সঙ্গিতাঙ্গনে একটি জনপ্রিয় সালমা ভালোবাসার সাগর বলে, ’মরলে আমরা একসাথে মরবো’

সঙ্গিতাঙ্গনে একটি জনপ্রিয় সালমা ভালোবাসার সাগর বলে, ’মরলে আমরা একসাথে মরবো’

বিনোদন ডেক্সঃ
সালমা বাংলাদেশের সঙ্গিতাঙ্গনে একটি জনপ্রিয় নাম। বাংলাদেশের সঙ্গিতাঙ্গনে তার বিচরণ অনেক দিন ধরেই। এর মধ্যে তার জীবনে ঘটে গেছে অনেক ঘটনা। জীবনেও পরিবর্তন এসেছে তার। তবে বর্তমানে তিনি আছেন বেশ সুখেই। স্বামী সাগরের সাথে তার সাংসারিক জীবন বেশ ভালোই কাটছে সালমার। ভালোবাসা দিবসের দিন তাই জানাচ্ছিলেন তাদের প্রেমের শুরুর কথা। জানাচ্ছিলেন কিভাবে তাদের প্রথম দেখা। এরপর বিয়ে। বলছিলেন স্বামী সাগর তার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ন।

ময়মনসিংহ হালুয়াঘাটের সানাউল্লাহ নূর সাগরের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন সালমা। লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ থেকে এলএলবি পড়ছেন এই সংগীতশিল্পী। পড়তে এসেই সাগরের সঙ্গে পরিচয়। সালমার ভাষায়, ’সাগর ও আমার দুজনেরই অতীত রয়েছে। সাগর প্রথম আমাকে বলে, আপনাকে আমার ভালো লাগে! আমার পরিবারও আপনাকে খুব পছন্দ করে। এরপর দুই পরিবার আলোচনা করে বিয়ের বিষয় চূড়ান্ত করে। তবে বিয়ের আগে প্রেম করার সুযোগ হয়নি। দুজনের ভালোবাসার বন্ধন বিয়ের পর তৈরি হয়েছে।’

সালমা আরো বলেন, ’দুজন দুজনকে পাগলের মতো ভালোবাসি। তেমনি সম্মানও করি। যাই করি না কেন আলোচনা করে করি। কাজও ভাগ করে নিই। যেমন: দেশের বাইরে গেলে কাগজপত্র সংক্রান্ত সব কাজ সাগর করে। ছোটবেলায় শোবিজ অঙ্গনে চলে আসার কারণে সেভাবে বন্ধুবান্ধব গড়ে ওঠেনি। এখন সাগরই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আসলে সাগরের গণ্ডিতে আমি থাকি, আমার গণ্ডিতে সাগর থাকে।’

সোনার মধ্যেও খাদ থাকে। ভালো-মন্দ মিলিয়েই মানুষের জীবন। সাগরের মধ্যেও নিশ্চয়ই ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটি দিকই রয়েছে। আপনার মুখ থেকে জানতে চাই। জবাব দেয়ার আগে কিছুটা সময় নেন সালমা। তারপর ধীর কণ্ঠে বলেন, ’সাগরের ব্যবহারে বিভাজন নেই। এটা আমার খুব ভালো লাগে। মানুষের মন ভালো না হলে তার কিছুই ভালো হয় না। সাগরের মন অনেক ভালো, সাগরের মতোই। আর ব্যক্তিজীবনে সাগর অনেক সৎ। নেতিবাচক দিক হলো— সাগর রাগ করলে চুপ করে বসে থাকে। অনন্ত ৩০-৪০ মিনিট সে চুপচাপ থাকে। এটা আমার জন্য বেদনার কারণ। মন ভীষণ খারাপ হয় তখন। যদিও এক পর্যায়ে সাগরই আমার কাছে আসে। মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, ’মন খারাপ করছো কেন?’ সাগর চায় না এক সেকেন্ডও আমি আপসেড থাকি।’

সাগর-সালমার মন এক হলেও দুজনের পেশা ভিন্ন। সালমার ঢাকার বাইরে গানের প্রোগ্রাম থাকলে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন সাগর। সালমা এ প্রসঙ্গে বলেন, ’আমার প্রোগ্রাম থাকলে ও খুব চিন্তিত থাকে। একবার আমি বলেছিলাম—এই যে মেয়েকে নিয়ে প্রোগ্রামে যাই, যদি কিছু হয়ে যায়। এ কথা শোনার পর থেকে সাগর আমাদের একা যেতে দেয় না। সাগর বলে, ’মরলে আমরা একসাথে মরব।’

একটি সম্পর্ক গভীর ও সরল করার জন্য পরস্পরের ত্যাগ ও আন্তরিকতা প্রয়োজন। খুব ছোট ছোট বিষয়ে লুকিয়ে থাকে গভীর ভালোবাসার মন্ত্র। সুযোগ পেলেই সাগরের পছন্দের খাবার রান্না করেন সালমা। এ শিল্পী বলেন, ’এখন আমাদের খাবারের মেন্যু এক। সাগরের জন্য আমার খাবারের মেন্যুতে অনেকটা পরিবর্তন করেছি। এটা সেক্রিফাইস। কারণ আমি দেখেছি, ওর পছন্দের খবারগুলো অনেক হেলদি। তাহলে পরিবর্তন করতে অসুবিধা কোথায়?’
সাগরকে ভালোবেসে শুধু প্রিয় মানুষকেই পাননি সালমা। পেয়েছেন ভালো একটি পরিবার। সংসার জীবনে বউ-শাশুড়ির দ্বন্দ্ব বহুল চর্চিত বিষয়। কিন্তু সালমা সংসার জীবনে শাশুড়ি নয়, আরেকটি মা পেয়েছেন। সালমার ভাষায়, ’আমার শাশুড়ি খুবই ভালো। রাজনীতি করার কারণে ব্যস্ততা তারও কম নয়। তারপরও আমার নিজের মা-ও এতটা সময় আমাকে দিতে পারেননি, তিনি যতটা দিচ্ছেন। আমার একজন শক্ত অভিভাবক প্রয়োজন ছিল। আমি সেটা পেয়েছি।’

দুটি মানুষের হৃদয়ের বন্ধন শক্ত হলেও লুকিয়ে থাকে অদৃশ্য কিছু ভয়। বিচ্ছেদে দারুণ ভয় সালমার। এ বন্ধন ছিঁড়তে চান না কিছুতেই। সালমা বলেন, ’আমার কাছ থেকে সাগরকে দূরে কোথাও রাখলে নিশ্চিত থাকবেন- আমি শারীরিকভাবে অর্ধেক হয়ে যাব অথবা কিছুদিন পর মারা যাব। সাগরও আমাকে ছাড়া দূরে থাকতে পারবে না। আসলে দুজন দুজনকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি এক সময় প্রচারিত হতো জনপ্রিয় সঙ্গিতের অনুষ্ঠান ক্লোজাপ ওয়ান তোমাকেই খুজছে বাংলাদেশ। আর ২০০৬ এই অনুষ্ঠানেই শুরু সালমার।

এই অনুষ্ঠানের মাধ্যোমেই তিনি সকলের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ২০০৬ সালের তোমাকেই খুজছি বাংলাদেশের বিজয়ী ছিলেন তিনি। এখনো কাপিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গিতাঙ্গন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *