মহাসড়কের ধামরাইয়ে প্রাইভেট কারে ছিনতাই, মুক্তিপন ও হত্যাকান্ডের অভিযোগে প্রাইভেটকারসহ দুইজনকে গ্রেফতারঃ এসপির প্রেস ব্রিফিং
শেখ এ কে আজাদ,নিজস্ব প্রতিবেদক,সাভার থেকেঃ
ঢাকা আরিচা মহাসড়কে ধামরাইয়ে একটি প্রাইভেট কারে করে হাত পাঁ বেধে ছিনতাই ও মুক্তিপন,হত্যাকান্ডের অভিযোগে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারসহ ২ সদস্য গ্রেফতার হয়েছে।বুধবার ১৯ ফেব্রয়ারি দুপুরে সাভার মডেল থানায় সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলা এসপি মারুফ হোসেন সরদার এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা আদালতে এসব ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে হত্যাকাণ্ডের পৃথক তিনটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়।
পরে এসব ঘটনার অন্তরালে ব্যবহৃত
প্রাইভেটকারসহ ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার সরদারকান্দি গ্রামের মুকিত খানের ছেলে শাহিন ওরফে সুহিন খান (৩৪) এবং মাদারীপুরের কালকিনি থানার পূর্বমাইজপাড়া গ্রামের ইস্কান্দার আলীর ছেলে মুর্তুজা (৩৪)।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জ জেলায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল শ্রী লিটন মাহাতোকে কৌশলে প্রাইভেটকারে উঠায় ছিনতাইকারীরা। এরপর পথিমধ্যে আরও ২/৩ জন ছিনতাইকারী যাত্রীবেশে একই প্রাইভেটকারে উঠে। পরে ওই পুলিশ সদস্যের হাত-পা বেঁধে তাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে পরিবারের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ছিনতাইকারীরা।
এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা (নং-৩৯) দায়ের করার হলে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ে প্রাইভেট কারে ছিনতাই, মুক্তিপন ও হত্যাকান্ডের অভিযোগে প্রাইভেটকারসহ দুইজনকে গ্রেফতার,সাভার মডেল থানায় বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার। ছবিঃসত্যের সংবাদ
পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর-২ পোস্ট অফিসের সামনে থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারসহ চালক মুর্তুজাকে গ্রেফতার করে। একইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের অন্য একটি দল চাঁদপুরের সরদারকান্দি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে শাহীন ওরফে সুহিন খানকে গ্রেফতার করে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি একইভাবে আবু নাঈম (৫৪) ও তার চাচাতে ভাই বেলায়েত হোসেনকে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে ফেলে ছিনতাইকারীরা। পরে তাদের এটিএম কার্ডের পিন নম্বর নিয়ে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ও বেলায়েতের মোবাইলের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫ হাজার টাকাসহ দুটি মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় চক্রটির সদস্যরা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, গত বছরের ১৮ অক্টোবর মানিকগঞ্জের বাসিন্দা নিরাপত্তা কর্মী আলাউদ্দিনকে (৪৫) যাত্রী হিসেবে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে জিম্মি করে। পরে টাকা-পয়সা না পেয়ে আলাউদ্দিনকে মারধর ও হত্যা করে ধামরাইয়ের জয়পুরা এলাকার পাল সিএনজি পাম্পের পার্শ্ববর্তী ইঞ্জিনিয়ার আবু তাহেরের বাড়ির কাছে ফেলে দেয়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি কৌশলে প্রাইভেটকারে যাত্রী উঠিয়ে ছিনতাই, মুক্তিপণ আদায়সহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। বিষয়টি জানার পর চক্রটিকে ধরতে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হলে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে চক্রটির দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুই সদস্যকে সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানান তিনি।
Leave a Reply