মালয়েশিয়ার সরকার ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বেধে দেয়া সময়ে অবৈধ অনেক বাংলাদেশী দেশে ফিরে না আসায় বিপাকে পড়েছে। ১লা জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২২৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে ৭৮জন বাংলাদেশি রয়েছে বলে জানা গেছে। অনেক বাংলাদেশী এখন সেখানে গ্রেফতার আতঙ্কে আছেন। অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফিরে যাবার জন্য মালয়েশিয়ার সরকার সুযোগ দিয়েছিলো সে অনুযায়ী দেশে ফেরার টিকিট এবং মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র লাগবে। ইমিগ্রেশনের ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হলে সাথে বিমানের টিকিটও দিতে হয়। এছাড়া জরিমানা হিসেবে ৭০০ রিঙ্গিত অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ হাজার টাকা প্রদান করতে হবে। অবৈধভাবে বসবাস করা বহু বাংলাদেশী অর্থ সংকটের কারণে সেটি করতে পারেননি তারা। আবার যারা বিমানের টিকিট জোগাড় করেছেন তারাও মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পাননি।
এজন্য ইমিগ্রেশন অফিসে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মালয়েশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন আহমেদুল কবির, যিনি সাংবাদিকতার সাথেও জড়িত।তিনি বলেন, “ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ১১ টি প্রদেশে ৮০টি কাউন্টার করেছিল। প্রতিদিন গড়ে ৪০০ স্পেশাল পাস ইস্যু করেছে। প্রতিদিন হাজার-হাজার অবৈধ অভিবাসী স্পেশাল পাস নেবার জন্য কাউন্টারে ভিড় করেছে।”
“অনেকে টাকার অভাবে টিকিট করতে পারেননি। আবার অনেকে টিকিট করলেও স্পেশাল পাস নিতে পারেননি,” বলছিলেন আহমেদুল কবির।পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ডিসেম্বর মাসের শেষ দুই সপ্তাহে বাংলাদেশ বিমান মালয়েশিয়া থেকে প্রতিদিন অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
একজন অবৈধ অভিবাসী দেশে ফিরে আসার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রতিটি বিমান টিকিটে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দিয়েছে মালোশিয়ার সরকার। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি পুরোপুরি সামলানো যায়নি।ছাত্র ভিসা নিয়ে পাঁচ বছর আগে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন বাংলাদেশের জুবায়ের আহেমদ। সে ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পর কয়েক বছর আগে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার যে সুযোগ দিয়েছিলেন, তাতে আবেদন করেন জুবায়ের আহেমদ। কিন্তু লাভ হয়নি। তাকে দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে।বিমানের টিকিট জোগাড় করার পরেও নির্দিষ্ট তারিখে বাংলাদেশে আসতে পারেননি তিনি। ভিড়ের কারণ মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে দেরি হয়েছে জুবায়ের আহেমদ।
জুবায়ের আহমেদ বলেন, “স্পেশাল পাস নেবার জন্য আমি ভোর সাড়ে তিনটায় গিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসে পৌঁছি। স্পেশাল পাস না পেয়ে অনেকে কান্নাকাটি করছে সে। ”
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে ছয় লাখের বেশি বাংলাদেশি বসবাস করছে। তবে অবৈধদের বিষয়ে তাদের কোন ধারণা নেই।ঐ কর্মকর্তা দাবি করেন, যারা বাংলাদেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক তারা সবাই মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পেয়েছেন। কিন্তু সেখানকার বাংলাদেশিরা বলছেন, অর্থ সংকটের কারণে অনেকে যে বিমান টিকিট কিনতে পারেনি এবং জরিমানার টাকা জোগাড় করতে পারেননি সে ধারণা নেই বাংলাদেশ দূতাবাসের। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ দূতাবাসকে অনুরোধ জানিয়েছেন অবৈধ অভিবাসী বাংলাদেশী অনেকে।সুত্র-অনলাইন।
Leave a Reply