ডেক্স সংবাদঃ
করোনা মোকাবেলায় অবশেষে শেখ হাসিনা কঠোর হচ্ছেন। শুরু থেকেই শেখ হাসিনা সহনশীল আচরণ করছিলেন এবং অযোগ্যদের স’ম্পর্কে জেনেও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বরং এরকম একটি সংকট’কালীন সময়ে কাউকে বাদ দিলে একটি ভুল বার্তা যাবে- এমন একটি বার্তা সরকারের মধ্যে, এমন চিন্তা থেকেই শেখ হাসিনা মানবিক এবং সহনশীল আচরণ করেছিলেন সকলের সঙ্গে।
আর একারণেই করো’না মোকাবেলায় দায়িত্ব পালন করা একাধিক সংস্থা, বিভাগের মধ্যে দায়িত্বহীনতা, সমন্বয়হীনতার কারণেও প্রধানমন্ত্রী কঠোর হননি; বরং তাঁদেরকে শুধরে দিয়েছেন, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য সহানুভূতির গাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই সহানুভূতি এবং সহম’র্মিতাকে কাজে লাগাতে পারেনি সরকারের ভেতর কাজ করা একটি গোষ্ঠী
বরং তাঁরা এটাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে দায়িত্ব পালনে আরো উদাসীন হয়েছেন এবং ভুল তথ্য দিয়ে সরকারকে বি’ভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। এই বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থানে যাচ্ছেন বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, করো’না মোকাবেলার শুরু থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নজিরবিহীন ব্যর্থতা এবং দায়িত্বহীনতার প্রমাণ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবই জানতেন এবং বুঝতেন, কিন্তু তারপরেও তাঁরা যেন দায়িত্ব পালন করতে পারেন সেজন্য তাঁদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেছেন, তাঁদেরকে সাহস জুগিয়েছেন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বরং এখন করো’না মোকাবেলার ১০০ তম দিন অ’তিবাহিত করার পরেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাঝে গা ছাড়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং এখন যেন তাঁরা হাল ছেঁড়ে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি কাম্য নয় এবং এজন্য প্রধানমন্ত্রী খুব শীঘ্রই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরে বেশ কিছু পরিবর্তন এবং রদবদল আনতে পারেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মক’র্তার বি’রুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দূর্নীতির অ’ভিযোগ এবং দায়িত্ব পালনে অক্ষমতা, অযোগ্যতার অ’ভিযোগ রয়েছে। এদের বি’রুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে। কারণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভুল প্রক্ষেপণ, দায়সারা ভাবের জন্যেই করো’না পরিস্থিতির এই ভ’য়াবহতা তৈরি হয়েছে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন।
এজন্য এখন আর বিলম্ব না করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভেতরে শুদ্ধি অ’ভিযান করা হতে পারে বলে এক একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র আভাস দিয়েছে। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়-ও করো’না পরিস্থিতি মোকাবেলার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখিয়েছে এবং পরিস্থিতির ভিত্তিতে যখন যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত ছিল, তখন সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।
সবথেকে বড় কথা হচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনাগুলো দিচ্ছিল, সেই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উদাসীনতা দেখিয়েছে। বরং শুধুমাত্র কেনাকা’টা এবং অন্যান্য বিষয়েই তাঁদের বেশি মনোযোগ ছিল। এই বিষয়গুলো সরকারের নীতিনির্ধারকদের গোচরে এসেছে এবং এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এই করো’না সঙ্কটের সময় যারা বিভিন্ন জিনিসপত্র সাপ্লাই দিয়েছে এবং যাদের বি’রুদ্ধে দূর্নীতির অ’ভিযোগ রয়েছে তাঁদের ব্যাপারে ত’দন্তের জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ত’দন্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যারা এন-৯৫ মাস্কসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র সাপ্লাই দিয়েছে, তাঁরা যেন বিল না পান সে ব্যাপারেও সরকারের উর্ধ্বতন মহল থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একাধিক সূত্র বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী বাজেট পাশ এবং অর্থনীতিকে সচল করার বিষয়টি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু এখন যখন করো’না পরিস্থিতি ভ’য়াবহ আকার ধারণ করছে, তখন করো’না মোকাবেলার জন্য যা যা করা দরকার সেটাই প্রধানমন্ত্রী করবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হচ্ছে বলেও দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নয়, করো’না মোকাবেলায় আরো কিছু জায়গায় গাফিলতি এবং দায়িত্ব পালনে অবহেলা পাওয়া গেছে। যারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে এবং উদাসীনতা দেখিয়েছেন তাঁদের ব্যাপারেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply