Category: ধর্ম

  • আত্মীয়-স্বজনের চেয়ে প্রতিবেশির হক কি বেশি নাকি কম? জেনে নিন ইসলাম কি বলে

    আত্মীয়-স্বজনের চেয়ে প্রতিবেশির হক কি বেশি নাকি কম? জেনে নিন ইসলাম কি বলে

    আত্মীয়-স্বজনের চেয়ে প্রতিবেশির হক কি বেশি নাকি কম? জেনে নিন ইসলাম কি বলে

    ইসলামঃ
    আত্মীয়-স্বজনের চেয়ে প্রতিবেশির হক কি বেশি?
    প্রতিবেশির চেয়ে আত্মীয়-স্বজন প্রতিটি মানুষের কাছেই অনেক আপন। কিন্তু আত্মীয়-স্বজন কখনোই প্রতিবেশির চেয়ে বেশি উপকারে আসে না। কারণ আত্মীয়-স্বজন সবসময় ধারে-কাছে থাকে না। প্রতিবেশিরাই বিপদে-আপদে, দুঃখ-দুর্দশায় একে অপরের কাছে প্রথমে এগিয়ে আসে। প্রতিবেশির যথাযথ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই সামাজিক শান্তি নিশ্চিত হয়।

    বিপদের সময় আত্মীয়-স্বজনের আগে প্রতিবেশিরাই খোঁজ-খবর নেয় এবং সেবাযত্ন করে থাকে। শুধু তা-ই নয়, সামাজিক কাজ-কর্ম, বিয়ে-শাদীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আত্মীয়-স্বজনের চেয়ে প্রতিবেশিরাই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।

    যদিও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীদেরকে কুরআন-হাদিসে পাকে অভিশপ্ত বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তথাপিও প্রতিবেশির সঙ্গে সদাচরণের ব্যাপারে কুরআনে পাকে সুস্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-‘কাছের প্রতিবেশি, দূর প্রতিবেশি এবং সঙ্গী-সাথীদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার কর।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৩৬)

    প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হক বা অধিকার হিসেবে প্রতিবেশিকে ৩ ভাগে বিভক্ত করেছেন-> এক হক বিশিষ্ট প্রতিবেশি। যারা আত্মীয় নয় আবার মুসলিমও নয়।> দুই হক বিশিষ্ট প্রতিবেশি। যারা আত্মীয় নয়, তবে মুসলিম।> তিন হক বিশিষ্ট প্রতিবেশি। যারা আত্মীয় এবং মুসলিম।

    প্রতিবেশি অমুসলিম হলেও একে অন্যের সহযোগী। একে অপরের সঙ্গে চলা-ফেরা, ওঠা-বসায় পাস্পরিক সহযোগিতা করে থাকে।

    আবার প্রতিবেশি মুসলিম হলে এমনিতেই তার দু’টি হক প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। একটি হলো সে প্রতিবেশি হিসেবে খোঁজ-খবর রাখার অধিকার রাখে। আবার মুসলিম হওয়ার কারণে হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী এমনিতেই এক মুসলমানের সঙ্গে অপর মুসলমানের একাধিক ৬টি হক জড়িত বলে হাদিসে প্রিয়নবি ঘোষণা করেছেন।

    আবার প্রতিবেশি যদি আত্মীয় হয় তবে সে ক্ষেত্রে উপরোল্লেখিত অধিকারগুলোর সঙ্গে আত্মীয়তার হকও মিলে যায়। কেননা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর প্রতি কুরআন এবং হাদিসের একাধিক স্থানে ভয়াবহ ক্ষতির ঘোষণা এসেছে।

    সুতরাং প্রতিবেশি সঙ্গে মিলেমিশে থাকা, তাদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ করা প্রত্যেকের মুসলমানেরই নৈতিক দায়িত্ব। কেননা কাছের এবং দূরেরসহ সব প্রতিবেশির সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা।

    মনে রাখতে হবেপ্রতিবেশিকে কষ্ট দেয়া ঈমানের পরপন্থী কাজ। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন– যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশিকে কষ্ট না দেয়।’ (মিশকাত)শুধু এ হাদিসই নয়, বরং প্রিয়নবি ৩বার শপথ করে বলেছেন– আল্লাহর শপথ! সে ব্যক্তি ঈমানদার নয় (৩ বার এ শপথ করার পর সাহাবায়ে কেরাম) প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কে সেই ব্যক্তি? জবাবে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যার প্রতিবেশি তার অনিষ্ট বা ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকতে পারে না।’ (মিশকাত)

    সুতরাং কুরআনের নির্দেশ এবং হাদিসের নির্দেশনা থেকে বুঝা যায়, প্রতিবেশির হক বা অধিকারের প্রতি সেভাবেই লক্ষ্য রাখা উচিত যেভাবে প্রতিবেশিদের একজন অপর জনের বিপদ-আপদে সাহায্যের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে।

    বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আত্মীয়-স্বজনের চেয়েও প্রতিবেশিরাই একে অপরের উপকারে আসে। যদিও আত্মীয় স্বজনের হক বেশি কিন্তু সামাজিক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রতিবেশির হক বা গুরুত্বও কম নয়। বরং আত্মীয়-স্বজনের অধিকারের চেয়ে প্রতিবেশির প্রতি দ্বায়িত্ববোধ অনেক ক্ষেত্রেই বেশি।

    তাই প্রতিবেশির সঙ্গে সদ্ব্যহার করার পাশাপাশি তাদের সামনে-পেছনে মঙ্গল কামনা করা, তাদের কাউকে কোনো ব্যাপারে কষ্ট না দেয়া। সব সময় একে অপরের উপকারের মানসিকতা পোষণ করা। গরিব ও অসহায় প্রতিবেশিকে ধিক্কার বা অবহেলা না করে তাদের প্রতি কোমল হওয়ার পাশাপাশি সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা করা।

    প্রিয়নবির এ কথার ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে যে-‘ওই ব্যক্তি ঈমানদার নয় যে তৃপ্তিসহকারে খাবার গ্রহণ করে অথচ তার প্রতিবেশি তার পাশেই অভুক্ত, খাদ্যাভাবে পড়ে থাকে।’

    আল্লাহ তা্আলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক প্রতিবেশির অধিকারগুলোর যথাযথ সম্মান, সম্পর্ক বজায় রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন

  • কালোজিরা সকল রোগের ওষুধ, ক্যা’ন্সারের রোগীকে কালোজিরা খাওয়ানো হয়না কেন?

    কালোজিরা সকল রোগের ওষুধ, ক্যা’ন্সারের রোগীকে কালোজিরা খাওয়ানো হয়না কেন?

    কালোজিরা সকল রোগের ওষুধ, ক্যা’ন্সারের রোগীকে কালোজিরা খাওয়ানো হয়না কেন?

    হেল্থ ডেক্সঃ
    একটা বক্স হাতে FBS এর দিকে আরজুকে যেতে দেখলাম। ডাক দেবার পর থামলে জিজ্ঞেস করি, কই যাচ্ছিস?
    আরজু বললো, ক্যান্সার আক্রান্ত এক মায়ের জন্য টাকা তুলতে যাচ্ছে সে।
    এরকম জনহিতকর কাজে সবসময়ই এগিয়ে আসে আরজু, তবে কাউকে বলেনা, এমনকি আমাকেও যেতে বলেনা। ভাবলাম এমনিতেই তো ফ্রি আছি, তাই আরজুর সাথে গেলাম এক ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের জন্য টাকা তুলতে।

    সবার কাছে গিয়ে ঐ অসুস্থ মায়ের দূর্দশার কথা বলতে থাকলাম।যে যেরকম পারছে দানবক্সে টাকা দিচ্ছে, কেউ ১০ টাকা, কেউ ২০ টাকা, আবার একটু আগে একজন ১০০০ টাকারও একটা নোট দিলেন।
    ডাকসুর সামনে যেতে বিপ্লব ভাইকে দেখলাম।সিগারেটের ধূয়া আকাশের দিকে ছেড়ে ঐ ধোয়ার দিকে তাকিয়ে আছেন।

    বিপ্লব ভাইয়ের কাছে গিয়ে একটু কথাবার্তা বলে ক্যান্সার আক্রান্ত ঐ মায়ের জন্য টাকা চাইলাম।
    বিপ্লব ভাই হেসে বললেন, “এই ১০ লক্ষ টাকা তুলে আর কী করবা তার চেয়ে বরং ঐ মা’কে সামান্য কালোজিরা খাওয়াও।ঠিক হয়ে যাবেন।”
    এরকম মুহূর্তে বিপ্লব ভাইয়ের মজা নেওয়া দেখে আমার কিছুটা বিরক্ত লাগলো, বেচারা সিচুয়েশনও বুঝেননা।বিরক্তির সুরে বললাম, “ভাই এগুলো কি বলছেন,ক্যান্সার হইছে এর মধ্যে কালোজিরা খাইয়ে কি হবে?

    বিপ্লব ভাই হাসলেন, হাসি থামিয়ে বললেন, “তোমাদের নবী নাকি বলছেন কালোজিরা সকল রোগের ওষুধ (!) তাহলে আবার টাকা তুলে ক্যান্সার রোগীদের সাহায্য করার দরকার কি?কালোজিরা খাওয়ালেই তো হয়।”

    বিপ্লব ভাই যেটা বলছেন, সেটাতো আসলেই সত্যি। ছোটবেলায় এরকম ওয়াজ শুনেছিলাম যে, কালোজিরা খাইলে সব রোগ কমে যায়, তাহলে ক্যান্সার রোগীকে কালোজিরা খাওয়ানো হয়না কেন? নাকি এই হাদীসটি অযৌক্তিক!

    আরজু বিপ্লব ভাইকে পাল্টা জিজ্ঞেস করলো, “আচ্ছা ভাই,আপনি কি এই হাদীসটা কোনো হাদীস গ্রন্থ থেকে পড়েছেন, কিংবা কোনো হাদীসের এপস থেকে পড়েছেন?”
    বিপ্লব ভাই অনেকটা রেগে গিয়ে বললেন, “তার মানে,আমি কি মিথ্যা বলছি? এটা সহীহ বুখারীর হাদীস।”
    আরজু বললো, “ভাই আমি ঐটা বলিনি, হাদীসটা সহীহ না জাল।আমি জিজ্ঞেস করছি এই হাদীসটা আপনি কোথায় থেকে জানছেন? মুক্তমনা ব্লগ থেকে নাকি হাদীসের বই থেকে?”

    বিপ্লব ভাইয়ের কন্ঠ এখন একটু নরম হলো, তিনি বললেন, “আমি ব্লগ থেকে জানছি।”
    আরজু হাসলো, “আমি জানতাম এরকমই হবে।আপনারা হাদীস শিখেন মুক্তমনা ব্লগে ঢুকে, হাদীসের এতগুলো বই বাদ দিয়ে যেখানে ইসলামের বিদ্বেষী লেখালেখি হয় সেখানে যান। হাদীস শিখতে।”

    আরজুর কথাশুনে বিপ্লব ভাই সত্যি সত্যি রেগে গেলেন, আরজুকে শাসিয়ে বললেন, “হইছে হইছে এবার আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।ক্যান্সার রোগীকে তোমাদের নবীর কথামতো কালোজিরা খাওয়াও না কেন?”
    আরজু বললো, “আপনার বলা মিথ্যা হাদীসটির সংশোধন আগে করে নেই। নবী সা: বলেছেন, কালোজিরা সাম ব্যতীত সকল রোগের উপশম (healing)। সাম মানে হলো মৃত্যু। (বুখারী: ৫৬৮৮, তিরমিযী ২০৪১, ইবনু মাজাহ ৩৪৪৭)।
    ভালো করে দেখুন এখানে ওষুধ বলা হয়নি, বলা হয়েছে উপশম/healing। এখন বলুন উপশম আর ওষুধ কি এক হয়?”

    নিজের ভূয়া তথ্যের জালে নিজেই আটকে গিয়ে বিপ্লব ভাইয়ের মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বের হচ্ছেনা।
    আরজু বলে চললো, “তবে কালোজিরাতে এমন সব উপাদান আছে যা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের পথপ্রদর্শক ইবনে সিনা তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘কানুন ফিত তিবব’ (Canon Of Medicine) গ্রন্থে বলেছেন, কালোজিরা দেহের প্রাণশক্তি বাড়ায় এবং এর মধ্যে শতাধিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে যার মধ্যে ২১ শতাংশ প্রোটিন, ৩৮ শতাংশ শর্করা, স্নেহ পদার্থ ৩৫ শতাংশ এবং বাকি অংশ ভিটামিন ও খনিজ।”

    বিপ্লব ভাই বললেন, এগুলো তো তোমদের নবীর হাদীস ডিফেন্স করতে গিয়ে মুসলিম বিজ্ঞানীর কথা।তিনি তো কালোজিরার পক্ষেই সাফাই গাইবেন।
    আরজু হাসলো, “আপনাদের নিয়ে পারিও না! আমেরিকার বিখ্যাত ডাক্তার জোসেফ মেরকোলার (Joseph Mercola) নাম শুনছেন?”

    বিপ্লব ভাই না সূচক মাথা নাড়লেন।
    আরজু বলে চললো, উনি হলেন আমেরিকার একজন বিখ্যাত ডাক্তার। Fat for fuel:A Revolution, The No-Grain Diet এরকম কয়টি বিখ্যাত বইও লিখেন।
    কালোজিরা নিয়ে ৬৫০ টা রিসার্চ করা হয় উনার অধীনে। এই রিসার্চ এর সমাপ্তীতে তিনি বলেন,কালোজিরার মধ্যে ফার্মাকোলজিকাল কমপক্ষে ২০ টা উপাদান আছে।
    তারমধ্যে থাইমোকুইনইন (Thymoquinone) হলো এন্টি-ক্যান্সারের জন্য ব্যবহৃত উপাদান।
    কালোজিরার মধ্যে এই থাইমোকুইনইন উপাদানটি পাওয়া যায়।

    অক্সিডিটিভ স্ট্রিস (Oxidative Stress) ডায়াবেটিস নিরোময়ে ব্যবহৃত হয়।
    কালোজিরার মধ্যে এই উপাদানটি ও পাওয়া যায়।
    বিপ্লব ভাইয়ের হাতের সিগারেটের শেষ টান দিলেন।
    আরজু বললো, “নবী সা: বলেননি রোগ হলে কালোজিরা খেতে, তিনি বলেছেন কালোজিরা খেতে যাতে সেটি রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে আরো শক্তিশালী করে। কিন্ত হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আপনি বলছেন ওষুধের কথা!”

    সিগারেট ফেলে দিয়ে বিপ্লব ভাই পকেট থেকে ১০ টাকা বের করে দানবক্সে রাখলেন।
    আমি বললাম, বিপ্লব ভাই! সিগারেটের পকেটে কিন্ত লেখা আছে, ‘Smoking causes Cancer’
    তাই ধূমপানও করুন, কালোজিরাও খান।
    আমার কৌতুক শুনে বিপ্লব ভাই হাসলেন।
    আমরা চললাম পরবর্তী জনের কাছে,
    “ভাই, আমাদের বন্ধুর মা ক্যান্সারে আক্রান্ত, একটু যদি সাহায্য করতেন…”
    লেখক ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থী

  • নারী-পুরুষের ধর্মীয় নির্দেশ মোতাবেক পথচলা

    নারী-পুরুষের ধর্মীয় নির্দেশ মোতাবেক পথচলা

    নারী-পুরুষের ধর্মীয় নির্দেশ মোতাবেক পথচলা

    ইসলামঃনারীর নিরাপদ পথচলায় ধর্মীয় বিধান ও দিক-নির্দেশনা মেনে চলার বিকল্প নেই। আল্লাহ তাআলা মানুষকে স্বচ্ছ বিবেক-বুদ্ধি দান করেছেন। বিবেক-বুদ্ধিকে সদা জাগ্রত রাখার জন্য কুরআনুল কারিমের অসংখ্য আয়াতে নারী-পুরুষ সবাইকে তাকওয়ার অধিকারী হতে বলেছেন। কারণ তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় মানুষকে উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন থেকে হেফাজত করে।

    ঘরে-বাইরে, পাড়া-মহল্লায় কিংবা চলার পথে বিশ্বব্যাপী নারীরা অহরহ যৌন হয়রানিসহ নানা সমস্যায় পড়ছে। অথচ আল্লাহ তাআলা পুরুষদেরকে নৈতিকতা বিবর্জিত কাজকে নিরুৎসাহিত করেছেন। নারীদের কল্যাণে পুরুষরা যাতে নিজেদেরকে সংযত করে কুরআনে সে নির্দেশ প্রদান করছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

    ‘হে রাসুল!) ঈমানদার পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটা তাদের জন্য অধিক পবিত্র।’ (সুরা নুর : আয়াত ৩০)
    আল্লাহ তাআলা নারী-পুরুষের জন্য আলাদা আলাদা কর্মনীতি পেশ করেছেন। জীবন পরিচালনায় এক দিকে যেমন পুরুষদেরকে নারীদের প্রতি কুদৃষ্টি ও ধ্যান-ধারণার নিষেধ করেছেন। আবার নারীদেরকে পুরুষের সামনে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন।

    নারী-পুরুষ উভয়ের কল্যাণে আলাদা আলাদা আদেশ, নিষেধ, উপদেশ বর্ণনা করেছেন। শুধু পুরুষের জন্য আইন প্রণয়ন করে যেমন নারীর নিরাপদ পথচলা নিশ্চিত করা যাবে না। তেমনি নিরাপদ পথচলায় নারীর জন্যও রয়েছে করণীয়। ঘরের বাইরে নারীদেরকে শালিন ও সভ্য পোশাকে চলতে হবে। যাবতীয় উচ্ছৃঙ্খলতাও পরিহার করতে হবে। তাইতো আল্লাহ তাআলা নারী-পুরুষ উভয়কে লক্ষ্য করে ঘোষণা করেন-

    ‘হে বনি আদম! আমি তোমাদের জন্য এমন পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থানকে আবৃত করে রাখবে এবং যা হবে (তোমাদের জন্য) ভূষণ। আর পরহেজগারির পোশাক, এটিই সর্বোত্তম।’ (সূরা আরাফ : আয়াত ২৬)
    পুরুষরা বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে বিভিন্ন কাজে অবস্থান করে। তাদের এ অবস্থানকালীন সময়ে কোনোভাবেই যেন কোনো অন্যায় সংঘটিত না হয়। রাস্তার হক নষ্ট না হয়, আনন্দ-বিনোদনে নারীরা যাতে হেয় কিংবা আক্রমণের শিকার না হয়। সে জন্য কুরআন হাদিসে এসব নির্দেশনা ও তাগিদ দেয়া হয়েছে। হাদিসে এসেছে-

    রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাকো। অগত্যা যদি রাস্তাঘাটে বসতেই হয়, তখন রাস্তার হক আদায় করবে। রাস্তার হক হলো- তোমরা তোমাদের চোখকে অবনত রাখবে, কাউকে কষ্ট দেবে না, কেউ সালাম দিলে তার উত্তর দেবে, সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে।’ (বুখারি)

    হাদিসের নির্দেশনায় চোখ নিচু রাখার অর্থই হলো কোনো নারী যেন তার কুদৃষ্টির শিকার না হয়। নারীর প্রয়োজনে পথ চলায় যেন কোনো হয়রানির শিখার না হয়।
    বিশেষ করে নারীর নিরাপদ পথচলায় করণীয় হলো– কোনো নারীই ঘরের বাইরে উগ্র পদচারণা কিংবা চলাফেরা না করা। কোনো পর পুরুষের সঙ্গে আবেদনময়ী স্বরে কথা না বলা। ব্যক্তিগত পারিবারিক কিংবা চাকরির প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন রাস্তায় চলাফেরায় নম্র ও সতর্ক থাকতে হবে। অন্য পুরুষের (গায়রে মাহরাম) সঙ্গে আবেগ তথা দরদি স্বরে কথা না বলা সর্বোত্তম।

    – সুস্থ সংস্কৃতি ও পারিবারিক বন্ধন, পরস্পরের প্রতি সঠিক মর্যাদা ও মূল্যবোধের প্রতি সম্মান দেখানোসহ সবক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা জরুরি। ধর্মীয় অনুশাসন ও নৈতিক শিক্ষাই উচ্ছৃঙ্খল ও বেহায়াপনামুক্ত সমাজ উপহার দিতে পারে।
    – পর্দার সঙ্গে পথচলা নারীর জন্য সর্বোত্তম কাজ। পর্দার বাস্তবায়নই নারী-পুরুষের পথচলা নিরাপদ ও নির্বিগ্ন করতে পারে। নারীদেরকে লক্ষ্য করে আল্লাহ তাআলা বলেন-

    ‘ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতিত আর কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা নুর : আয়াত ৩১)

    – এমনকি নবি পত্নীদের উদ্দেশ্য আয়াত নাজিল করে আল্লাহ তাআলা বলেন-‘হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলি যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৩২)

    সুতরং নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা জরুরি। তবেই অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা থেকে মুক্ত থাকবে ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র। নারী-পুরুষ উভয়েই থাকবে নিরাপদ।
    ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে সমাজে ‘নারী ও পুরুষ নির্যাত ‘-নামক কোনো শব্দই থাকবে না। তাই ব্যক্তি পরিবার কিংবা সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষ উভয়ের শ্রদ্ধা ও সম্মানজন মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, জাতীয় কবির ভাষায় বলতে হয়-‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’

    আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহর দিক-নির্দেশনা মেনে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। নারীর নিরাপদ পথচলায় ধর্মীয় অনুশাসনে নিজেদের পরিচালিত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
    সূত্র-অনলাইন

  • এটাই নাজাতের উছিলা হবে, আর এটাই আমাদের সৌভাগ্য’.আল্লামা বাবুনগরী

    এটাই নাজাতের উছিলা হবে, আর এটাই আমাদের সৌভাগ্য’.আল্লামা বাবুনগরী

    এটাই নাজাতের উছিলা হবে, আর এটাই আমাদের সৌভাগ্য’.আল্লামা বাবুনগরী

     

    ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে গতকাল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাইখুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী,বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব শাইখুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে।

    হাটহাজারী মাদরাসায় অবস্থানরত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এই মামলার খবর শুনে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘কোরআন-হাদীসের বাণী পৌঁছাতে গিয়ে ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় আমাদের নামে মামলা হয়েছে। এটাই নাজাতের উছিলা হবে, আর এটাই আমাদের সৌভাগ্য।’

  • আজ বিজয়া দশমী

    আজ বিজয়া দশমী

     

    আজ বিজয়া দশমী

    সত্যেরসংবাদ ডেক্স : আজ সোমবার বিজয়া দশমী। এ দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে। চণ্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে ২২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শুরু হয় বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার দেবী এসেছেন দোলায়, যাবেন গজে চড়ে।

    যদিও করোনা মহামারির কারণে সংক্রমণ এড়াতে এ বছর ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়। উৎসব-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে শুধু ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। সূত্র: বাসস

    এর আগে বেশ কিছু বিধিনিষেধও প্রদান করা হয়। মণ্ডপে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি সীমিত করা ও সন্ধ্যায় আরতির পরই বন্ধ করে দেওয়া হয় পূজামণ্ডপ। ছিল না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা। জনসমাগমের কারণে স্বাস্থ্যবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই প্রসাদ বিতরণ ও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়। পূজার সময় বেশিরভাগ ভক্তরা এবার অঞ্জলি নিয়েছেন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে।

    এদিকে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকানুযায়ী গতকাল ভোর ৫টা ১৭ মিনিট থেকে সকাল ৭টার মধ্যে দুর্গাদেবীর মহা নবমী কল্পারম্ব ও বিহিত পূজা প্রশস্ত সম্পন্ন হয়। অনেকের বিশ্বাস মহানবমীর দিন হচ্ছে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেওয়ার ক্ষণ। এদিন অগ্নিকে প্রতীক করে সব দেবদেবীকে আহুতি দেওয়া হয়। অগ্নি সব দেবতার যজ্ঞভাগ বহন করে যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে থাকেন। নবমী পূজা হচ্ছে দুর্গাপূজার অন্তিম দিন। পরের দিন কেবল বিজয়া ও বিসর্জনের পর্ব। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়।

    অন্যদিকে দশমীর দিন অর্থাৎ আজ সোমবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট পর শ্রী শ্রী দেবীর দশমীবিহিত পূজারম্ভ প্রতিমা-নিরঞ্জন ও শান্তির জল প্রদান করা হবে। দশমী থাকবে আগের দিন বেলা ১১টা ১২ মিনিট থেকে পরের দিন কাল সকাল ১১টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত। দর্পণ বিসর্জনের পর বিকালে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবীর বিসর্জন দেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে দেবী মর্ত্য ছেড়ে স্বর্গে ফিরবেন।

    শ্রী সমীরেশ্বর ব্রহ্মচারীর কথায়, বিজয়া দশমীর দিন সংক্ষিপ্ত পূজার পর দর্পণ বিসর্জন হয়। কোনো কোনো জায়গায় দেবীর অপরাজিতা পূজাও হয়। এই দিনেই রাবণ বধের জন্য দশেরা উৎসবও পালিত হয়। এই দিনটিতে অসুর নিধনের পর অসুরের রক্ত দিয়ে দেবতারা বিজয় উৎসব পালন করেছিলেন।

    পুরাণ মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত যুদ্ধের পর দশম দিনে জয়ী হন দেবী দুর্গা। এজন্যই বিজয়া। সেই লোকাচার বাংলার ঘরে ঘরে সিঁদুর খেলা হিসেবে পরিণত হয়েছে। সিঁদুর খেলার পাশাপাশি চলে কোলাকুলিও। তবে করোনা মহামারির কারণে এবার কোলাকুলি হবে না।

    একইভাবে এবার দুর্গাপূজায় শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন হবে না। বিসর্জনের জন্য একটি ট্রাকে একসঙ্গে অনেক মানুষ গেলেও এবার একটি ট্রাকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ১০ জন যেতে পারবেন। এর বাইরে অতিরিক্ত যাওয়া যাবে না বলে এর আগে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

    বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন, ‘সোমবার বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা পরিহার করে প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মণ্ডপ বা মন্দির কর্তৃপক্ষ স্বউদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা নেবেন।’

    বিজয়া দশমী উপলক্ষে সোমবার সরকারি ছুটির দিন। পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী প্রদান করেছেন। বিজয়া উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। এছাড়া জাতীয় দৈনিকগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করবে।

    করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে এবার সরাসরি টেলিভিশনে এবং ফেসবুকে অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থার কথা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভক্তদের বাসায় বসেও অঞ্জলি নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে এবার অনেক ভক্তই বাসায় বসে প্রতিদিন পূজার অঞ্জলি গ্রহণ করেন।

    এছাড়া মহাঅষ্টমীর মূল আকর্ষণ হচ্ছে কুমারী পূজা। সব নারীর মধ্যে মাতৃরূপ এই উপলব্ধি সবার মধ্যে জাগ্রত করার লক্ষ্যে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে প্রতি বছর এই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হলেও এবার নির্দেশনার কারণে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়নি।

    বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সর্বশেষ দেওয়া তথ্য অনুসারে, এ বছর সারা দেশে ৩০ হাজার ২২৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর সারা দেশে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৩৯৮টি। গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ১৭৫টি মণ্ডপে পূজা কম হচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগরে এ বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা ২৩৩টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৩৭টি। আর ঢাকা জেলায় পূজা হচ্ছে ৭৪০টি। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সোমবার বিজয়া দশমী উপলক্ষে দেশের সব মানুষকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। পরিষদ শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপনে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করায় সব রাজনৈতিক দল, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

     

  • ধামরাইয়ে পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ

    ধামরাইয়ে পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ

    ধামরাইয়ে পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ

    ধামরাই,ঢাকাঃ ধামরাইয়ে পূজামন্ডপ পরিদর্শনকালে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি ফুটে উঠে দূর্গাপূজাতে। যারা এ দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায় তারা সংখ্যায় অল্প। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

    হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আজ শনিবার (২৪ অক্টেবর) সন্ধায় ঢাকার ধামরাই পৌর শহরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন ।

    তিনি এসময় আরো বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালনের সুবিধার্থে প্রতিটি পূজা মন্ডপে পুলিশ অত্যন্দ্র প্রহরীর মতো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। পূজা মন্ডপে কোনো অঘটন ঘটলে প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। পূজা মন্ডপে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ঢাকা জেলা পুলিশ সদা প্রস্তুত রয়েছে।

    তিনি পৌর শহরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে এসে উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু অজিত চক্রবর্তীসহ হিন্দু নেতৃবৃন্দের সাথে পূজা উদযাপন শীর্ষক বিভিন্ন বিষয়ে মত বিনিময় করেন।

    এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা উত্তর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ) মো: সাইদুর রহমান, ধামরাই পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম কবির মোল্লা, ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা, ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ডপের হিন্দু নেতৃবৃন্দ।

    এর পূর্বে সাভার ও আশুলিয়ায় বিভিন্ন পূজা মন্ডব পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন  ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার।

  • সাভারে পুজা মন্ডব পরিদর্শন ও মতবিনিময়সভা করলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদার

    সাভারে পুজা মন্ডব পরিদর্শন ও মতবিনিময়সভা করলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদার

    সাভারে পুজা মন্ডব পরিদর্শন ও মতবিনিময়সভা করলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদার

    শেখ এ কে আজাদ,সাভার থেকেঃ
    সাভার,আশুলিয়া,ধামরাইয়ে পুজা মন্ডব পরিদর্শন ও মতবিনিময় করা হয়েছে।
    এসময় ২৪ অক্টোবর শনিবার বিকেলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদার বিপিএম, পিপিএম। সাভার পৌর পালপাড়া মন্দির পুজা মন্ডব পরিদর্শনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময়কালে বিভিন্ন ফল, মাস্ক, হেন্ড সেনিটাইজার এবং মিষ্টি শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন।

    এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসময় সাভার পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গনি, সাভার মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ এএফএম সাইদ প্রমুখ।
    সাভার ও আশুলিয়ায় ১৬৮ টি পূজা মন্ডবে দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

    শনিবার দিনভর ঢাকা জেলার সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই থানার বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদার বিপিএম, পিপিএম।

    এসময় উপস্থিত ছিলেন মোঃ সাঈদুর রহমান, পিপিএম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ উত্তর), সাজেদুর রহমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি), মোঃ নাসিম মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সহ ঢাকা জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যবৃন্দ।

    পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার মহোদয় পূজামন্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা এবং বিভিন্ন ফল, মাস্ক, মিষ্টি, হেন্ড সেনিটাইজার প্রদান করেন সাথে সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব পালনের নির্দেশনা প্রদান করেন এব শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে বিভিন্ন ফল, মাস্ক, হেন্ড সেনিটাইজার এবং মিষ্টি শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন তিনি।

  • কোরআনপাকে নারীর ১০ বৈশিষ্ট্যের তাৎপর্য

    কোরআনপাকে নারীর ১০ বৈশিষ্ট্যের তাৎপর্য

    কোরআনপাকে নারীর ১০ বৈশিষ্ট্যের তাৎপর্য

    পবিত্র কোরআনের একাধিক জায়গায় নারীদের আলোচনা এসেছে। আল্লাহ নারীবাচক বিভিন্ন শব্দ ও গুণাবলির দ্বারা তাদের উল্লেখ করেছেন। যেমন—কন্যা, স্ত্রী, বোন, মা, নারী, যুবতি, মুমিনা, মুসলিমা ইত্যাদি। এতে যেমন নারীদের সামগ্রিক আলোচনা এসেছে, তেমনি কয়েকজন মহীয়সী নারীর প্রশংসামূলক বর্ণনাও এসেছে। এসেছে পাপী নারী ও তার পরিণতির কথাও। কোরআনে নারী আলোচনা যেভাবেই আসুক না কেন, তা অবশ্যই মানবজাতির জন্য শিক্ষণীয়। নিম্নে কোরআনে বর্ণিত নারীর ১০টি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো।

    চারিত্রিক পবিত্রতা

    অশ্লীলতা, অনৈতিকতা ও অমার্জিত আচার-আচরণ থেকে বেঁচে থাকা। নারী চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষায় আল্লাহ তাদের সংযত চলাফেরা, দৃষ্টি অবনত রাখা ও লজ্জাস্থান হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘মুমিন নারীকে বলুন, তারা যেন দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থান হেফাজত করে।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩১)

    আল্লাহ শুধু নারীদের সাধ্বী হওয়ার নির্দেশ দেননি; বরং সাধ্বী নারীর সপ্রশংস উল্লেখও করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘ইমরানের কন্যা মারইয়াম—যে তার লজ্জাস্থান হেফাজত করেছে।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ১২)

    লজ্জা ও শালীনতা

    লজ্জা ও শালীনতা মানুষের ব্যক্তিত্বের মূল ভিত্তি। নারীর ক্ষেত্রে তা বেশি মূল্য বহন করে। শালীনতা মুমিন নারীর মর্যাদা ও সৌন্দর্যের ভিত্তি, যা তার পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রকাশ পায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ একজন নারীর শালীন আচরণের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘তখন নারীদ্বয়ের একজন লজ্জাজড়িত পায়ে তার কাছে এলো।’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ২৫)

    অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘… তারা যেন তাদের গোপন আবরণ প্রকাশের জন্য সজোরে পা না ফেলে। হে মুমিনরা! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করো। যেন তোমরা সফল হও।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩১)

    সুতরাং নারী এমনভাবে চলাফেরা করবে না, যা তার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এবং যা মানুষকে পাপে উদ্বুদ্ব করে।

     

    স্বামীর আনুগত্য ও আত্মত্যাগ

    ইসলামী পারিবারিক ব্যবস্থায় স্বামী পরিবারপ্রধান। পরিবারের ভালো-মন্দ প্রধানত তার ওপর বর্তায়। তাই ইসলাম পারিবারিক শৃঙ্খলা রক্ষার্থে স্ত্রীকে ইসলামী শরিয়ত অনুমোদিত বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করতে এবং সুখে-দুঃখে তার পাশে থেকে সাহস জোগাতে বলেছে। কোরআনে আল্লাহ আইয়ুব (আ.)-এর স্ত্রীর প্রশংসা করেছেন—যিনি চরম অসুস্থতা ও দরিদ্রতার মধ্যেও স্বামীর পাশে ছিলেন এবং অসামান্য ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, আমার বান্দা আইয়ুবকে, যখন সে তার প্রতিপালককে আহ্বান করে বলেছিল, শয়তান আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্টে ফেলেছে। আমি তাকে বললাম, তুমি তোমার পা দিয়ে ভূমিতে আঘাত করো। এই তো গোসলের সুশীতল পানি ও পানীয়। আমি তাকে দান করেছিলাম তাঁর পরিজনবর্গ ও তাদের মতো আরো, আমার অনুগ্রহস্বরূপ এবং বোধসম্পন্ন মানুষের জন্য উপদেশস্বরূপ।’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ৪১-৪৩)

     

    ঈর্ষা

    আত্মমর্যাদা বোধ মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। নারী-পুরুষ সবার ভেতর তা থাকে। তবে নারীর ভেতর তা আরো প্রবল হয়। যদিও তা অনেক সময় ঈর্ষা ও আত্মচিন্তারূপে প্রকাশ পায় এবং নারীকে ভুল পথে পরিচালিত করে। মহানবী (সা.)-এর কয়েকজন স্ত্রী এই প্রবণতার শিকার হলে আল্লাহ তাঁদের সতর্ক করে বলেন, ‘স্মরণ করো—নবী তাঁর স্ত্রীদের একজনকে গোপন একটি কথা বলেছিলেন। অতঃপর যে যখন তা অন্যকে বলে দিল এবং আল্লাহ তা নবীকে জানিয়ে দিলেন, তখন নবী এই ব্যাপারে কিছু ব্যক্ত করলেন এবং কিছু অব্যক্ত রাখলেন। যখন নবী তা সেই স্ত্রীকে জানালেন, তখন সে বলল, আপনাকে এটা কে অবহিত করল। নবী বললেন, আমাকে অবহিত করেছেন তিনি, যিনি সর্বজ্ঞ, সম্যক অবগত।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৩)

     

    মার্জিত ভাষা

    আল্লাহ কোরআনে নারীদের মার্জিত ভাষা ব্যবহার করতে বলেছেন। যা অস্পষ্টতা, জড়তা ও পাপের ইঙ্গিতবহ হবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ন্যায়সংগতভাবে কথা বলো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩২)

    আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এই আয়াতে ব্যবহৃত ‘কাওলাম-মারুফা’-এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘নারীরা অনুচ্চ ভাষায় এমনভাবে কথা বলবে, যা শরিয়ত নিষেধ করেনি এবং মানুষের কাছেও তা শুনতে খারাপ মনে হয় না।’ (তাফসিরে কুরতুবি)

    আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘নারীরা সুন্দর, মার্জিত ও কল্যাণবহ কথা বলবে।’ (তাফসিরে ইবনে কাসির)

     

    জাত্যভিমান

    বহু নারী নিজেকে অন্যের তুলনায় শ্রেষ্ঠ ভাবতে পছন্দ করে। এমনকি নিজের ও নিজ পরিবারের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়। কোরআনে এমন অহঙ্কারের ব্যাপারে নারীকে সতর্ক করা হয়েছে। মহানবী (সা.) জয়নব বিনতে জাহাস (রা.)-কে জায়েদ বিন হারিসা (রা.)-এর সঙ্গে বিয়ে দিতে চাইলে তিনি তাতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। কেননা তিনি ছিলেন কুরাইশ বংশের আর জায়েদ (রা.) আগে দাস ছিলেন। এই জাত্যভিমানের ব্যাপারে ইরশাদ হয়, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কোনো বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোনো মুমিন পুরুষ বা কোনো মুমিন নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩৬)

     

    মোহনীয় বাকভঙ্গি

    নারীর রূপ, ভঙ্গি ও কথার মোহময়তা সর্বজনবিদিত। রূপের মতো কথার মায়াজালেও সে আটকাতে পারে পুরুষকে। দুর্বল চরিত্রের পুরুষ সহজেই মোহগ্রস্ত হয় তার কথায়। পবিত্র কোরআনে নারীর কথার জাদুময়তার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে তোমরা পরপুরুষের সঙ্গে কোমল কণ্ঠে এমনভাবে কথা বলো না, যাতে যার অন্তরে ব্যাধি আছে সে প্রলুব্ধ হয়।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩২)

    কোরআনের ব্যাখ্যাকারগণ এই আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, কথার এই কোমলতা ও মোহনীয় ভঙ্গি নারীর বিশেষ গুণ। যা তার স্বামী ও আপনজনের জন্য যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি দুর্বল ঈমানের পুরুষ—যার প্রলুব্ধ হওয়ার ভয় আছে তার সামনে তা প্রকাশ করা নিন্দনীয়। (তাফসিরে ইবনে কাসির ও তাফসিরে তাবারি)

     

     

    জিহ্বার ব্যাধি

    ইমাম গাজ্জালি (রহ.) মানুষের জবান বা কথার ১৪টি ব্যাধি উল্লেখ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে অর্থহীন কথা, পরচর্চা, পরনিন্দা, রুক্ষতা, অশ্লীলতা, ঝগড়া-বিবাদ, অভিশাপ, ঠাট্টা-বিদ্রুপ, উপহাস, গোপনীয়তা প্রকাশ, মিথ্যা কথা ও মিথ্যা আশ্বাস ইত্যাদি। (ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন, পৃষ্ঠা ১০৪)। এর কোনো কোনোটি নারীর ভেতর বেশি পাওয়া যায়, আবার কোনো কোনোটি পুরুষের ভেতর। তাই আল্লাহ পুরুষের সঙ্গে সঙ্গে নারীকেও এসব ব্যাধির ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো নারী যেন অপর নারীকে উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হয়েছে সে উপহাসকারিণীর চেয়ে উত্তম হতে পারে।’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ১১)

     

    দ্বিন পালনে পুরুষের সহযোগী

    দ্বিন পালন এবং সমাজে দ্বিন প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় পুরুষের সহযোগী নারী। প্রত্যেক নারী ও পুরুষ নিজ নিজ জায়গা থেকে পরস্পরকে দ্বিনের ব্যাপারে সহযোগিতা করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুমিন পুরুষ ও নারী পরস্পরের বন্ধু। তারা সত্কাজে আদেশ করে, অসৎ কাজে নিষেধ করে, তারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে। আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)

     

    পুরুষের মানসিক আশ্রয়

    বাহ্যত পুরুষ নারীর অভিভাবক হলেও আল্লাহ নারীকে পুরুষের মানসিক আশ্রয় বানিয়েছেন এবং দাম্পত্য জীবন সুখময় করতে তাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দান করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর নিদর্শন হলো—তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের ভেতর থেকে সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও। তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে বহু নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা : রোম, আয়াত : ২১)

    আয়াতে ব্যবহৃত ‘যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও’ বাক্য থেকে পুরুষের জন্য নারীর মানসিক আশ্রয় হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

  • মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়া কবীরা গুনাহ্’র অন্যতম

    মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়া কবীরা গুনাহ্’র অন্যতম

    মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়া
    কবীরা গুনাহ্’র অন্যতম

    হারাম ও কবিরা গুনাহ হারাম ও কবীরা গুনাহ্ সম্পর্কে
    মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী

    ৪৮. কোন মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়া
    কোন মহিলা নিজ স্বামীর অবাধ্য হওয়াও কবীরা গুনাহ্’র অন্যতম। তাই তো আল্লাহ্ তা‘আলা এ জাতীয় মহিলাদের জন্য পর্যায়ক্রমে কয়েকটি শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন।

    আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

    «وَاللَّاتِيْ تَخَافُوْنَ نُشُوْزَهُنَّ فَعِظُوْهُنَّ وَاهْجُرُوْهُنَّ فِيْ الْـمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوْهُنَّ، فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوْا عَلَيْهِنَّ سَبِيْلًا، إِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيْرًا»

    ‘‘আর যে নারীদের তোমরা অবাধ্যতার আশঙ্কা করো তাদেরকে সদুপদেশ দাও তথা আল্লাহ্ তা‘আলার আযাবের ভয়-ভীতি দেখাও, তাদেরকে শয্যায় পরিত্যাগ করো এবং প্রয়োজনে তাদেরকে প্রহার করো। এতে করে তারা তোমাদের অনুগত হয়ে গেলে তাদের ব্যাপারে আর অন্য কোন পন্থা অবলম্বন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা সমুন্নত মহীয়ান’’। (নিসা’ : ৩৪)

    কোন মহিলা তার স্বামীর প্রয়োজনের ডাকে সাড়া না দিলে যদি সে তার উপর রাগান্বিত হয়ে রাত্রি যাপন করে তা হলে ফিরিশ্তারা তার উপর লা’নত করতে থাকেন যতক্ষণ না সে সকালে উপনীত হয়।

    আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

    إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ، فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا، لَعَنَتْهَا الْـمَلَائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ.

    ‘‘কোন পুরুষ নিজ স্ত্রীকে তার শয্যার দিকে ডাকলে সে যদি তাতে সাড়া না দেয় অতঃপর সে তার উপর রাগান্বিত হয়ে রাত্রি যাপন করে তা হলে ফিরিশ্তারা তার উপর লা’নত করতে থাকে যতক্ষণ না সে সকালে উপনীত হয়’’। (বুখারী ৩২৩৭; মুসলিম ১৪৩৬)

    আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

    وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ! مَا مِنْ رَجُلٍ يَدْعُوْ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهَا، فَتَأْبَى عَلَيْهِ إِلاَّ كَانَ الَّذِيْ فِيْ السَّمَاءِ سَاخِطًا عَلَيْهَا حَتَّى يَرْضَى عَنْهَا.

    ‘‘সে সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! কোন ব্যক্তি নিজ স্ত্রীকে তার শয্যার দিকে ডাকলে সে যদি তাতে সাড়া দিতে অস্বীকার করে তা হলে সে সত্তা যিনি আকাশে রয়েছেন (আল্লাহ্ তা‘আলা) তার উপর অসন্তুষ্ট হবেন যতক্ষণ না তার উপর তার স্বামী সন্তুষ্ট হয়’’। (বুখারী ৩২৩৭, ৫১৫৩; মুসলিম ১৪৩৬)

    কোন মহিলা নিজ স্বামীর সমূহ অধিকার আদায় না করলে সে আল্লাহ্ তা‘আলার সমূহ অধিকার আদায় করেছে বলে ধর্তব্য হবে না।

    আব্দুল্লাহ্ বিন্ আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

    لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَّسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لَأَمَرْتُ الْـمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا، وَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ! لَا تُؤَدِّيْ الْـمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّيَ حَقَّ زَوْجِهَا كُلِّهِ، حَتَّى لَوْ سَأَلَـهَا نَفْسَهَا وَهِيَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ.

    ‘‘আমি যদি কাউকে আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারোর জন্য সিজ্দাহ্ করতে আদেশ করতাম তা হলে মহিলাকে তাঁর স্বামীর জন্য সিজ্দাহ্ করতে আদেশ করতাম। কারণ, সে সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! কোন মহিলা নিজ প্রভুর সমূহ অধিকার আদায় করেছে বলে ধর্তব্য হবে না যতক্ষণ না সে তার স্বামীর সমূহ অধিকার আদায় করে। এমনকি কোন মহিলাকে তার স্বামী সহবাসের জন্য ডাকলে তাতে তার অস্বীকার করার কোন অধিকার নেই। যদিও সে তখন উটের পিঠে আরোহণ অবস্থায় থাকুক না কেন’’। (ইব্নু মাজাহ্ ১৮৮০; আহমাদ ৪/৩৮১ ইব্নু হিববান/ইহ্সান, হাদীস ৪১৫৯ বায়হাক্বী ৭/২৯২)

    স্বামীর সন্তুষ্টিতেই স্ত্রীর জান্নাত এবং তার অসন্তুষ্টিতেই স্ত্রীর জাহান্নাম।

    একদা জনৈকা সাহাবী মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তার স্বামীর কথা উল্লেখ করলে তিনি তাকে বলেন:

    انْظُرِيْ أَيْنَ أَنْتِ مِنْهُ، فَإِنَّهُ جَنَّتُكِ وَنَارُكِ.

    ‘‘ভেবে দেখো তার সাথে তুমি কি ধরনের আচরণ করছো! কারণ, সেই তো তোমার জান্নাত এবং সেই তো তোমার জাহান্নাম’’।

    (আহমাদ ৪/৩৪১ নাসায়ী/’ইশ্রাতুন্ নিসা’, হাদীস ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩ ইব্নু আবী শাইবাহ্ ৪/৩০৪; হা’কিম ২/১৮৯ বায়হাক্বী ৭/২৯১)

    কোন মহিলা তার স্বামীর অবদানসমূহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তার প্রতি কখনো সন্তুষ্টির দৃষ্টিতে তাকাবেন না।

    আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

    لَا يَنْظُرُ اللهُ إِلَى امْرَأَةٍ لَا تَشْكُرُ لِزَوْجِهَا، وَهِيَ لَا تَسْتَغْنِيْ عَنْهُ.

    ‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা এমন মহিলার দিকে (সন্তুষ্টির দৃষ্টিতে) তাকান না যে নিজ স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না; অথচ সে তার স্বামীর প্রতি সর্বদাই মুখাপেক্ষিণী’’। (নাসায়ী/’ইশ্রাতুন্ নিসা’, হাদীস ২৪৯, ২৫০; হা’কিম ২/১৯০ বায়হাক্বী ৭/২৯৪ খতীব ৯/৪৪৮)

    কোন মহিলা তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দিলে তার জান্নাতী অপরূপা সুন্দরী স্ত্রী তথা ’হূররা সে মহিলাকে তিরস্কার করতে থাকে।

    মু‘আয বিন্ জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

    لَا تُؤْذِيْ امْرَأَةٌ زَوْجَهَا إِلاَّ قَالَتْ زَوْجَتُهُ مِنَ الْـحُوْرِ الْعِيْنِ: لَا تُؤْذِيْهِ، قَاتَلَكِ اللهُ ! فَإِنَّمَا هُوَ عِنْدَكِ دَخِيْلٌ، أَوْشَكَ أَنْ يُّفَارِقَكِ إِلَيْنَا.

    ‘‘কোন মহিলা তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দিলে তার জান্নাতী অপরূপা সুন্দরী স্ত্রীরা বলে: তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ্ তোমাকে ধ্বংস করুক! কারণ, সে তো তোমার কাছে কিছু দিনের জন্য। বেশি দেরি নয় যে, সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবে’’। (ইব্নু মাজাহ্ ২০৪৪)

    আল্লাহ্ তা‘আলা, তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং স্বামীর আনুগত্যহীনতার কারণেই অধিকাংশ মহিলারা জাহান্নামে যাবে।

    ’ইমরান বিন্ ’হুস্বাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

    اطَّلَعْتُ فِيْ الْـجَنَّةِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا الْفُقَرَاءَ، وَاطَّلَعْتُ فِيْ النَّارِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ.

    ‘‘আমি জান্নাতে উঁকি মেরে দেখতে পেলাম, জান্নাতীদের অধিকাংশই গরীব শ্রেণীর এবং জাহান্নামে উঁকি মেরে দেখতে পেলাম, জাহান্নামীদের অধিকাংশই মহিলা’’। (বুখারী ৩২৪১; মুসলিম ২৭৩৮)

    আবূ সা’ঈদ্ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন:

    يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ! تَصَدَّقْنَ، فَإِنِّيْ أُرِيْتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ، فَقُلْنَ: وَبِمَ يَا رَسُوْلَ اللهِ!؟ قَالَ: تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيْرَ.

    ‘‘হে মহিলারা! তোমরা (বেশি বেশি) সাদাকা করো। কারণ, আমি তোমাদেরকেই জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী রূপে দেখেছি। মহিলারা বললো: কেন হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমরা বেশি লা’নত করে থাকো এবং স্বামীর কৃতজ্ঞতা আদায় করো না’’। (বুখারী ৩০৪; মুসলিম ৮০)

    -অনলাইন ইসলামী ডেক্স-

  • কোরআন খতম জীবিত ব্যক্তির নামে দেওয়া যায় কি?

    কোরআন খতম জীবিত ব্যক্তির নামে দেওয়া যায় কি?

    কোরআন খতম জীবিত ব্যক্তির নামে দেওয়া যায় কি?

    শুধুমাত্র জীবিত কেন ? কোনো মৃত ব্যক্তির নামেও দেওয়া ঠিক না। যাবেনা তা বলিনি, কিন্তু আপনি যে উদ্দেশ্যে কাজটি করতে চাচ্ছেন সে উদ্দেশ্যই যদি গ্রহণযোগ্য না হয় তাহলে কাজটি না করাই উত্তম মনে করছি।

    ইসলামে কেউ কোনো ইবাদত অন্যের নামে করতে পারেনা। যার ইবাদত সেই করতে হয়। এমন কোনো নিয়ম নেই যে আপনার সলাত, রোজা বা অন্য কোনো ইবাদত অন্য কেউ করে দিতে পারবে। এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।

    ধরুন আপনি কোনো মৃত ব্যক্তির জন্য কোরআন খতম করলেন এতে তার কোনো উপকার হবেনা এবং আপনারও হবেনা । কারণ আপনার নিয়ত ছিলো আপনি তার হয়ে সওয়াব তাকে দিবেন। ইসলামে এমন কোনো পদ্ধতি নেই।

    এবার আসি আপনি মৃত ব্যক্তিকে কিছু দিতে চাইলে / তার পরকালের জন্য কিছু দিতে চাইলে বা তার আমলনামায় কিছু দিতে চাইলে কি করতে পারেন। এই কাজ গুলোকে বলে সদাকায় জারিয়া। আপনি সদাকায় জারিয়ার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কিছু কাজ আছে সেগুলো করে মৃত ব্যক্তির উপকার করতে পারেন। এবং সেগুলো গ্রহণযোগ্য।

    যেকোন মুসলিম মৃত ব্যক্তি কেবল ঐ সকল জিনিস দ্বারাই উপকার লাভ করতে পারে যেগুলো কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা নির্ধারিত। যেমন:

    রাসূল সা. বলেনঃ

    “মানুষ মৃত্যু বরণ করলে তার আমলের সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায় তিনটি ব্যতীতঃ সদকায়ে জারিয়া,এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং এমন নেককার সন্তান যে তার জন্য দু’আ করে”। মুসলিম:৩০৮৪

    সদকায়ে জারিয়া,
    এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং
    এমন নেককার সন্তান যে তার জন্য দু’আ করে”।
    আনাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. ইরশাদ করেনঃ

    “সাত প্রকার কাজের সওয়াব মারা যাওয়ার পরও বান্দার কবরে পৌঁছতে থাকে। যে ব্যক্তি দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেয়, নদী-নালায় পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করে, কুপ খনন করে, খেজুর গাছ রোপন করে, মসজিদ তৈরী করে, কুরআনের উত্তরাধিকারী রেখে যায় অথবা এমন সুসন্তান রেখে যায় যে তার মারা যাওয়ার পরও তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমার জন্য দুয়া করে।

    আল্লামা আলবানী (রাহ:) কর্তৃক রচিত সহীহুত তারগীব ওয়াত্ তারহীব:৭৩

    দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেয়া
    নদী-নালায় পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা,
    কুপ খনন করা,
    ফলবান গাছ রোপন করা,
    মসজিদ তৈরী করা,
    কুরআনের উত্তরাধিকারী রেখে যাওয়া অথবা
    এমন সুসন্তান রেখে যাওয়া যে তার মারা যাওয়ার পরও তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমার জন্য দু’আ করে।
    নবী সা. বলেনঃ

    “যে ব্যক্তি ইসলামে কোন সুন্নত চালু করল সে ব্যক্তি এই সুন্নাত চালু করার বিনিময়ে সওয়াব পাবে এবং তার মারা যাওয়ার পর যত মানুষ উক্ত সুন্নাতের উপর আমল করবে তাদেরও সওয়াব সে পেতে থাকবে। অথচ যারা আমল করবে তাদের সওয়াব কিছুই হ্রাস করা হবে না। ”সহীহ মুসলিম: ১০১৭

    মৃত ব্যক্তি যদি তার জীবদ্দশায় কোন পরিত্যক্ত সুন্নতকে আমলের মাধ্যমে পূণর্জীবিত করে এবং তার মৃত্যুর পরেও উক্ত আমল চালু থাকে।

    মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোন দান-সদকা করা হলে মৃত ব্যক্তি তার সওয়াব লাভ করে।

    সহীহ মুসলিমে বর্ণিত রয়েছে, এক ব্যক্তি নবী সা. কে বললেন,আমার পিতা-মাতা অর্থ-সম্পদ রেখে মারা গেছেন। এ ব্যাপারে তারা আমাকে কোন ওসিয়ত করে যাননি। এখন আমি তাদের উদ্দেশ্যে দান-সদকা করলে তা তাদের জন্যে কি যথেষ্ট হবে? তিনি সা. বললেন, “হ্যাঁ”।

    জীবিত মুসলিমগণ মৃত মানুষের জন্য দু’আ ও ইস্তেগফার করলে তাদের নিকট এর সওয়াব পৌঁছে।

    কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

    “যারা তাদের পরবর্তীতে আগমণ করেছে (অর্থাৎ পরে ইসলাম গ্রহণ করেছে) তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এবং আমাদের পূর্বে যে সকল ঈমানদার ভাই অতিবাহিত হয়ে গেছেন তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং মুমিনদের ব্যাপারে আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ বদ্ধমূল রেখো না। হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি তো পরম দয়ালু, অতি মেহেরবান। ” সূরা হাশর: ১০

    উপকারী এবং স্থায়ী দান কয়েক প্রকার: (বিভিন্ন প্রকার সদকায়ে জারিয়ার উদাহরন)

    ১) পানির ব্যবস্থা করা (বিশুদ্ধ পানির জন্য ফিল্টার দিতে পারেন)

    ২) এতিমের/ বিধবার প্রতিপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করা

    ৩) অসহায় মানুষের বাসস্থান/কর্ম সংস্থান তৈরি করা

    ৪) গরীব তালিবে ইলমকে সাহায্য-সহযোগিতা করা। কুর’আনের হাফেজ হতে সহায়তা করা।

    ৫) দাতব্য চিকিৎসালয় বা হাসপাতাল নির্মান, একটি হুইল চেয়ার বা বেড বা চেয়ার দান করা

    ৬) মসজিদ নির্মান। মসজিদে ফ্যান,বই, ইত্যাদি হাদিয়া হিসেবে দেয়া।

    ৭। জ্ঞান অর্জনের জন্য সঠিক বই হাদিয়া দেয়া ( বেসিক জ্ঞানের জন্য সহিহ ঈমান, সালাত, অজু, গোসল ফরয ওয়াজিব, শিরক বিদয়াত ইত্যাদি)

    ৮। রক্ত দান করা/ চিকিৎসায় সহযোগীতা করা

    ৯। ফলদায়ক গাছ লাগানো ( আপনি দূরে কোথাও সফরে যাচ্ছেন, রাস্তার পাশের পড়ে থাকা জমিতে ফলের বীজ ছিটিয়ে দিতে পারেন)

    ১০। কল্যানমূলক কাজ যা মানুষের মৌ্লিক চাহিদাকে পূর্ণ করে সেটা শরীয়ত মুতাবিক ব্যবস্থা করে দেয়া।

    ১১। কল্যানমূলক জ্ঞান বিতরন ও পাঠাগার গঠন করে দেয়া। ইত্যাদি।

    আর জীবিত অবস্থায় আপনার ইবাদত আপনাকেই করতে হবে। কারণ আপনার হিসাব নিকাশ কেবলমাত্র আপনার কাছেই চাওয়া হবে এবং আপনার আমলনামা ও আপনার হাতেই দেয়া হবে। মনে রাখবেন ইবাদতের ক্ষেত্রে জেনে বুঝে কুরআন হাদিস অনুসরণ করে ইবাদত করবেন। ইবাদতের ক্ষেত্রে কোয়ান্টিটির চেয়েও কোয়ালিটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

    খতম / শেষ করার জন্য কোরআন নয়, কোরআন হল মেনে চলার জন্য-

    وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ فَاتَّبِعُوهُ وَاتَّقُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

    এটি এমন একটি গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ণ করেছি, খুব মঙ্গলময়, অতএব, এর অনুসরণ কর এবং ভয় কর-যাতে তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হও। []

    কোরআন হল হেদায়েত, রহমত আর মুসলমান দের জন্য সুসংবাদ –

    সূত্রঃ অনলাইন।।