লেখক,হাফিজুর রহমান
আইনের জগতে একটি সরল ধাঁধার বহুল প্রচলন দেখা যায়। ধাঁধাটি হল, বলুনতো এমন কোন অপরাধ আছে যাহা করিলে শাস্তি হয় না কিন্তু করিবার উদ্যোগ করিলে শাস্তি হয়! ধাঁধার উত্তরটি অনেকেরই জানা আবার অনেকেই হয়তো জানা নেই। এর সহজ উত্তর “আত্মহত্যা”। মূলতঃ এই অপরাধটি সম্পূর্ণ হইলে যে অপরাধী সে সকল আইন এবং পৃথিবীর সকল শাস্তির উর্ধ্বে চলে যান। অর্থাৎ যিনি আত্মহত্যা সম্পন্ন করেন তাহাকে পৃথিবীতে শাস্তি দেওয়া যায় না। কিন্তু যিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করিয়া সফল হইতে পারেন না, তাহাকে শাস্তি প্রদান করিয়া পৃথিবীতে এ ধরনের কাজকে নিরুৎসাহিত করা হয়। আপনরা জীবন আপনার নিকট যেমন মূল্যবান কিম্বা আপনার কোন কোন ভ্রান্ত ধারনায় মূল্য না থাকুক অন্যদের নিকট তাহা অতি মূল্যবান। কবির ভাষায় বলতে গেলে “মানব জীবন সার, এমন পাবে না আর”
আত্মহত্যা কি?
পৃথিবীর সুন্দর সব কিছুকে ফেলে স্বেচ্ছায় নিজ জীবনাবসানের নাম আত্মহত্যা। আত্মহত্যা মানে নিজেকে নিজে খুন করা। কোন প্রাণী নিজের জীবন নিজেই শেষ করা বা নিজ জীবন হত্যা করাকে আমরা আত্মহত্যা বলে থাকি। অনেকের মতে নিজ আত্মাকে হত্যা করার নামান্তর আত্মহত্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞানুসারে আত্মহত্যা হলো স্বজ্ঞানে এমন একটি ভয়ানক কাজ করা যা কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায় এবং ব্যক্তি ঐ কাজের প্রত্যাশিত ফলাফল সম্পর্কে পূর্ব থেকেই পুরোপুরি অবগত থাকে। আবার নিজ আত্মাকে চরম যন্ত্রণা আর কষ্ট দিয়ে নিজেকে হত্যার নাম “আত্মহত্যা” বলে থাকেন অনেকে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে আত্মহত্যা একটি প্রতিরোধযোগ্য ভয়াবহ মেডিকেল এবং সামাজিক ব্যাধি। আত্মহত্যা কোন সমস্যার সমাধান নয় বরং সমস্যার কারণ। মায়ের সঙ্গে অভিমান করে দূর গাঁয়ের কিশোরী মেয়ে যেমন কীটনাশককে অবলম্বন করে পালিয়ে যায় জীবন থেকে, তেমনি মেগাসিটির অভিজাত উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিও তার অন্তর্জগতের তাড়িত বোধ থেকে রেহাই পেতে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। এ তালিকা থেকে মুক্তি পায়নি ইউনিভার্সিটির প্রবীণ শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক, অভিনয়শিল্পী, সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, পুলিশ থেকে শুরু করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়া ছোট শিশুও ।
সবচেয়ে যে কারনে বেশী মানুষ আত্মহত্যা করে তার নাম বিষন্নতা। বিষণ্ণতা মানসিক রোগগুলোর মধ্যে অত্যন্ত সাধারণ এবং ধ্বংসাত্মক একটি রোগ। কারণ এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি জীবন চলার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে এবং কোনো কোনো রোগী অবলীলায় আত্মহত্যার মাধ্যমে মুক্তি পেতে চেষ্টা করে এবং কখনো কখনো সফল হয়। তাই আর কিছু দিনের মধ্যেই হয়তো বিষণ্ণতা রোগটি পৃথিবীতে এক নম্বর ‘কিলার ডিজিজ’ হিসেবে পরিচিতি পাবে। পরিসংখ্যানে আরো পাওয়া যায় যারা আত্মহত্যা করেছে তাদের ৮০ ভাগই আত্মহত্যার পূর্বাভাস দিয়েছে কিন্তু যথাযথ গুরুত্ব পায়নি বলে কেউ প্রতিরোধের ব্যবস্থাও গ্রহণ করেনি। যেকোনো লোক যেকোনো সময়ে বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্ত হতে পারে তবে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে শতকরা ১০০ ভাগ রোগীই ভালো হয়ে যেতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে আত্মহত্যাকারীর সংখ্যা। সাধারণত দু’ভাবে আত্মহত্যা সংঘটিত হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিকল্পনার মাধ্যমে আত্মহত্যা করে আর একটি হলো তাৎক্ষণিক উত্তেজনা বা তাড়নায় ইমপালসিভ আত্মহত্যা। পরিকল্পনাকারীদের মনে প্রথমে আত্মহত্যার ইচ্ছা জাগে, ইচ্ছার পর পরিকল্পনা করে সে, তার পর আত্মহত্যার জন্য এ্যাটেম্পট গ্রহণ করে। বড় ধরনের বিষণ্ণতা রোগের শেষ পরিণতি হচ্ছে পরিকল্পনার মাধ্যমে আত্মহত্যা।
এবার দেখা যাক ধর্মে আত্মহত্যা নিয়ে কি বলা হয়েছেঃ-
ইসলাম ধর্মে আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকতে মহান আল্লাহ্ তা’আলা বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং এর পরিনামের কথা ভাববার জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির বর্ণনা দিয়ে মহা পবিত্র আল কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। সূরা নিসা ২৯-৩০ নং আয়াতে বলা হয়েছে “আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে উহা (আত্মহত্যা) করবে, অবশ্য আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো, আল্লাহর পক্ষে উহা সহজসাধ্য।”
হাদিসে বলা হয়েছেঃ-
ক) রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর যে বর্শা ইত্যাদির আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করে- দোজখেও সে সেভাবে নিজেকে শাস্তি দেবে।
খ) হযরত জুনদুব ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের পূর্বেকার এক লোক আহত হয়ে সে ব্যথা সহ্য করতে পারেনি। তাই সে একখানা চাকু দিয়ে নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলে। এর পর রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা নিজেকে হত্যা করার ব্যাপারে বড় তাড়াহুড়া করে ফেলেছে। তাই আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম।
খৃষ্টান ধর্মে বাইবেল অনুযায়ী, আত্মহত্যা নিশ্চিত করে না যে একজন ব্যক্তি স্বর্গে প্রবেশের অধিকার পাবে কি না৷ যদি কোনো অসংরক্ষিত ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, তবে সে শুধুমাত্র নরকের দিকে নিজের যাত্রা “ত্বরান্বিত” করা ছাড়া আর কিছুই করল না৷ যদিও, যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করল সে প্রভূ খ্রীষ্টকে নিজের মুক্তিদাতা হিসেবে অস্বীকার করেছে বলেই নরকে যাবে, আত্মহত্যা করার জন্য নয়৷ যে খ্রীষ্টান আত্মহত্যা করে তার সম্পর্কে বাইবেলে বলা হয়েছে, বাইবেল আমাদের শেখায়, যে মুহূর্ত থেকে আমরা প্রভূ খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করতে শুরু করবো, আমরা শাশ্বত জীবন পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পাব (জন্ 3:16)৷ বাইবেল অনুযায়ী, খ্রীষ্টানরা দ্বিধাহীনভাবে জানে যে তারা শাশ্বত জীবনের অধিকারী (1 জন্ 5:13)৷ কোনো কিছুই একজন খ্রীষ্টানকে ঈশ্বরের ভালোবাসা পাওয়ার থেকে বিরত রাখতে পারে না (রোমানস্ 8:38-39)৷ আত্মহত্যা হল ঈশ্বরের বিরুদ্ধে একটি ভয়ানক পাপ৷ বাইবেল অনুযায়ী, আত্মহত্যা হল খুন; এইটি সবসময়েই ভুল৷ কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে খ্রীষ্টান বলে দাবি করা সত্ত্বেও আত্মহত্যা করে তবে তার বিশ্বাসের উৎকর্ষতা সম্পর্কে সন্দেহ জাগবে৷
সনাতন ধর্মে পুরাণে উল্লেখ করা হয়েছে, রামের মৃত্যুর পর অযোধ্যায় গণহারে আত্মহত্যা করে মানুষ। কিন্তু মহাভারতে বলা হয়েছে, কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর অনাহারে আত্মহত্যার চিন্তা করলে যুধিষ্ঠিরকে স্বেচ্ছামৃত্যুর পরিকল্পনা বাতিলের পরামর্শ দেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, অর্থাৎ হিন্দুধর্মেও আত্মহত্যা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের “অহিংসা পরম ধর্ম, জীব হত্যা মহাপাপ” এই মতবাদ মতে নিজ জীবন বা অন্য কোন জীব হত্যাকে সম্পূর্ণভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আবার অনেকের মতে বৌদ্ধ ধর্মে (সদ্ধধর্ম) যদিও আত্মহত্যায় উৎসাহিত করা হয় না, তবে এই ধর্মে আত্মহত্যাকে একেবারে নিষিদ্ধও করা হয়নি।ইহুদিরাও আত্মহত্যাকে পাপকর্ম বলেই মনে করে।
এবার দেখা যাক আইন কি বলে..
আইনের চোখেও আত্মহত্যার প্রচেষ্টাগ্রহণকারী একজন অপরাধী। আত্মহত্যার পর যেমন থানায় খবর দিতে হয়, তেমনি আত্মহত্যার চেষ্টা করলেও থানায় খবর জানানোর কথা বলা হয়েছে। আত্মহত্যার চেষ্টা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদিও আইনটির প্রয়োগ নেই দেশে। সচেতন নয় মানুষ, সচেতন নয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।
পেনাল কোড ৩০৯ ধারায় বলা আছে, যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করিবার উদ্যোগ করে এবং অনুরূপ অপরাধ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করে, সেই ব্যক্তি বিনাশ্রম কারাদন্ডে- যাহার মেয়াদ এক বৎসর পর্যন্ত হইতে পারে বা অর্থদন্ড বা উভয়বিধ দন্ডে দণ্ডিত হইবে। অর্থাৎ আইন নিজের জীবন হরণের চেষ্টাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে এবং এ কারণে যে তার স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করার অধিকার তার নেই। কারণ এতে অপরাধ সংঘটন করে নিজেকে রেহাই দিতে উদগ্রীব হবে। এতে অপরাধ বাড়বে বৈ কমবে না।
আত্মহত্যা প্ররোচনার শাস্তির দণ্ডবিধিঃ
বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধির (পেনাল কোড) ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যা প্ররোচনার শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করলে অনুরূপ আত্মহত্যা অনুষ্ঠানে সহায়তাকারী ব্যক্তির ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। ৩০৫ ধারায় বলা হয়েছে, শিশু বা পাগল বা মাতাল ব্যক্তির আত্মহত্যার প্ররোচনাদানকারীকে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদনণ্ড দণ্ডিত করা যাবে।এ ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনা কি সে সম্পর্কে কিছু বলা নেই। অন্যদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধিত ২০০৩)-এর ৯ক ধারায় নারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনো নারীর সম্মতি ছাড়া বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তির ইচ্ছাকৃত কোনো কার্য দ্বারা সম্ভ্রমহানি হওয়ার প্রত্যক্ষ কারণে কোনো নারী আত্মহত্যা করলে ওই নারীকে অনুরূপ কার্য দ্বারা আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা দেয়া হয়েছে বলা হবে। এ আইনেও ১০ বছর শাস্তির বিধান করা হয়েছে।
আত্মহত্যা সংক্রান্ত কিছু মজার তথ্যঃ
১। মেয়েরা পুরুষদের চেয়ে তিনগুন আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিন্তু মরেনা। আর আত্মহত্যার হার মেয়েদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে বেশি(তবে বর্তমানে মেয়েদের আত্মহত্যার হার ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে)
২। যারা একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে তারা সাধারণত দ্বিতীয়বার আর সে মুখী হয়না।
৩। যুবক বয়সে মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা বেশি করে কিন্তু সফল বেশি হয় বয়ষ্করা।
৪। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বিশ মিনিটে একজন আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু তারপরও দেখা যায় তারা প্রতি দুইশ জনে একজন সফল হয়।
৫। বসন্ত ও শীতকালে আত্মহত্যার হার বেড়ে যায়।
৬। আত্মহত্যার চেষ্টার আগে যারা দার্শনিক কথা লিখে যায় তারা মূলত মরেনা কিন্তু যারা স্বাভাবিক খবর লিখে যায় তারা মরে।
৭। গণমাধ্যমে প্রকাশিত আত্মহত্যার বিবিরণী মানুষকে আত্মহত্যার জন্যে প্ররোচিত করে।
আত্মহত্যার ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিকে মনে রাখতে হবে,
আত্মহত্যা মানে, আইন লঙ্ঘন করা, অপরাধ করা।
আত্মহত্যা মানে, ধর্মীয় অনুশাসন অবজ্ঞা করা।
আত্মহত্যা মানে সমাজে পচনশীল ক্ষত বাড়িয়ে দেয়া, সমাজকে পেছনের দিকে ঠেলে দেয়া।
আত্মহত্যা কখনো প্রতিবাদের অস্ত্র হতে পারে না- প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। আত্মহত্যার ইচ্ছা, আগ্রহ জয় করতে হবে। জয় করার নামই জীবন। জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়া হচ্ছে কাপুরুষতা।
আত্মহত্যা মানে অন্যায়ের সাথে আপোষ করা।
আত্মহত্যা মানে খুব সহজে হার মানা।
বর্তমান সময়ে সমাজে আত্মহত্যা সংঘটিত হলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মিডিয়া। মিডিয়ার কারণে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বহমান আত্মহত্যার নির্মম ঘটনাগুলো জানতে পারছে সকলে। কি কারণে আত্মহত্যা ঘটেছে, পারিবারিক, সামাজিক কি অবক্ষয়ের কারণে আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত হচ্ছে আত্মহননকারী, সব জেনেও সহানুভূতি নিয়ে আমরা দাঁড়াচ্ছি আত্মহত্যাকারীর পাশে। দরদী মনের ব্যাকুলতার কারণে এমনটি করে থাকে মিডিয়াকর্মী কিংবা জনগোষ্ঠী। না! আত্মহত্যার পর সহানুভূতি দেখানো যাবে না আত্মহত্যাকারীকে। যদি আত্মহত্যাকারীকে হিরো কিংবা হিরোইন বানিয়ে তোলা হয় মিডিয়াতে। যে বিশাল জনগোষ্ঠী আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছে (৪.৬ শতাংশ এডাল্ট জনগোষ্ঠী), তারা প্ররোচিত হবে আত্মহত্যার জন্য। সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে অবক্ষয়ের পাশাপাশি এটাও আত্মহত্যার হার বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ।
হ্যাঁ! আসুন আমাদের দাঁড়াতে হবে আত্মহত্যা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির পাশে। আত্মহত্যার ঝুঁকি শনাক্ত করতে হবে স্বজনদের। ঝুঁকি শনাক্ত করে আত্মহত্যার পূর্বেই ভূমিকা রাখতে হবে আমাদের। কোন বিষন্নতা বা প্রতিবাদ নয়, আসুন একসাথে সকলে পৃথিবীতে বেঁচে থেকে বিষন্নতাকে জয় করি বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। আর কোন আত্মহত্যা নয়, আত্মউপলব্দি করি পৃথিবীর সকল সুন্দরের। অসুন্দরকে দুর করি মৃত্যুকে দুরে সরিয়ে। বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলি হাতে রেখে হাত। ধর্ম বর্ণ বা গোষ্টি নয়, আমাদের পরিচয় হোক আমরা সকলেই মানুষ। চাই স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি, স্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য আমরা আমাদেরকে প্রস্তুত করি। নিজেকে ভালবাসতে শিখি, যারা আপনাকে নিয়ে ভাবছে-ভালবাসছে তাদেরকে ভালবাসতে শিখি, অন্ততঃ তাদের জন্য হলেও বাঁচতে শিখি। প্রতিজ্ঞা করি আর আত্মহত্যা নয়, সুন্দর সমাজ গড়তে আত্মরক্ষায় নিয়োজিত করি নিজেকে এবং সমাজকে।
হাফিজুর রহমান
উপ-পুলিশ পরিদর্শক
ঢাকা রেঞ্জ মিডিয়া
বাংলাদেশ পুলিশ
Leave a Reply