ধামরাইয়ে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য আটক করেছে র্যাব
ধামরাইঃধামরাইয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য সন্দেহে পাঁচ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আটককৃতদের নিকট হতে উগ্রবাদী বই, লিফলেট, ডিজিটাল কনটেন্টসহ মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪ এর এএসপি জিয়াউর রহমান চৌধুরী।
আটককৃতরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের মো. মিজানুর রহমান পলাশ (৩৫), মো. দুরুল হুদা (৪৪), মো. আব্দুর রশিদ (২১), মো. রাসেল (৩৭) ও মো. আব্দুল হাই (৪০)।
র্যাব সূত্র জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার ধমরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকায় রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়। তারা সাভার ও ধামরাই এলাকার ‘সাথি-বন্ধু’দের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ ও বৈঠক করার জন্য ধুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিলিত হওয়ার চেষ্টা করছিল।
সন্দেহভাজন এই জঙ্গিদের সম্পর্কে এএসপি জিয়াউর রহমান বলেন, তারা সদস্যদের কাছ থেকে ইয়ানত (তহবিল) সংগ্রহ করতেন। এই দলের সদস্যরা বিভিন্ন প্রটেক্টিভ অ্যাপ ব্যবহার করে গোপন গ্রুপ তৈরি করে উগ্রবাদী সংবাদ, বই, উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করে এমন ভিডিও আপলোড ও শেয়ার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করছিল। এদের মধ্যে চার জন আনসার আল ইসলাম জঙ্গি সংগঠনের নতুন সদস্য সংগ্রহ শাখার কর্মী। সদস্য সংগ্রহের জন্য তারা জেলায় জেলায় ভ্রমণ করতেন।
আটকদের মধ্যে মিজানুর রহমান পলাশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সংগঠনের সক্রিয় সদস্যদের মধ্যে অন্যতম এবং তিনি চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় আনসার আল ইসলামের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে আসছেন বলে স্বীকার করেছেন। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। মো. দুরুল হুদা পেশায় শিক্ষক। তিনি জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের একজন সক্রিয় সদস্য এবং দীর্ঘদিন সংগঠনে জড়িত রয়েছেন। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আনসার আল ইসলামের বিভিন্ন ভিডিও, বইপত্র, মোবাইল অ্যাপস সংগ্রহ করে নতুন সদস্যদের মোটিভেট এবং অর্থ সাহায্য করতেন তিনি।
মো. আব্দুর রশিদ পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। তিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকার অন্যতম সমন্বয়ক। মো. মিজানুর রহমান পলাশের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে তিনি যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি আনসার আল ইসলামের একজন সক্রিয় সদস্য।
মো. রাসেল পেশায় একজন ওয়াকর্শপ মিস্ত্রী। মো. মিজানুর রহমান পলাশ এবং মো. দুরুল হুদার অনুপ্রেরণায় আনসার আল ইসলামের একনিষ্ঠ সদস্য হিসাবে অনেকদিন ধরে কাজ করে আসছেন। তিনি সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা উত্তোলন করে দুরুল হুদাকে দিতেন এবং আনসার আল ইসলামের অর্থ শাখার একজন সক্রিয় সদস্য।
আব্দুল হাই পেশায় পেশায় একজন গ্রাম্য চিকিৎসক। তিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকার অন্যতম সমন্বয়ক মো. মিজানুর রহমান পলাশের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন।
র্যাব-৪ এর এএসপি জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, আটকরা নিয়মিতভাবে তাদের সদস্যদের কাছ থেকে মেহেনতের মাধ্যমে ইয়ানত সংগ্রহ করে। এই দলের সদস্যরা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বা ল্যাপটপের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রটেক্টিভ অ্যাপস ব্যবহার করে বিভিন্ন গোপন গ্রুপ তৈরি করে উগ্রবাদী সংবাদ, বই, উগ্রবাদে উৎসাহ মূলক ভিডিও আপলোড ও শেয়ার করে নিয়মিত নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন। এদের মধ্যে চারজন আনসার আল ইসলাম জঙ্গি সংগঠনের নতুন সদস্য সংগ্রহ শাখার কর্মী। তারা নিয়মিত ০৮/১০ জন দেশের বিভিন্ন জেলায় তাদের দলের সদস্যদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের জন্য গমন করে নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহ করে থাকে।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পলাতকদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা। ধামরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান জিয়াউর রহমান।
Leave a Reply