের ছাল বাটা রস। করবীর শিকড় দুধ দিয়ে বেঁটে গোসলের তিন ঘন্টা আগে মাথায় মাখলে অকালে চুল পাকা বন্ধ হয়ে যায়।
    লজ্জবতীঃ দীর্ঘদিন ধরে ঘা কমছে না। সে ক্ষেত্রে ৫ গ্রাম টাটকা পাতা সামান্য পানি দিয়ে বেটে ৩০ মিলি পরিমাণ জ্বাল দেয়া গরুর দুধে মিশিয়ে দিনে একবার খেতে হবে। এছাড়া তাজা পাতা বেঁটে ঘায়ে লাগিয়ে শুকনো পাতলা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিলে তা সেরে যায়। এ সময় লবণ না খাওয়াই ভাল। দাঁতের মাড়ির ক্ষতে পাতাসহ ডাঁট ১০-১২ গ্রাম বেঁটে ক্বাথ তৈরি করে ১০-১৫ মিনিট মুখে নিয়ে বসে থাকলে ধীরে ধীরে তা সেরে যায়। দিনে ২-৩ বার এভাবে মুখে রেখে কুলি করলে উপকার পাওয়া যায়। সাদা আমাশয় সারাতে লজ্জাবতীর পাতাসহ ডাটা ১০ গ্রাম ১ গ্লাস পানিতে সিদ্ধ করে ২-৩ দিন রোজ সকাল সন্ধ্যায় ছেঁকে সে পানি পান করলে উপশম পাওয়া যায়। হাত পায়ের জ্বালা যন্ত্রণা কমাতে শিকড়সহ গাছ ১০ গ্রাম পরিমাণ ৪ কাপ পানিতে জ্বাল দিতে দিতে যখন পানি ১ কাপের মত হবে তখন তা নামিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে খেতে হবে।
    শিউলী ঃ জ্বর সে নতুনই হোক বা পুরানোই হোক, ২চা চামচ পরিমাণ শিউলী পাতার রস একটু গরম করে সকাল বিকাল খেলে জ্বর ভাল হয়ে যাবে। এ ছাড়া এ রোগে ৬/৭ টি কচি পাতা সামান্য আদা দিয়ে বেঁটে সে রস ছেঁকে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এতে শরীরে জ্বালা বা দাহ কমাতে ভাল ফল দেয়। ক্রিমি কমাতে ২চামচ পরিমাণ পাতার রস রোজ সকাল বিকাল কয়েকদিন খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়। শিশুরা তিতা রস খেতে চায়না । তাই শিশুদের জন্য তিতা রসের সাথে একটু চিনি মিশিয়ে ১ চা চামচ খাওয়াতে হবে। অরুচি হলে শিউলী পাতা ঘিয়ে ভেজে খেলে বা কচি পাতা মুগডাল বেঁটে বড়া বানিয়ে খেলে মুখে রুচি আসে। কফ বের করতে পাতার রস ২চা চামচ একটু গরম করে খেতে হবে। এতে বাত রোগের ও কিছুটা উপশম হয়। শিউলী বীজের গুড়ো সামান্য পানিতে গুলে মাথায় সব জায়গায় ভালভাবে ঘষে কয়েকদিন মাখলে খুসকি চলে যায়।
    তরুলতা বা কুঞ্জলতাঃ যাদের রাতে ভাল ঘুম হয়না তারা তরুলতা গাছের শুকনো ডাল ও পাতার গুঁড়ো ৩ চা চামচ পরিমাণ,ঘি ১ চা চামচ এবং সমপরিমাণ মধু বা চিনি মিশিয়ে তাতে শোয়ার আগে খেয়ে দেখতে পারেন, সুনিদ্রা হবে। কোথাও কেটে গিয়ে বা আঘাত লেগে শরীরে যদি বিষাক্ত ঘা হয়ে যায় তবে কচি ডাল পাতা বেঁটে তার রস দিয়ে ঘা ভালভাবে ধুয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায়। শুকনো গাছের গুড়ো ঘায়ের উপর ছড়িয়ে দিয়েও উপকার পাওয়া যায়। পিটে ফোঁড়া হলে পাত বেটে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে ফেটে যায়। অর্শ রোগ কমাতে গাছের পাতা বেঁটে ২ মিলি বা ৪ চা চামচ রস ২ চা চামচ ঘি দিয়ে খেলে উপকার হবে। উচ্চ রক্ত চাপের রোগীরা অর্শ সারাতে ঘি ছাড়াই খাবেন।
    টগরঃ ক্রিমি কামতে ৫ গ্রাম পরিমাণ তাজা শিকড় সামান্য পানি দিয়ে বেঁটে সকালে খেলে ক্রিমি মরে যায়। অনেক সময় খাওয়ার পরদিন মলের সাথে মৃত ক্রিমি বেরিয়ে আসে। যে কোন কারণে দাঁতে যন্ত্রণা হলে শিকড় পরিস্কার করে অল্প করে চিবালে যন্ত্রণা কমে যায়। এ সময় লালা বা থুতু ফেলে দিতে হবে। গাছের সাদা কষ দিনে দু তিন ফোঁটা চোখে দিলে তিন দিনেই চোখ ওঠা ভাল হয়ে যায়। চোখ লাল হলে তাও কেটে যায়। বিষাক্ত ক্ষতে টগর গাছের কষ ও রস বিশেষ উপকারি। দুধের মত আঠা বা কষ দিনে একবার ক্ষত স্থানের উপর লেপে দিলে জ্বালা যন্ত্রণা কমে ও তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
    আসুন ছোট্র একটা ফুলের বাগান গড়ে তুলিঃÑ যেসব ফুল আমাদের এত উপকার করে হাতের কাছে তাদের গাছগুলো নিয়ে গড়ে তুলুন ছোট্র সুন্দর একটি ফুলের বাগান। বাড়ির সামনেই লাগান নানা রকম ফুলের গাছ। আর যেখানে ছাদ বারান্দাই শেষ ভরসা সেখানে টবে লাগান এসব ফুলের গাছ। পরিবেশ ও মনকে ভাল রাখি।

     

  • সাভার বাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা চেয়েছেন মিজানুর রহমান মিজান

    সাভার বাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা চেয়েছেন মিজানুর রহমান মিজান

    সাভার বাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা চেয়েছেন মিজানুর রহমান মিজান

    প্রিয় সাভার বাসী
    আসসালামু আলাইকুম,সাভার পৌর সভায় অবস্থিত তালবাগ মুসলিম কবরস্থান এর সুযোগ্য সভাপতি ডাঃ এনামুর রহমান মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় ও সাধারণ সম্পাদক আমি মোঃ মিজানুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে কবরস্থান ও কবরস্থান মসজিদের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মোঃ এনামুর রহমান (এনাম) ভাইয়ের সার্বিক প্রচেষ্টায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে ৩ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। যার মধ্যে ২ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রণালয় থেকে ও ৪০ লক্ষ টাকা ঢাকা জেলা পরিষদ থেকে এবং ২৫ লক্ষ টাকা এল,জি,ই,আর,ডি মন্ত্রণালয় থেকে। উক্ত টাকায় ৩ একর জমির উপরে অবস্তিত কবরস্থান ও কবরস্থান মসজিদের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
    * কবরস্তানের চতুরদিকে বাউন্ডারি, মাটি ভরাট, আধুনিক গেট নির্মান,ভেতরের রাস্তা নির্মান ও মসজিদ এবং কবরস্থানের আধুনিক নকশা নির্মান পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
    আমরা আপনাদের সকলের সহযোগীতা ও দোয়া কামনা করছি।

    ধন্যবাদান্তে
    মোঃ মিজানুর রহমান
    সাধারণ সম্পাদক,তালবাগ মুসলিম কবরস্থান,
    ঢাকা জেলা যুবলীগ।

  • বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবেঃ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

    বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবেঃ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

    বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবেঃ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

    মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

    মুজিববর্ষ উদযাপনে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপিকে আমাদের জাতীয় সম্মেলনেও দাওয়াত দিয়েছি। মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরুর অনুষ্ঠানেও বিএনপি আমন্ত্রিত ছিল, কিন্তু তারা উপস্থিত থাকেননি। মুজিববর্ষেও তাদের আমন্ত্রণ জানাব। তারা অংশ নেবেন কি না, সেটা তাদের ব্যাপার। তবে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই না।

    বৃহস্পিতবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

    ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কোনো পার্টির নয়, বঙ্গবন্ধু গোটা বাংলাদেশের, বঙ্গবন্ধু দল মত নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের নেতা। তিনি মহাবীর, তিনি মহানায়ক। তাকে নিয়ে আমরা দলীয়করণ করতে চাই না। তিনি সব কিছুরই ঊর্ধ্বে। কাজেই এখানে আমরা দলমত নির্বিশেষে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, যারা স্বাধীনতার আদর্শে বিশ্বাস করেন, সবার জন্যই মুজিববর্ষ উদযাপন উন্মুক্ত থাকবে। এখানে কোনো সংকীর্ণতার সুযোগ নেই।

    মুজিববর্ষে আমাদের ইতিহাস, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের সংগ্রাম, আমাদের সাফল্য, আমাদের উন্নয়ন, আমাদের অর্জন ফোকাস করা হবে এবং দেশে বিদেশে আমাদের বাংলাদেশ হবে ‘ব্র্যান্ড’। বাংলাদেশ ব্র্যান্ডকে আমরা ফোকাস করব, সেই বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা পর্যন্ত, যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

    সংগ্রাম, আন্দোলন, ইতিহাস, সাফল্য, উন্নয়ন, অর্জন সব কিছু এখানে আসবে। সবকিছুই ফোকাসে আসবে এবং সেটা সারা দুনিয়ার সামনে বাংলাদেশ ব্র্যান্ডকে তুলে ধরার একটা মোক্ষম সময়, মাহেন্দ্রক্ষণ। এ সময়টিকে আমরা কাজে লাগাতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় স্বার্থে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ পতাকা, শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে আমরা কাঙ্ক্ষিত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অভিমুখে এগিয়ে যাব, এটাই এ মুজিব শতবার্ষিকী তথা মুজিববর্ষ উদযাপনের স্পিরিট, আমাদের থিম।

    কাদের বলেন, আমাদের চিন্তাভাবনা, আমাদের আইডিওলজি এসব কিছু নিয়ে আমরা একটা বছর সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে মুক্তিযুদ্ধের মূল ধারা তথা মুজিবের ধারায় অনুপ্রাণিত করব, উজ্জীবিত করব। আমাদের চলার পথকে আরও গতিময় করব, বেগবান করব ইতিহাস ঐতিহ্যের আলোকে।

    এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন-আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, শাখাওয়াত হোসেন শফিক, প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকে।

  • অবৈধ পথে হঠাৎ বিলাসী জীবনযাপন তালিকায় জরিত নেতাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    অবৈধ পথে হঠাৎ বিলাসী জীবনযাপন তালিকায় জরিত নেতাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

    ডেক্স সংবাদঃ আওয়ামীলীগে অবৈধ পথে হঠাৎ বিত্তশালী হওয়াদের তালিকায় কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্য—এমনকি জেলা, উপজেলা, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদেরও নাম রয়েছে। অবৈধ অর্থ-বিত্ত-প্রতিপত্তি, বিলাসী জীবনযাপন আর অনৈতিক কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর যেসব নেতাকর্মী জড়িত রয়েছেন তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ক্ষমতার ছায়াবৃক্ষ আওয়ামী লীগে ঘাপটি মেরে বসে থেকে যারা ফায়দা লুটছে তাদের ব্যাংক একাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের গ্রামের বাড়িতেও খোঁজ-খবর নিতে শুরু করেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। সরকার ও আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

    হঠাৎ বিত্তশালী আওয়ামী লীগ নেতাদের তালিকা করা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে দলের অসংখ্য নেতাকর্মী হয়েছেন অঢেল সম্পত্তির মালিক। অথচ তাদের বৈধ আয়ের উৎস বলতে তেমন কিছু নেই। রাজধানীসহ সারাদেশের এমন নেতাদের বিত্ত-বৈভবের বিবরণসংবলিত একটি গোপন প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সম্প্রতি দেওয়া হয়েছে।

    জানা গেছে, এই প্রতিবেদন দেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘একটা মানুষের বেঁচে থাকতে কত টাকা লাগে? এরা কি টাকা কবরে নিয়ে যাবে? কেন তারা এসব করে?’ অবৈধ অর্থবিত্তশালীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

    সরকারের নীতিনির্ধারণ পর্যায়ের একজন নেতা ইত্তেফাককে বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকার ও দলীয় নেতৃত্বে ভারসাম্য আনার অংশ হিসেবে সারাদেশের উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ পাবেন না এমপিরা। তৃণমূলে পাঠানো বার্তায় এমপিদের উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, যারা এমপি হতে পারেননি, তারা যেন নেতা হওয়ার সুযোগ পান। তবে জেলা পর্যায়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন এমপিরা। কারণ কেন্দ্রের সঙ্গে তাদের সমন্বয় করতে হয়।

    অপরদিকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে না রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দুই অংশের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না দলীয় কাউন্সিলররা। থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে স্থান পাওয়ার সুযোগ থাকলেও শীর্ষ নেতা হতে পারবেন না তারা। প্রসংগত, সরকার থেকে দলকে যতটুকু সম্ভব আলাদা করার অংশ হিসেবে গত ২০-২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় পদ থেকে তিন মন্ত্রী, চার প্রতিমন্ত্রী ও দুই উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন।

    সূত্র জানায়, তালিকায় নাম থাকা হঠাৎ বিত্তশালীদের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্ত করতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শুধু তৃণমূল কিংবা সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাই নন, কেন্দ্রীয় কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধেও বিপুল সম্পদ ও অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার তথ্য এখন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে। কেন্দ্রীয় একজন নেতা, যিনি ঋণখেলাপিও বটে। তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের খবর পাওয়া গেছে। অথচ তিনি রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু করেন না। আওয়ামী লীগের আরেক কেন্দ্রীয় নেতার কোনো বৈধ আয় নেই। কিন্তু তিনি বিলাসবহুল অফিস পরিচালনা করেন। তার সম্পদ প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বাড়ে।

    কিন্তু ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে ঐ নেতা যেমন আলোচিত ছিলেন না, তেমনি তার অর্থবিত্তও কিছু ছিল না। এখন তার অফিসকক্ষে গেলেই মানুষের পিলে চমকে ওঠার অবস্থা হয়। আওয়ামী লীগের আরেকজন কেন্দ্রীয় নেতা, যিনি তেমন কিছুই করেন না, শুধু রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করেই ধনাঢ্য হয়েছেন। দুই বছর ধরে সাভারের আশুলিয়ায় আওয়ামী লীগের এক সহযোগী সংগঠনের নেতা কোটিপতি বনে গেছেন। তিনি কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করছেন আলিশান বাড়ি, কিনেছেন কোটি টাকার গাড়ি। তার কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নেই। এরপরও তার এত সম্পদ কীভাবে হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। অধিকাংশ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের চিত্র অভিন্ন।

    প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্য মন্ত্রী হওয়ার পরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।’ আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য জানান, যারা হঠাত্ করে ফুলেফেঁপে উঠেছেন, যারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন, তাদের সংখ্যা খুবই কম।

    দলীয় ফোরামের একাধিক বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, রাজনীতি একটি পবিত্র জিনিস, রাজনীতি মানুষের সেবা করার বিষয়। রাজনীতিকে কেউ যদি বিত্তশালী হওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে। কারণ রাজনীতি কলুষিত হলে সব থেকে বেশি কলুষিত হবে আওয়ামী লীগ।

    রাজধানীসহ সারাদেশে এ ধরনের নেতাকর্মীর সংখ্যাই বেশি। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও কঠোর অবস্থানে চলে যাচ্ছেন। তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় তাদের সম্পত্তি বৈধ নয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো কার্পণ্য না করা হয় সে ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    সূত্রঃঅনলাইন