যুব মহিলা লীগের নেত্রী পারভিন ও তার মেয়ে সুলতানার বহু বিয়ে প্রতারণা ফাঁস
সত্যের সংবাদ ডেক্সঃ
সারাদেশে যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়ার অ’নৈতিক রসায়নের আলোচনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই আরেক কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের নেত্রী নাজমা পারভিন ও তার সুন্দরী মেয়ে কাজী রাজিয়া সুলতানার (২৯) ভয়াবহ বিয়ে প্রতারণা ফাঁস হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, লন্ডন প্রবাসী যু’বককে ছলে-বলে-কৌশলে ও অসহায়ত্ব দেখিয়ে সৌন্দর্যের মায়ায় ফাঁ’সিয়ে ২০১৮ সালের ১৬ মার্চ ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রীর সুন্দরী মেয়ে কাজী রাজিয়া সুলতানা। গত ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লন্ডনে রফিকুর রহমানের রেস্টুরেন্টে চাকরির জন্য যান রাজিয়া। তখনই পরিচয় হয় তার সঙ্গে। সুন্দরী রাজিয়া তার অসহায় অবস্থা ও সমস্যার কথা বলে রফিকুরের সঙ্গে প্রায়শই যোগাযোগ বজায় রাখেন। একপর্যায়ে রাজিয়াকে তার রেস্টুরেন্টে চাকরি দেন রফিক। পরে কৌশলে সুন্দরী রাজিয়া তার প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে নগদ অর্থ সহায়তা ও থাকা-খাওয়ার সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু ভোগ করেন।
জমতে থাকে রাজিয়ার প্রতারণাময় প্রেমের রসায়ন। কখনই প্রবাসী রফিকুর রহমান বুঝতে পারেননি যে কি ধরনের প্রতারণার জাল ফেঁসেছেন তিনি। প্রেমের খেলায় অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রাজিয়াকে প্রচন্ড বিশ্বাস ও ভালোবেসে ফেলেন লন্ডন প্রবাসী রফিক। একপর্যায়ে রাজিয়া রফিকুরকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাব গ্রহণও করেন তিনি। তবে একটুও বুঝতে পারেননি, চতুর রাজিয়া সুলতানার অন্তরের প্রতারণার কৌশল। লন্ডনে অবৈধভাবে থাকতে খুবই সমস্যা হচ্ছিলো রাজিয়ার। তাই রফিকুর তাকে দেশে গিয়ে বিয়ে করে লন্ডনে বৈধ নাগরিক হিসেবে নিয়ে যাওয়ার কথা দেন। সে কথা অনুযায়ী তারা ২০১৮ সালের ১৬ মার্চ ঢাকায় এসে দশ লাখ টাকা দেনমোহরে শাহিন কলেজ কমপ্লেক্স কাজী অফিসে বিয়ে ব’ন্ধনে আ’বদ্ধ হন। রাজিয়ার ইচ্ছে অনুযায়ী থাকার জন্য বনানীতে ২৫ শত স্কয়ার ফিটের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। সেখানেই শুরু হয় দু’জনের নতুন সংসার। বেশ ভালই চলছিলো সবকিছু। তখন পর্যন্ত ঘুনাক্ষরেও প্রতারণা বুঝতে পারেননি লন্ডন প্রবাসী রফিকুর। ব্যাবসার কাজে লন্ডনে আসা-যাওয়ার মাঝেই থাকতেন স্বামী রফিকুর। তাই দেশের সকল ব্যবসার ভার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে বুঝিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি প্রতি মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ দিতেন স্ত্রীকে। এছাড়াও দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে বেহিসেবে টাকা খরচ করতেন রাজিয়া ও তার মা নাজমা পারভিন। কিভাবে কতো টাকা স্ত্রীকে টাকা পাঠিয়েছেন সে তথ্য প্রমাণ গণমাধ্যমের হাতে রয়েছে।
রফিকুর বলেন, মা আর মেয়ে জামাইয়ের টাকায় সারাক্ষণ গাড়িতে চড়ে দাপিয়ে বেড়াতেন রাজধানীর অভিজাত এলাকা ও রেস্তোরাঁয়। এমন করে কয়েক মাস কাটার পরই বেরিয়ে আসে রাজিয়া ও তার পরিবারের ভ’য়াবহ প্র’তারণার রূপ। কারণে-অকারণে টাকার প্রয়োজন দেখানোসহ স্বামী রফিকুরের সঙ্গে বিভিন্ন ঝা’মেলা করতে শুরু করে স্ত্রী রাজিয়া। পরে হঠাৎ করেই ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বনানী বাসা থেকে কয়েক লাখ টাকার মা’লামাল ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী কাগজপত্র নিয়ে তার মায়ের বাসায় চলে যায়। বাড়ির দারোয়ান ও কেয়ারটেকার বা’ধা দিলেও মানেননি তিনি। উল্টো তাদেরকে হু’মকি দিলে ভ’য়ে তারা আর কিছুই বলতে পারেনি। এসব খবর শুনে ১৫ জানুয়ারি স্বামী রফিকুর রহমান ঢাকায় ফিরে আসেন। স্ত্রী রাজিয়াকে বিমানবন্দর আসতে বললে যাননি,এমনকি বাসাও যাননি। তবে একাধিকবার বিভিন্ন জায়গায় দেখা করেছেন। তার কী সমস্যা, জানতে চাইলে তিনি তার মায়ের দোহাই দিয়ে বলেন, লন্ডনের ভিসা না হলে তার মা তাকে যেতে দেবে না। রফিকুর প্রকৃত স’মস্যা এবং সেগুলো কি কি উপায়ে স’মাধান করবেন এসব বুঝিয়ে বললেও কোনো কথাই তার এই ছলচাতুরি আর মান ভা’ঙতে পারেনি। তবে এতো গণ্ডগোলের মধ্যেও টাকা নেওয়া ব’ন্ধ হয়নি। এরপর থেকে ঠিক মতো ফোন রিসিভ করাও ব’ন্ধ করে দেয় প্রায়। কয়েক দিন পরে রাজিয়ার মা যুব মহিলা লীগ নেত্রী নাজমা পারভিন ফোন রিসিভ করে অকথ্য ভাষায় গা’লিগা’লাজ করেন এবং হু’মকি দেন তার মেয়েকে ভিসা না করে যোগাযোগের চে’ষ্টা করলে তার অবস্থা খারাপ করে দেবেন। লন্ডন প্রবাসী স্বামী রফিকুর রহমান জানান, সর্বশেষ তার স্ত্রী রাজিয়া ৩০ জানুয়ারি রাতে তার বনানীর বাসায় এসে একান্তে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়ে যান এবং বলেন তার মা কিছু দিনের জন্য তাকে কোথাও নিয়ে যেতে পারেন। ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজিয়ার ফোন ও সকল যোগাযোগ মাধ্যম ব’ন্ধ পাওয়া গেলে পাগলের মতো স্ত্রীকে খুজতে থাকেন। রাজিয়ার মায়ের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অকথ্য ভাষায় গা’লিগা’লাজ করেন এবং আবার হু’মকি দেন।
তার বড় বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কয়েক দিন রাজিয়াকে একা থাকতে দাও, সময় হলে সে যোগাযোগ করবে। কিন্তু খোঁজ খবর নিয়ে রফিকুর রহমান যা জানলেন, তা শুনতে তিনি মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা পর্তুগাল প্রবাসী অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। প্রথম বিয়ে গো’পন করে কুমারী সেজে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ টাকা কাবিনে আমতলী মহাখালী কাজী অফিসে বিয়ে করেন এবং পর্তুগালের ওই নাগরিক ছেলেকে নিয়ে রাঙ্গামাটি ঘুরতে গেছেন। এমন প্র’তারণার কাহিনী শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পরে রফিকুরের। পরে তার বড় বোনের সঙ্গে আবার যোগাযোগ করলে সে রাজিয়ার আরেকটি বিয়ের কথা অ’স্বীকার করে। স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজনের এসব কার্যকলাপে ভ’য়াবহ প্র’তারণার শি’কার হয়েছেন বুঝতে পেরে বা’ধ্য হয়ে আদালতে মা’মলা করেন রফিকুর। পরে পর্তুগালের ওই নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এসব কিছুই জানতেন না এবং মা-মেয়ে মিলে তার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছে বলে জানান। পুরো ঘটনা জেনে নতুন জামাইও কথা বলা ব’ন্ধ করে দেন। এদিকে প্রবাসী রফিকুর রহমান মা’মলা করেছেন কথা শুনে রাজিয়ার মা যুব মহিলা লীগ নেত্রী নাজমা পারভিন দলীয় লোকজন নিয়ে রফিকুরের খোঁ’জে তার বন্ধুর বাসায় গিয়ে হু’মকি দেন। এসময় ঘরে ভা’ঙচুরও করেন। এসব বিয়ে-প্র’তারণার বিষয়ে কথা বলতে যুব মহিলা লীগ নেত্রী নাজমা পারভিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ক্ষি’প্ত হয়ে ওঠেন। তিনি সংবাদ ও মা’মলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে প্রতিবেদককে অকথ্য ভাষায় কথা বলেন এবং মা’মলা করারও হু’মকি দেন। আরও বলেন, আমার ও আমার মেয়ের বিষয়ে সংবাদ লেখার সা’হস কে দিয়েছে? তোমার পুরো নাম কি? বাবার নাম কি? এনআইডি নাম্বার দাও ইত্যাদি ইত্যাদি বলে শা’সিয়ে দেন।
তথ্য সূত্রঃ নাগরিক বার্তা ডট কম ও দৈনিক নতুন কাগজ
Leave a Reply