ফিরে পেলেন বিক্রি করা সন্তানকে মা : লালন-পালনের দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাষক আব্দুল মতিন

ফিরে পেলেন বিক্রি করা সন্তানকে মা : লালন-পালনের দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাষক আব্দুল মতিন

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা শহরের একটি ক্লিনিকে সিজার অপারেশনের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা জানার পর জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে হতভাগি মা ফিরিয়ে পেলেন তার সন্তানকে। অতঃপর সেই শিশুটি মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়ে লালন-পালনের জন্য নিজেই দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক। মাতৃহারা শিশুটি মায়ের কাছে ফিরে দেয়ার পর গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের উদ্যাগে, মা আঙ্গুরী বেগম ও তার সন্তানের চিকিৎসাসহ ত্রান ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। গাইবান্ধা সদর উপজেলা ঘাগোয়া ইউনিয়নের শোলাগাড়ি গ্রামের শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে গিয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন এসব সহায়তা প্রদান করেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসূন কুমার চক্রবর্তী, সহকারী কমিশনার (ভুমি) নাহিদুর রহমান, পিআইও আনিছুর রহমান , প্রেসক্লাব যুগ্ম সম্পাদক আবেদুর রহমান স্বপনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ।

উল্লেখ্য, গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের শোলাগাড়ি গ্রামের দিনমজুর শাহজাহান মিয়ার গর্ভবর্তী স্ত্রী আমেনা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সিজারিয়ানের জন্য জেলা শহরের যমুনা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিজারের পর সন্তানসহ মা ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভর্তি থাকেন। পরে তাকে রিলিজ দেয়ার সময় ক্লিনিকের পাওনা হয় ১৬ হাজার টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করার মত সামর্থ্য ছিল না শাহজাহান মিয়ার। এই অবস্থায় তিনি তার নবজাত শিশুটিকে সাদুল্লাপুর উপজেলার মনোহোরপুর গ্রামের এক নি:সন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দিয়ে ক্লিনিকের পাওনা পরিশোধ করেন। কিন্তু সন্তান বিক্রি করার ঘটনায় মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। মা অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পড়ে থেকে শুধু বিলাপ করে করেন। গত শনিবার বিকেলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষনিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসূণ কুমার চক্রবর্ত্তী ও এনডিসি এসএম ফয়েজ উদ্দিনকে সন্তান হারা বাবা-মার কাছে পাঠান। পরে তাদের কাছ থেকে সন্তান গ্রহণকারীর পরিচয় জানতে পেরে সেখানে গিয়ে ওইদিন রাতে ওই সন্তানকে তাদের জিম্মায় নিয়ে নেন। এসময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সন্তান গ্রহণকারী ওই ব্যক্তিকে ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেয়া হয়। পরে সেখান থেকে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি দল ওই শিশুটির বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মায়ের কোলে তুলে দেন শিশুটিকে। এসময় ওই পরিবারকে চাল, ডাল তেল, শাড়ী, লুঙ্গি ও নগদ টাকা তুলে দেয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *